ত্বক ও চুলের পরিচর্যায় প্রাচীনকাল থেকেই প্রাকৃতিক উপাদানের কদর অনেক। যা আজও অনেকের জানাশোনা। তবুও প্রকৃতির এই উপহার মানবজাতিকে আজও বারবার অবাক করে। গাঢ় সবুজ নিমপাতা, অ্যালোভেরা, নারকেল তেলের মতো হাজার রকমের প্রাকৃতিক উপাদান ডালা সাজিয়ে বসে আছে ধরণীতে। যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নয়, ত্বক ও চুলের যত্নে রাসায়নিক প্রসাধনকে না বলতেও সাহায্য করে। হলুদ, চন্দন, মুলতানি মাটি, বাদাম, আমলকী, পিঁয়াজ, আদা, আলু, বিটরুট- এসবই রূপ-রহস্যে ভরপুর। আর দেশের মাটিতে এগুলোর ভালো ফলন বলে দামও নাগালের মধ্যে। নিত্যদিনের রূপরুটিনে প্রয়োজন হয় নানা কিছু। ত্বকের যতনে ফেসওয়াশ, ময়েশ্চারাইজার, তেল এমনকি বডিওয়াশ- এসব তো চাই-ই চাই। তবে কোন কোন প্রাকৃতিক উপাদানের উপস্থিতি প্রয়োজন, তাও জেনে রাখা জরুরি।
প্রকৃতি থেকে পাওয়া :
মুখমন্ডল পরিষ্কারের জন্য ফেসওয়াশ প্রয়োজন পড়ে। তবে রূপবোদ্ধারা বলে থাকেন- একটি মানসম্পন্ন ফেসওয়াশের আবশ্যকীয় গুণ তিনটি চাই। ত্বকের ময়লা দূর করা, ত্বক মোলায়েম রাখা, ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা বজায় রাখা। আর এসব প্রসাধনীতে রাসায়নিক উপাদানের বদলে প্রাকৃতিক উপাদান থাকলে ত্বক পরিষ্কার হবে প্রকৃতির সংস্পর্শে। নিম, ঘৃতকুমারী (অ্যালোভেরা), হলুদ, মধু, চালের গুঁড়া অকৃত্রিম উপাদান। এসব উপাদানে তৈরি ফেসওয়াশ পাওয়া যাবে। এ তো গেল মুখ পরিষ্কারের গল্প। দেহেরও চাই এমন যত্ন। কিন্তু সাবানের ক্ষার সেদিকে টানে না। প্রতিদিন সাবান ব্যবহারে ত্বকের শুষ্কতার আশঙ্কা থাকে। প্রাকৃতিক উপকরণে তৈরি কম ক্ষারযুক্ত সাবান অথবা বডি ওয়াশ হতে পারে সমাধান। ঘৃতকুমারীর রসের উপস্থিতি থাকলে ত্বক কোমল থাকবে। ফুলের নির্যাসে সুবাসিত হবে দেহ, সুন্দর রাখবে মন।
রেশমের মতো চুল রুক্ষ হলে তাতে আর্দ্রতা ফিরিয়ে দেয় নারকেল তেল। শুষ্ক ত্বকের আর্দ্রতাও ফিরিয়ে দেয় নারকেলের দুধ। তাই শুষ্ক ত্বকের ক্রিম, লোশনে কোকোনাট মিল্ক থাকা ভালো। এতে প্রচুর ভিটামিন সি এবং ই রয়েছে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে ত্বককে কোমল রাখে। চুল ঝরে যাওয়ার সমস্যার যারা ভুক্তভোগী তাদের জন্য নিয়ামক হলো পিঁয়াজ। রান্নার এই উপাদানের ঝাঁজে চুলও হতে পারে টেকসই। শুধু একটু নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর ব্যবহার করতে হবে চুলে। সাত দিনে দুবার ব্যবহারে চুলের ঝরে পড়া রোধ করা যেতে পারে।
লেখা : সাদিয়া সারা