বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভারতের ধনী নারী

ভারতের ধনী নারী

শত কোটি মানুষের দেশ ভারত। ভারতের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় পুরুষের পাশাপাশি নারী উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের কথাও বার বার উঠে এসেছে। তারা নিজ মেধা আর পরিশ্রমের গুণে দেখা পেয়েছেন সাফল্যের। এদের কেউ নিজেই গড়েছেন টাকার পাহাড়, কেউ আবার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তিকে বাড়িয়ে চলছেন প্রতিনিয়তই। বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য ভারতের এই ধনকুবের নারীদের সুনাম রয়েছে। তেমন কয়েকজনের কথা লিখেছেন— সাইফ ইমন

 

ভারতের শীর্ষ ধনী নারী সাবিত্রী জিনদাল

৬৭ বছর বয়সী সাবিত্রী দেবী জিনদাল ভারতের সেরা ধনী নারী। ফোর্বসের হিসাব বলছে, তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৫.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০০৫ সালে সাবিত্রী জিনদালের স্বামী ওপি জিনদালকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হলে ওপি জিনদাল মৃত্যুবরণ করেন। এরপর স্বামীর ব্যবসার হাল ধরেন তিনি। বিলাসে মত্ত না হয়ে, অর্থ সাম্রাজ্য আরও বাড়িয়েছেন তিনি। তার দূরদর্শী ব্যবসায়িক পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্তের প্রশংসা করছেন বিশ্বসেরা বিশ্লেষকরাও। অচিরেই তিনি ধনী নারীর তালিকায় সবার উপরে উঠে আসেন। ব্যবসার পাশাপাশি রাজনীতিতে নাম লেখান তিনি। সেখানেও পেয়েছেন সাফল্যের দেখা। ২০১৩ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে সাবিত্রী জিনদাল হরিয়ানা সরকারের মন্ত্রী হিসেবে কাজ করেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি তার পদ হারান। বর্তমানে তিনি এমিরিটাস, জিনদাল স্টিল অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত আছেন। ১৯৫০ সালে ভারতের আসামে তিনসুকিয়া পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালে ওপি জিনদালের সঙ্গে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ওপি জিনদালই জিনদাল গ্রুপের এবং জিনদাল স্টিল অ্যান্ড পাওয়ার রিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। স্বামীর মৃত্যুর পরই চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন সাবিত্রী জিনদাল। ২০১৬ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী তিনি শুধু ভারতের শীর্ষ ধনী নারী নন, এ ছাড়া ভারতের শীর্ষ ধনকুবেরদের তালিকায় ১৬তম অবস্থানে রয়েছেন। তিনি বিশ্বের ৪৫৩তম ধনী ব্যক্তি হিসেবে অবস্থান করছেন।

 

ইন্দু জৈন [৩.২ বিলিয়ন]

ভারতের বিখ্যাত সানু জৈন পরিবারের ইন্দু জৈন অন্যতম শীর্ষ ধনী নারী হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত। ভারতের সবচেয়ে বড় মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান তিনি। ফোর্বসের তালিকা বলছে, ইন্দু জৈন বিশ্বের ৫৭তম ধনাঢ্য ব্যক্তি। ২০১৬ সালে ইন্দু জৈন পদ্মভূষণ পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৩ সাল থেকে ওয়াননেস ফোরামের গাইডিং ফোর্স হিসেবে আছেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটি শুরু হয়েছিল ভারতের রাষ্ট্রপতির হাত ধরে। ইন্দু জৈন বিয়ে করেছিলেন অশোক কুমারকে। এই দম্পতির রয়েছে দুই পুত্র সন্তান সামির জৈন ও ভিনিত জৈন এবং এক কন্যা সন্তান। ইন্দু জৈনের স্বামী অশোক কুমার যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯৯ সালে হার্ট ট্রান্সপ্লান্টের অপারেশনের সময় মৃত্যুবরণ করেন। ইন্দু জৈনের মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ১৩টি সংবাদ পত্রিকা ও ১৮টি ম্যাগাজিন। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো টাইমস অব ইন্ডিয়া; যেটি পৃথিবীর সর্বাধিক প্রচারিত পত্রিকাগুলোর একটি। ইন্দু জৈন বেনিট, কোলম্যান অ্যান্ড কোং প্রতিষ্ঠানগুলোকে নবজন্ম দেন। একজন দক্ষ ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি সুপরিচিত। তিনি টাইমস ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তিনি নানা সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন এবং সরকার ও জনগণের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে তার অবদান ব্যাপক প্রশংসিত।

 

বিনোদ গুপ্তা হেভেলসকে তুলে আনেন অনন্য উচ্চতায়

ফোর্বসের ধনাঢ্য ব্যক্তির তালিকায় বিনোদ গুপ্তার অবস্থান ৭৪তম

বিনোদ গুপ্তা ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনী নারী। তার মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ২.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি কিমত রায় গুপ্তার স্ত্রী। ভারতের বিখ্যাত ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি হেভেলসের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন কিমত রায় গুপ্তা। বিনোদ গুপ্তা ও তার স্বামী ১৯৫৮ সালে ইলেকট্রিক্যাল ইকুইপমেন্ট কোম্পানি হেভেলস প্রতিষ্ঠা করেন। শুরু থেকেই কিমত রায় গুপ্তা স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ে কোম্পানিটিকে তিল তিল করে বড় করেছেন। ২০১৪ সালের নভেম্বরে কিমত রায় গুপ্তা মৃত্যুবরণ করলে অগাধ সম্পত্তির মালিক হন এই নারী। প্রতিষ্ঠানটি দেশের সীমানা পেড়িয়ে অর্জন করেছে আন্তর্জাতিক খ্যাতি। ইলেকট্রিক্যাল ফিটিং তৈরির প্রস্তুতকারক এই প্রতিষ্ঠানটি দেশে এবং দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক নানা সম্মাননায় ভূষিত হয়েছে। বিলিওনিয়ার নারী বিনোদ গুপ্তা প্রতিষ্ঠানটির কোনো পদ নেননি। তবে ছোট ছেলে অনিল রায় গুপ্তাই বর্তমানে হেভেলস ইন্ডিয়া পরিচালনা করে আসছেন। গত ডিসেম্বরে হেভেলস তার উৎপাদিত ইলেকট্রিক্যাল সামগ্রীর ৮০ ভাগ ইউরোপকেন্দ্রিক লাইট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান সিলভানিয়ার কাছে রপ্তানি করেন ১৬০ মিলিয়ন কোটি ডলার মূল্যে। এ ছাড়াও নানা দেশে কোম্পানিটি তাদের পণ্য রপ্তানি করে থাকে।

 

স্মিতা কৃষ্ণা গোদরেজ [২.৬ বিলিয়ন]

স্মিতা কৃষ্ণা ভারতের ধনাঢ্য নারীদের মধ্যে অন্যতম। তিনি ভারতের বিখ্যাত গোদরেজ পরিবারের একজন যোগ্য উত্তরসূরি। গোদরেজ পরিবার ভারতের মুম্বাইয়ে ব্যবসা শুরু করে ১৮৯৭ সালের দিকে। এ পরিবারের রয়েছে নানা রকম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। এ পরিবারের প্রচুর ধন-সম্পত্তির ৫ ভাগের এক ভাগ অংশীদার এই স্মিতা কৃষ্ণা গোদরেজ। তার ভাই ভারতের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী জমশেদ নওরোজ গোদরেজ। গোদরেজ অ্যান্ড বয়েজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং চেয়ারম্যান তিনি। প্রথিতযশা নারী ব্যক্তিত্ব স্মিতা কৃষ্ণা গোদরেজ প্রায়ই সংবাদের শিরোনাম হন। দুই বছর আগেও তিনি একবার সংবাদের শিরোনাম হয়েছিলেন। প্রায় ৬০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে মুম্বাইয়ে তিনি একটি প্রাসাদন্যায় বাংলো কিনেন। বাংলোটি ভারতীয় ঐতিহ্যের দিক দিয়েও ব্যাপক আলোচিত। এটির মালিকানা ছিল হোমি ভাভার, যিনি ভারতের অ্যাটমিক অ্যানার্জির পথিকৃৎ ব্যক্তিত্ব। স্মিতা কৃষ্ণা সংস্কৃতমনা। তিনি বিয়েও করেছেন একজন নামকরা সংস্কৃত ব্যক্তিত্ব ভিজয়কে। ভিজয় ভারতের থিয়েটার জগতে অত্যন্ত প্রতিভাবান প্রভাবশালী অভিনেতা। এই দম্পতির একজন সন্তান রয়েছে নাম নয়রিকা। নয়রিকা নিজেও মায়ের সঙ্গে পারিবারিক ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন।

 

লিনা তিওয়ারি [২.১ বিলিয়ন]

ভারতের ফার্মা ফরচুনের উত্তরাধিকারী লিনা তিওয়ারি। তিনি ইউএসভি লিমিটেডের চেয়ারম্যান। তাকে ভারতের অন্যতম প্রভাবশালী নারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ ছাড়া তার সম্পদের ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফ তাকে করেছে সুপরিচিত। লিনা তিওয়ারি মুম্বাই ইউনিভার্সিটির অধীন সিডেনহাম কলেজ থেকে বি.কম কমপ্লিট করে আমেরিকার বোস্টন ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ২.১ বিলিয়ন ডলার। দিন দিন তার সম্পদ বাড়ছেই। ৩৮৫ মিলিয়ন ডলার রেভনু নিয়ে তিওয়ারির বাবা প্রতিষ্ঠানটি শুরু করেন ১৯৬১ সালে। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে তখন যুক্ত ছিল রেভলন। প্রতিষ্ঠানটি নানা রকম ফার্মাসিউটিক্যাল উপাদানের পাশাপাশি ডায়াবেটিক ও কার্ডিওভাসকুলার ড্রাগ তৈরিতে প্রসিদ্ধ। প্রতিষ্ঠানটি সুনাম অর্জন করেছে দেশে ও দেশের বাইরে। এই ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি অর্থ সাম্রাজ্য বিস্তৃত করেছেন। তিনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার প্রশান্তকে বিয়ে করেন। প্রশান্ত বর্তমানে ইউএসভি লিমিটেড পরিচালনার দায়িত্বে আছেন। এই দম্পতির বিলাস নামে এক ছেলে সন্তান রয়েছে। বাবা-মায়ের পথ ধরে ছেলেও নেমেছেন ব্যবসার জগতে। পেয়েছেন সাফল্যের দেখা। বিলাস আমেরিকায় একটি গেইমিং আউটফিট প্রতিষ্ঠান শুরু করেছেন।

 

কিরণ মজুমদার শাও [২.৩ বিলিয়ন]

ভারতের নারী জাগরণের জয়জয়কার রচিত হয়েছে যে কয়জন নারীর হাত ধরে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিরণ মজুমদার শাও। ৬০ বছর বয়সী এই নারী প্রথম বায়োটেক নারী উদ্যোক্তা। বিজ্ঞানের ছাত্রী কিরণ মজুমদার শাও পড়াশোনা করেছেন বেঙ্গালুরু ও মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়াশোনা শেষে এই ধনকুবের নারী প্রতিষ্ঠা করেন বায়োটেকনোলজি কোম্পানি বায়োকন। বায়োকন মূলত কাজ করে ক্রনিক ডিজিজ নিয়ে। এসব রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। যেমন— ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, অটোইম্যুনি ইত্যাদি। বায়োকন এ ধরনের রোগের ব্যয়বহুল চিকিৎসা সুবিধা নামিয়ে এনেছে সাধ্যের মধ্যে। খুব কম খরচে মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে এসব রোগের চিকিৎসা। কিরণ মজুমদার সম্মানজনক বহু পুরস্কার অর্জন করেছেন। ১৯৮৯ সালে তিনি পদ্মশ্রী পদক পান এবং ২০০৫ সালে পদ্মভূষণ খেতাবে ভূষিত হন। কিরণ মজুমদার তার মৃত্যুর পর মোট সম্পত্তির ৭৫% বিশ্বজুড়ে মানবহিতকর কাজে ব্যয় করার ঘোষণা দেন। তিনি ইতিমধ্যে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছেন। যেখানে তিনি ৩৩ মিলিয়ন ডলার অনুদান হিসেবে দান করেছেন। ২০০৪ সালে ইকোনমিক টাইমস অ্যাওয়ার্ড থেকে এই নারী ‘বিজনেস উইমেন অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে ভূষিত হন। এ ছাড়া ফার্মা লিডার্স সামিটে তাকে গ্লোবাল ইন্ডিয়ান উইমেন ঘোষণা করা হয়।

 

আনু আগা [১.০৩ বিলিয়ন]

বর্তমানে টেক ফর ইন্ডিয়ার চেয়ারপারসন ৭৩ বছর বয়স্ক আনু আগা ভারতের অন্যতম শীর্ষ বিলিওনিয়ার। ভারতের স্বনামধন্য এই নারী ব্যবসায়ী সমাজকর্মী হিসেবেও ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন। আনু আগার বাবা ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম থারমেক্সের প্রতিষ্ঠাতা। পরবর্তীতে আনু আগা ও তার স্বামী এই প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হন। থারমেক্স ভারতের অন্যতম টেকনোলজি বেইজড প্রতিষ্ঠান। স্বামীর সঙ্গে আনু আগা সাফল্যের সঙ্গে পরিচালনা করে আসছিলেন প্রতিষ্ঠানটি। যার সুনাম দেশের গণ্ডি পেড়িয়ে ছড়িয়েছে বিদেশেও। স্বামীর মৃত্যুর পর আনু আগা একাই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছেন। ২০০৪ সালে তিনি অবসরে গেলেও কোম্পানিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ থারমেক্স বোর্ডের ডিরেক্টর হিসেবে অধিষ্ঠিত আছেন। এই পদে থেকেই তিনি নানা রকম বড় বড় সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে থাকেন। আনু আগা ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির ওয়েস্টার্ন রিজিওনের চেয়ারপারসন হিসেবেও কাজ করে যাচ্ছেন। এই পদ থেকে তিনি ভারতের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি নানা রকম সামাজিক কর্মকাণ্ডে অবদান রাখতে পারছেন। নারী-পুরুষ সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন আনু আগা। ২০১০ সালে এই প্রথিতযশা নারী তার সামাজিক উন্নয়নমূলক নানা কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত হন।

 

শোভনা ভারতিয়া [৮৩০ মিলিয়ন]

বিখ্যাত মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শোভনা ভারতিয়া ভারতের অন্যতম এবং বড় মিডিয়া প্রতিষ্ঠান এইচটির চেয়ারপারসন এবং এডিটোরিয়াল ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত আছেন। এ প্রতিষ্ঠান থেকেই প্রকাশিত হয় হিন্দি ভাষার জাতীয় দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমস এবং এইচটি মুম্বাই ও বাণিজ্য সংবাদ পত্রিকা মিন্ট। এ প্রতিষ্ঠানের আরও রয়েছে নানা রকম ওয়েবসাইট ও চারটি এফএম রেডিও স্টেশন। ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জব পোর্টাল সাইন ডট কম এবং সিনেমা পোর্টাল দেশিমার্টিনি ডট কম। ২০১৩ সালে শোভনা ভারতিয়া সাপ্তাহিক বাণিজ্য পত্রিকা মিন্ট এশিয়া প্রকাশ শুরু করেন সিঙ্গাপুরে এবং একটি ওয়েবিটিউড, একটি সোস্যাল ডিজিটাল মিডিয়া আউটফিট ক্রয় করেন। শোভনা ভারতিয়া সম্প্রতি দিল্লিতে এফএম রেডিও নেশা ১০৭.২ চালু করেন এইচটি মিডিয়ার ব্যানারে। ভারতের বিখ্যাত ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট কেকে বিরলার মেয়ে এবং জিডি বিরলার নাতনি এই শোভনা ভারতিয়া। ভারতের এই নামকরা বিরলা পরিবারটি রয়েছে এইচটি মিডিয়ার ৭৫% মালিকানা। শোভনা ভারতিয়ার স্বামী সিয়াম সুন্দর ভারতিয়া ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি জুবিল্যান্ট লাইফ সায়েন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান।

 

বিদ্যা মুরকুম্ভি চিনিকলের আয়ে গড়েছেন টাকার পাহাড়

মুরকুম্ভির মালিকানায় থাকা সাতটি চিনিকল থেকে ৮.৪ মিলিয়ন টন চিনি উৎপাদন করা হয়

মিষ্টভাষী বিদ্যা মুরকুম্ভি হলেন বিখ্যাত শ্রী রেনুকা সুগার্সের চেয়ারপারসন এবং কো-ফাউন্ডার। তিনি রসায়নে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করে ১৫ বছর ধরে হোলসেল ট্রেডিং বিজনেস পরিচালনা করেন স্বামীর সঙ্গে মিলে। ১৯৯৮ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন শ্রী রেনুকা সুগার্স লিমিটেড। চিনি কল শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে শুরু হওয়া প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে ফুলে ফেঁপে বিশালাকার ধারণ করেছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির বড় সাতটি চিনিকল রয়েছে, যা থেকে ৮.৪ মিলিয়ন টন চিনি উৎপাদন করা যাচ্ছে। বর্তমানে এই নারীর প্রতিষ্ঠিত শ্রী রেনুকা সুগার্স ভারতেই শুধু নয় বরং পৃথিবীজুড়ে সুখ্যাতি পেয়েছে। বিদ্যা মুরকুম্ভির দক্ষ পরিচালনায় ২০০৯ সাল থেকে ব্রাজিলে ব্যবসা শুরু করেছেন। বিদ্যা মুরকম্ভি নানা সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডেও সরব রয়েছেন। তার প্রতিষ্ঠিত শ্রী রেনুকা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন থেকে তিনি সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকেন। এসব সামাজিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে শিশুশিক্ষা, গ্রামীণ সমাজের অধুনিকায়ন, কৃষকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিতকরণ, কৃষি ক্ষেত্রে সার্বিক উন্নয়ন ইত্যাদি। সামাজিক কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতিস্বরূপ বিদ্যা মুরকুম্ভিকে কারনাতাক স্টেইট ইউনিভার্সিটি তাকে ডক্টরেট উপাধি দেয়।

 

কাভেরু কালাথিনি [১১ মিলিয়ন]

কাভেরু কালাথিনি বিখ্যাত, কারণ তিনি ভারতের সর্বোচ্চ বেতনভুক্ত নারী। তিনি একজন প্রথিতযশা মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। তার স্বামী বেরন কালাথিনি মারান একজন বিখ্যাত ধনকুবের। কাভেরু কালাথিনি চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর অব সান গ্রুপ। তার স্বামীর রয়েছে নিজস্ব টেলিভিশন চ্যানেল, দৈনিক, সাপ্তাহিক নানা সংবাদপত্র, রেডিও স্টেশন, ডিটিএইচ সার্ভিস এবং চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। যেসব প্রতিষ্ঠানের বোর্ড অব মেম্বার হিসেবেও আছেন কাভেরু কালাথিনি। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে সান টিভি নেটওয়ার্ক, কাল রেডিও লিমিটেড, সাউথ এশিয়া এফএম লিমিটেড, উদয়া এফএম প্রাইভেট লিমিটেড, কুনগুমাম পাবলিকেশন প্রাইভেট লিমিটেড, কাল ইনভেস্টমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড, কাল কম প্রাইভেট লিমিটেড, সান ডাইরেক্ট টিভি প্রাইভেট লিমিটেড, কাল পাবলিকেশনস প্রাইভেট লিমিটেড, কাল মিডিয়া সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড, কাল এয়ার ওয়েজ প্রাইভেট লিমিটেড, কাল হোল্ডিংস প্রাইভেট লিমিটেড এবং সান বিজনেস সলিউশন প্রাইভেট লিমিটেড। কাভেরু কালাথিনি এর আগে নন-এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত ছিলেন স্পাইসজেট লিমিটেডে। তিনি মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর