বুধবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফ্যাশনে স্ট্রিট ওয়্যার

ফ্যাশনে স্ট্রিট ওয়্যার

স্ট্রিট ফ্যাশনের আবির্ভাব কোনো আলোকময় স্টুডিও থেকে আসেনি। তা হেঁটে এসেছে পথের তৃণমূল পর্যায় থেকে, যাকে ফ্যাশনের অন্তর্গত করতে গোটা জোগাড়যন্ত্রে হাত মিলিয়েছে সমকালীন শহুরে হর্ষপূর্ণ তরুণ-তরুণীরা! এরপর ছেঁড়াফাটা, রংজ্বলা আর অগোছালো ভাবই হয়ে উঠল বেশ আধুনিক।

সময়ের ধারাবাহিকতা ও স্থানভেদে উঠে এসেছে বেশ কতগুলো স্ট্রিট ফ্যাশন। এই ফ্যাশনে নিজেকে রাঙাতে গোটা জোগাড়যন্ত্রে হাত মিলিয়েছে শহুরে হর্ষপূর্ণ তরুণ-তরুণীরা! তবে মাত্র কয়েক দশক আগের ফ্যাশনপাড়ায় চোখ বুলালে দেখা যাবে, স্ট্রিট ফ্যাশনে গা ভাসানোর জন্য সে সময় তরুণীদের একটা বড় অংশই ছিল অপ্রস্তুত। অনেকে নাক সিঁটকিয়েছেন আবার স্ট্রিট ফ্যাশনকে আপন করে নেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও মুখে ‘ওয়াও’ বলেই ক্ষান্ত ছিলেন কেউ কেউ। অথচ এখনকার দিনে স্ট্রিট ফ্যাশনের দিকে ঝুঁকছেন অনেক নারীই!

স্ট্রিট ফ্যাশনের আবির্ভাব কোনো আলোকময় স্টুডিও থেকে আসেনি। তা হেঁটে এসেছে পথের তৃণমূল পর্যায় থেকে, যাতে মেতে উঠেছেন আজকালের তরুণ-তরুণীরা! আর এখন! ছেঁড়াফাটা, রংজ্বলা আর অগোছালো ভাবটাই যেন হয়ে উঠল সবচেয়ে আধুনিক। সময়ের ধারাবাহিকতা ও স্থানভেদে উঠে এসেছে বেশ কতগুলো স্ট্রিট ফ্যাশন। সেই পালে হাওয়া লাগিয়েছে ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘সারা’ লাইফস্টাইল। তরুণদের নান্দনিক ফ্যাশনের শীত পোশাকের দারুণ সমাহার নিয়ে এসেছে জনপ্রিয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘সারা’ লাইফস্টাইলের ওয়েস্টার্ন সাব-ব্র্যান্ড ‘ঢেউ’। যেখানে রয়েছে ট্রেন্ডের মিশেলে পশ্চিমা ফ্যাশনের ছোঁয়ায় নতুন এবং আকর্ষণীয় পোশাকের সব কালেকশন। তরুণ-তরুণীদের রুচিশীলতাকে প্রাধান্য দিয়ে সম্পূর্ণ পশ্চিমা ধাঁচে প্রস্তুত করা হয়েছে শীত কালেকশন।

সুতি, ফ্লানেল, বন্ডেড ও ডেনিম ফেব্রিকের সমন্বয়ে তৈরি পোশাকগুলো ডিজাইনের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক ট্রেন্ড অনুসরণ, কাস্টমাইজড ফেব্রিক ও প্যাটার্নের বৈচিত্র্যতায় তৈরি করা হয়েছে। যা কো-ব্র্যান্ডটির শীতের সংগ্রহে এক অনন্য মাত্রা যোগ করেছে। এসব ফ্যাশনেবল স্ট্রিট ওয়্যারের মধ্যে ছেলেদের জন্য রয়েছে ডেনিম শার্ট, করড শার্ট, কটন শার্ট, প্রিন্টেড শার্ট, ফ্লানেল শার্ট, নরমাল টি-শার্ট, সোয়েট শার্ট, ওভারসাইজড টি-শার্ট, ডেনিম প্যান্ট, জগার্স, কারগো প্যান্ট, ডেনিম জ্যাকেট, কুইল্টেড জ্যাকেট ও বোম্বার জ্যাকেট। একইভাবে মেয়েদের কালেকশনে রয়েছে শার্ট, ডেনিম শার্ট, ডেনিম ফ্যাশন টপস, প্রিন্টেড মিডি ড্রেস, কার্গো প্যান্ট, ডেনিম প্যান্ট, ওভারকোট, হুডি, ক্রপ হুডি, ডেনিম জ্যাকেট, ব্লেজার সেট, শর্ট জ্যাকেট, শেরফা জ্যাকেট, বন্ডেড জ্যাকেট, কার্ডিগান, জগার্স, ক্রপ টপ, গাউন, টি-শার্ট, ওভারসাইজড শার্ট, ওভারসাইজড শার্ট সেট, ডেনিম জ্যাকেট, কুইল্টেড জ্যাকেট ও বোম্বার জ্যাকেট।

 

রকমারি স্ট্রিট স্টাইল

আধুনিক স্ট্রিট ফ্যাশনে বোহেমিয়ান, প্রিপ্পি, রক এন রোল স্ট্রিট স্টাইলে নিজেকে রাঙাতে পারেন ছেলে-বুড়ো সবাই। কারণ, এসব স্ট্রিট ফ্যাশনের প্রতিটির রয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য। অর্থাৎ স্টাইলভেদে কাপড় ও আনুষঙ্গিক জিনিসগুলোর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। বোহেমিয়ান স্টাইলকে বোহো-চিক বলা হয়। এক কথায় চোখের খাদ্য। কাপড়ে প্রাণবন্ত রং ও শৈল্পিক প্রিন্ট যেন তারুণ্যকে আরও বেশি উচ্ছল করে তোলে। বোহেমিয়ান স্ট্রিট স্টাইলের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- লেদারের ঝালরওয়ালা জ্যাকেট, ঢিলেঢালা ব্লাউজ, ভেস্ট, সূচিকর্ম করা টপস, প্রিন্টের স্কার্ট, ক্রস ব্যাগ ইত্যাদি। শিহরণ জাগানো বোহেমিয়ান আউটফিটের মধ্যে রয়েছে সিম্পল একরঙা ম্যাক্সি স্কার্ট। গ্রাফিক টি-শার্ট ও স্কার্ফ ভেস্টের সঙ্গে ম্যাক্সি স্কার্ট বেশ মানিয়ে যায়। কার্ভ করা স্কার্ট ও টপ, পলিশ করা চকচকে হিল, লেদার ব্যাগ- সবটা মিলিয়ে লেডি লাইক স্ট্রিট স্টাইল। এখানে নারীত্ব ব্যাপারটা ফুটে ওঠার রেশ রয়েছে। আধুনিক নারীর স্পর্শটা ব্যাপ্ত এসব জামাকাপড়ে। স্মার্ট কর্মজীবী নারীরা বো-টাই কিটেন হিল অথবা ভিনটেজ জুয়েলারির সঙ্গে স্কিন টাইট জিন্স পরতে পারেন। ব্রিটন স্ট্রাইপ, চেক, রাইডিং বুট- এসবই প্রিপ্পির দখলে। প্রিপ্পি স্টাইলের পরিচিতির সঙ্গে স্ট্রাইপ শার্টের সংযুক্তি বেশ জোরদার। ক্রিস্পি লুক আনতে নেভি ব্লু ক্ল্যাসিক শেপ ল্যাপেলের ব্লেজার গায়ে চড়াতে পারেন। প্যান্টের বেলায় যদিও যে কোনো ওয়ার্ডরোবে জিন্স সহজলভ্য। কিন্তু প্রিপ্পি বরাবরই গাঢ়রঙা ডেনিমকে স্বাগত জানিয়েছে। সাধারণ দেখতে লাগা এ লুকের অন্যতম দিক। তাই সোজাসাপ্টা ব্যালে ফ্ল্যাট সু প্রিপ্পির জন্য মানানসই। তবে তা হতে পারে বিভিন্ন রঙের, লেস বসানো বা একটু উঁচু ফ্ল্যাট হিলের। মলিন শার্ট আর ছেঁড়াফাটা ফ্যাকাসে জিন্স, এবড়োখেবড়ো পশমের জ্যাকেট, ব্যান্ড টি-শার্ট, রিস্ট ব্যান্ড, হেডব্যান্ড আর এলোমেলো চুল- এসবই রক এন রোলের মূল্যবান সম্বল। চলতি টি-শার্ট ও জিন্সের সঙ্গে আনুষঙ্গিক হিসেবে সানগ্লাস ও হেয়ারস্টাইল যোগ করে হয়ে যেতে পারেন পুরোদস্তুর রক এন রোল ফলোয়ার। এ লুক জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে ১৯৮০ সালে রকসংগীত খ্যাতি পাওয়ার সময় থেকে। রক এন রোল স্ট্রিট স্টাইলে পোশাকের ধরন নির্ভর করে আত্মপ্রকাশের ঢঙের ওপর। এখানে কোনো ঠিক-ভুলের হিসাব নেই। কেবল উন্মুক্ত চিন্তাশক্তি একে চালনা করে, যেখানে সার্বিক লুকে ভারিক্কি প্রভাব ফেলবে উন্মুক্ততা ও আভিজাত্য। চেক প্রিন্ট, সাধারণ রঙের কাপড় ও বালকসুলভ আনুষঙ্গিক নিয়েই টমবয়। টমবয় স্টাইলকে একটু নারীসুলভ করতে মূল স্টাইলকে খুব বেশি নাড়া না দিলেও চলবে। পুরুষের মতো ও পুরুষের ঢঙে পোশাক-আশাক পরার খাতিরে চুল আর চেহারারও পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। সে ক্ষেত্রে নুড মেকআপ ভালো যায়। ভ্রুটা হাইলাইট করতে পারেন। আর ওয়েস্টার্ন এ স্টাইলে নির্দ্বিধায় খুলে বসতে পারেন আপনার সোনার গহনার ঝাঁপি! একরঙা সাদা লুজ শার্টের সঙ্গে লেদার প্যান্ট ও কমব্যাট বুট অথবা চুলগুলো খোলা রেখে বম্বার জ্যাকেট, স্কিনি জিন্স ও ক্রস বডি ব্যাগ নিতে পারেন।

লেখা : ফেরদৌস আরা

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর