রবিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

কেনেডি হত্যা রহস্য

সাইফ ইমন

কেনেডি হত্যা রহস্য

কেনেডি হত্যাকাণ্ডের দুই ঘণ্টার মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিচ্ছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসন, পাশে সদ্য বিধবা জ্যাকুলিন কেনেডি

প্রতিটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে দেওয়া হয় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সুরক্ষা। সামরিক শক্তিধর যুক্তরাষ্ট্রের বেলায় তা ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু এই সুরক্ষা ব্যবস্থার ফাঁক গলে হামলার ঘটনা বিশ্ববাসীকে হতবাক করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম আলোচিত প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির প্রাণ যায় আততায়ীর হাতে। আমেরিকার সর্বকনিষ্ঠ সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি হত্যা আজও বড় এক রহস্য হয়ে রয়েছে। সম্প্রতি কেনেডি হত্যার কিছু নথি প্রকাশ করা হয়েছে। আলোচিত এ হত্যা রহস্য নিয়ে আজকের রকমারি—

 

ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্ভাগা চরিত্রগুলোর অন্যতম একজন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫তম  প্রেসিডেন্ট জন ফিটজেরাল্ড কেনেডি বা জন এফ কেনেডি। তিনি ১৯৬১ থেকে ১৯৬৩ সাল নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। কেনেডিই ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম রোমান ক্যাথলিক  প্রেসিডেন্ট। অনেকের কাছে তিনি অনুসরণীয় আদর্শ। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কমসংখ্যক প্রেসিডেন্টকেই মানুষ মনে রেখেছে। তাদের মধ্যে অন্যতম প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি। তাকে নিয়ে লেখা হয়েছে একাধিক বই, বানানো হয়েছে চলচ্চিত্র। ১৯১৭ সালের ২৯ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস রাজ্যের ব্রুকলিনে জন্মগ্রহণ করেন কেনেডি। তার পূর্বপুরুষরা ছিলেন আয়ারল্যান্ডের। কেনেডির পিতা জোসেফ প্যাট্রিক কেনেডি এবং মা রোজ ফিটজেরাল্ড। কেনেডির বাবা ছিলেন একজন সফল ব্যবসায়ী। ১৯২৭ সালের সেপ্টেম্বরে পরিবারের সঙ্গে কেনেডি পাড়ি জমান নিউইয়র্ক সিটির রিভারডেলে। এরপর ১৯৩৬ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এখান থেকে ১৯৪০ সালে কেনেডি ‘আপিসমেন্ট ইন মিউনিখ’ শীর্ষক থিসিস এবং গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার মাত্র তিন বছর পর ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর টেক্সাস স্টেটের ডালাসে ডালাস নগরী দিয়ে ছাদখোলা গাড়িতে করে সস্ত্রীক যাওয়ার পথে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন ৪৬ বছরের যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে কম বয়সী ও সুদর্শন  প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি। লি হার্ভি অসওয়াল্ড নামের এক স্নাইপার তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিলেন।

কেনেডি হত্যাকাণ্ডের ৫০ বছর পরও ঘটনাটি রহস্যাবৃত থেকে যায়। এএফপির বরাতে ‘দ্য ডন’-এর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, টেক্সাস স্কুল বুক ডিপোজিটরি নামের এক বহুতল গুদামখানা থেকে কেনেডির ওপর হামলা চালানো হয়। ঘটনার দিনই ওই গুদামখানার কর্মচারী লি হার্ভি অসওয়াল্ডকে সন্দেহভাজন আততায়ী হিসেবে আটক করা হয়। অসওয়াল্ড হত্যার দায় স্বীকার করেননি। এর আগেই ঘটনার দুই দিন পর অর্থাৎ ২৪ নভেম্বর জ্যাক রুবি নামের এক ব্যক্তি তাকে গুলি করে হত্যা করেন। এরপর থেকে কেনেডিকে হত্যায় লি হার্ভি অসওয়াল্ডের জড়িত থাকার বিষয়টি নিয়ে চলছে তর্ক-বিতর্ক।

যুক্তরাষ্ট্রের তত্কালীন প্রধান বিচারপতি আল ওয়ারেনের নেতৃত্বে গঠিত হয় একটি সরকারি তদন্ত কমিশন। সেখানে জানানো হয় লি হার্ভি অসওয়াল্ড একা কেনেডির ওপর গুলি চালিয়েছিলেন। কিন্তু এ নিয়ে ইতিহাসবিদরা এখনো একমত নন। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে মার্কিন গবেষণা সংস্থা গালাপ ২০০৩ সালে জনসাধারণের ওপর এক জরিপ চালায়। তাতে দেখা যায়, মাত্র ১৯ শতাংশ মার্কিন বিশ্বাস করেন যে কেনেডির হত্যার পেছনে কেবল এক ব্যক্তি জড়িত। এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি নাগরিক মনে করেন, কোনো মাফিয়া দল অথবা দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইএ) কেনেডিকে হত্যা করেছে, কারণ তিনি তাদের স্বার্থের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর জেসি ভেনচারা তার সাম্প্রতিক বই ‘দ্য কিল্ড আওয়ার প্রেসিডেন্ট’-এ কেনেডি হত্যার পেছনে ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করেছেন। ভেনচারা তার বইয়ে বলেন, ‘আমি মনে করি, রাশিয়া ও অন্যান্য দেশজুড়ে কেনেডির যত শত্রু ছিল, তার চেয়ে নিজ সরকারের ভিতরে শত্রুর সংখ্যা ছিল অনেক বেশি।’

জন ফিটজেরাল্ড জ্যাক কেনেডি, সংক্ষেপে জে এফ কে ছিলেন আমেরিকার ৩৫তম প্রেসিডেন্ট। ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর, দিনটি ছিল শুক্রবার। সেদিন টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাস শহরে এক মোটর শোভাযাত্রায় স্ত্রী জ্যাকুলিন কেনেডিকে নিয়ে অংশ নিয়েছিলেন কেনেডি। তাদের গাড়িটি ডিলে প্লাজা অতিক্রমের সময় দুটি বুলেট সরাসরি প্রেসিডেন্ট কেনেডির গলা ও মাথায় আঘাত হানে।

 

প্রকাশিত হলো কেনেডি হত্যার নথি

ষাট শতকের প্রেসিডেন্ট হত্যার ঘটনা যুগ যুগ ধরে ছিল ঘোলাটে। ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর সবার সামনে আততায়ীর গুলিতে নিহত হওয়া কোনো সাধারণ ঘটনা ছিল না। কিন্তু এত বছরেও মিল ছিল না তার কোনো সদুত্তর। অবশেষে জন এফ কেনেডিকে হত্যা ঘটনার ব্যাপারে আরও ২ হাজার আটশ গোপন নথি প্রকাশ করেছে মার্কিন প্রশাসন। ঠিক কী কারণে হত্যা এবং হত্যাকাণ্ডটি নিয়ে কত শত নাটকীয়তা হয়েছিল তার কোনো হিসাব নেই। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এসব গোপন নথি প্রকাশের যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ‘জনগণের অধিকার আছে ঠিক কী ঘটেছিল তা জানার।’ কিন্তু সেই নথি প্রকাশেও ছিল নিরাপত্তার অজুহাত। যেসব নথি প্রকাশ করা হয়েছে তাতে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। একটি নথিতে দেখা যায়, কেনেডির হত্যাকারী লি হার্ভি অসওয়াল্ড নিজেই হত্যার হুমকিতে ছিলেন। এ ব্যাপারে পুলিশকে সতর্ক করে দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল তদন্ত সংস্থা-এফবিআই। এফবিআইর তত্কালীন ডিরেক্টর এডগার হুভার নথিতে লিখেছেন, তাত্ক্ষণিকভাবে পুলিশপ্রধানকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল এবং পুলিশপ্রধানও আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, তাকে যথাযথ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। হত্যাকাণ্ডের মাত্র দুই ঘণ্টার মাথায় নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়টিও এড়িয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। তত্কালীন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসনের শপথ অনুষ্ঠানে কেনেডির সদ্য বিধবা জ্যাকুলিন কেনেডিও উপস্থিত ছিলেন। আবার হত্যাকারী লি হার্ভি অসওয়াল্ড ছিলেন সাবেক মার্কিন মেরিন সেনা। হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পর তাকেও ডালাসের পুলিশ বিভাগের কক্ষে গুলি করে হত্যা করা হয়। কিন্তু সে সময় তাকে কড়া নিরাপত্তায় কারাগারে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। তত্কালীন সাংবাদিকদের সামনেই ডালাসের এক নাইট ক্লাবের মালিক জ্যাক রুবি তাকে হত্যা করেন। সর্বশেষ প্রকাশিত সিআইএ নথিতে দেখা যায়, লি হার্ভি অসওয়াল্ড মেক্সিকো সিটিতে গিয়ে একজন কেজিবি অফিসারের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। এই কেজিবি অফিসারের কাজই গোপন হত্যাকাণ্ডে সাহায্য করা। আরেকটি নথিতে দেখা যায়, এই হত্যাকাণ্ডের পর সোভিয়েতের মধ্যে এমন আশঙ্কা হয়েছিল, যে কোনো দায়িত্বজ্ঞানহীন মার্কিন জেনারেল হঠাৎ সোভিয়েত ইউনিয়নকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করতে পারেন। আর সে থেকেই বড় ধরনের যুদ্ধের আশঙ্কা করা হয়। আরেকটি নথিতে দেখা যায়, ব্রিটেনের একটি আঞ্চলিক সংবাদপত্র, ‘ক্যামব্র্রিজ নিউজ’ নাকি হত্যাকাণ্ডের আগে অজ্ঞাত পরিচয়ে ফোন পেয়েছিল। তাতে হুঁশিয়ারি করা হয়েছিল ‘যুক্তরাষ্ট্রে শিগগিরই বড় ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। ১৯৯২ সালে মার্কিন কংগ্রেসের এক বিল পাস করা হয়, সেখানে কেনেডি হত্যার সব গোপন নথি ২৫ বছরের মধ্যে প্রকাশের অঙ্গীকার করা হয়। গত বৃহস্পতিবার ছিল সেই ২৫ বছরের শেষ দিন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে সিআইএ, এফবিআই এবং পররাষ্ট্র দফতরের সরকারের সঙ্গে দেনদরবার চলে কিছু নথি এখনই প্রকাশ না করতে। এতে হত্যা রহস্য সম্পর্কে ষড়যন্ত্র এবং জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটানো কঠিন হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সম্ভবত তা আরও ছয় মাস গোপন রাখা হতে পারে।

আর সেই শেষ সময়টি হতে পারে আগামী বছরের ২৬ এপ্রিল।

 

লি হার্ভি অসওয়াল্ড ছিলেন হত্যাকারী

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির হত্যাকারী লি হার্ভি অসওয়াল্ডের মৃতদেহের চিহ্নিতকরণ ট্যাগ নিলামে বিক্রি হয়েছিল ৩৬০০ পাউন্ডে

বিতর্ক থাকলেও লি হার্ভি অসওয়াল্ডকেই মানা হয় কেনেডির হত্যাকারী। ঘটনার দিন রাইফেলের ফোরস্কোপ দিয়ে কয়েক মুহূর্ত দেখে নেন কেনেডিকে লি হার্ভি। তারপরই ট্রিগার চেপে ধরেন। এরপরই ভিলেন হিসেবে ইতিহাসে স্থান পেয়েছে লি হার্ভি অসওয়াল্ডের নাম। লি হার্ভির ছোটবেলা কেটেছিল চরম হতাশায়। ১৯৩৯-এ লুইজিয়ানায় জন্ম তার। বাবা রবার্ট এডওয়ার্ড লি ও মা মার্গারেট ফ্রান্সিসের তৃতীয় সন্তান লি হার্ভি। জন্মের পরবর্তী ১৮ বছর কাটে নিতান্ত ছন্নছাড়াভাবে। এই সময়ে ১২ বার স্কুল বদল হয় লি হার্ভির। ফলে বেড়ে ওঠার সময় কোনো বন্ধু পাননি তিনি। জীবনের শুরু থেকেই লি হার্ভি অসওয়াল্ড মানসিক অবসাদগ্রস্ত। স্কুলে পড়ার সময় একবার তীব্র মানসিক অবসাদজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন লি হার্ভি। অনেকে দাবি করেন আক্রান্ত হয়েছিলেন স্ক্রিেজাফ্রেনিয়াতেও।

১৫ বছর বয়সেই লি হার্ভি কমিউনিস্ট মতাদর্শে বিশ্বাসী হয়ে পড়েন। মার্কিন নৌবাহিনীতে ভর্তি হয়েছিলেন। ২০ বছর বয়সে আমেরিকা ছেড়ে রাশিয়ায় পাড়ি জমান। মার্কিন নাগরিক হওয়ায় রাশিয়া তাকে আশ্রয় দিতে অস্বীকার করে। পরে হতাশায় কব্জি কেটে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন লি হার্ভি। পরবর্তীতে তাকে আশ্রয় দিতে রাজি হয় রুশ কর্তৃপক্ষ। রাশিয়াতেই ১৯ বছরের মারিনাকে ভালোবেসে ফেলেন। তাকে বিয়ে করেন লি হার্ভি। বিয়ের এক বছরের মাথায় সস্ত্রীক ফিরে আসেন আমেরিকায়। বিবাহিত জীবনেও শান্তি ছিল না। ১৯৬৩ সালের এপ্রিলে একটি কারখানা থেকে চাকরি চলে যায় লি হার্ভির। এর আগে ২৭ ডলার খরচ করে ডাকযোগে একটি রাইফেল আনান তিনি। ইতালির তৈরি ম্যানলিকার-কারসানো। তত দিনে ২৪ বছরের মার্কিন তরুণ বেছে নিয়েছেন নিজের লক্ষ্য। এরই ধারাবাহিকতায় সাত মাস পর তার হাতে খুন হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি। অসওয়াল্ডের প্রথম শিকার ছিলেন রিপাবলিকান নেতা মেজর জেনারেল এডউইন ওয়াকার। অসওয়াল্ডের গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন ওয়াকার। তবে বাঁচতে পারেননি কেনেডি।

 

মেরিলিন মনরো ও কেনেডির প্রেম

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জন্যও কেনেডি ছিলেন ব্যাপকভাবে আলোচিত। জগৎ বিখ্যাত সুন্দরী মেরিলিন মনরোর সঙ্গে ছিল তার গভীর প্রণয়। মনরো ছাড়াও জাইনি ম্যানসফিল্ড, ওডেরি হেপবার্ন, এঞ্জি ডিক্সনসহ অনেক সেলিব্রেটি শয্যাসঙ্গী হয়েছিলেন প্রেসিডেন্টের।

মার্কিন কিংবদন্তি অভিনেত্রী ও সংগীত শিল্পী মেরিলিন মনরোর সঙ্গে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ও তার ভাই রবার্ট এফ কেনেডির যৌনতার দৃশ্য সংবলিত একটি টেপ নিলামে উঠেছে বলে খবর আসে গণমাধ্যমে। হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, এ টেপটি কীভাবে উইলিয়াম নামের এক ব্যক্তির হস্তগত হলো সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। তবে উইলিয়াম সম্প্রতি দুই লাখ ডলারের দেনার দায়ে পড়লে তার বাসা থেকে এ টেপটি ক্রোক করা হয়। উইলিয়াম জানান, তিনি বহু বছর ধরে যৌনতার টেপটি তার বাসায় সংরক্ষণ করে আসছিলেন। কিন্তু এটি মনরোর সাবেক সঙ্গী জো ডিম্যাগিওকে আঘাত করতে পারে বিধায় তিনি জনসম্মুখে প্রকাশ করেননি। উইলিয়ামের বন্ধু ছিলেন জো। এর আগে এমন টেপের গুজব শোনা গেলেও বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে এটা অনেকেই নিশ্চিত করেছেন জন এফ কেনেডির সঙ্গে গোপন প্রেমে ঠিকই মজেছিলেন দর্শকনন্দিত হলিউড অভিনেত্রী মেরিলিন মনরো। ডেইলি মেইলের খবরে জানা গেছে, ফ্রেড ওটাস নামক একজন গোয়েন্দা ৫০ ও ৬০ দশকের হলিউডের বিখ্যাত তারকা ব্যক্তিদের ওপর গোয়েন্দাগিরি করতেন। ওই সময় তিনি মনরো এবং কেনেডির মধ্যকার গোপন সম্পর্কের বিষয়টির সন্ধান পান এবং তা গোপনে রেকর্ড করেন। এ ছাড়াও ফ্রেড এ জুটির ফোনের কথোপকথনের মাধ্যমে গোপন তথ্য বের করে আনেন। ফ্রেড দাবি করেন, ‘জন এফ কেনেডির বোনকে অভিনেতা পিটার লওফোর্ড বিয়ে করেন। পিটার মালিবু হাউসে থাকতেন।

সেখানেই জন এফ  কেনেডি মনরোর সঙ্গে গোপনে অভিসারে মিলিত হতেন।’ তার তথ্য থেকে আরও জানা যায়, জন এফ কেনেডিই ছিলেন শেষ ব্যক্তি যাকে মেরিলিন মনরো আত্মহত্যার আগে শেষ ফোনটি করেছিলেন। তবে তাদের গোপন সম্পর্কের রেকর্ড করা টেপটি এখনো প্রকাশ হয়নি।

মাত্র ৩৬ বছর বয়সী মনরোকে ১৯৬২ সালের ৫ আগস্ট লস অ্যাঞ্জেলেসে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে এ নিয়েও রয়েছে বিতর্ক।

 

ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল ইসরায়েল

মার্কিন প্রখ্যাত রাজনৈতিক বিশ্লেষক মার্ক গ্লিন বলেছেন, ৫০ বছর আগে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ইসরায়েল জড়িত ছিল। ইরানের ইংরেজি নিউজ চ্যানেল প্রেস টিভিকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে এ কথা বলেন তিনি। মার্ক গ্লিন সেখানে বলেন, অবস্থানগত এবং আনুষঙ্গিক জোরালো আলামত এবং তথ্য-প্রমাণ কেনেডি হত্যাকাণ্ডে ইসরায়েলের জড়িত থাকারই প্রমাণ বহন করে। কেবল মার্কিন কংগ্রেস বা নির্বাহী বিভাগ নয়, সেই সঙ্গে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোতেও ইসরায়েলি লবিং তৎপর রয়েছে বলেও জানান তিনি।

মার্কিন সরকারি তদন্তে কেনেডি হত্যার জন্য সাবেক মেরিন সেনা সদস্য লি হার্ভি অসওয়াল্ডকে দায়ী করা হলেও এ হত্যা রহস্য এখনো পুরোপুরি উদঘাটিত হয়নি। গ্লিন আরও বলেন, মার্কিন সরকারের মধ্যে লুকিয়ে থাকা একটি মহল এ ভয়াবহ খুনে সহায়তা করেছে। মার্কিন স্বার্থ রক্ষা করতে ইচ্ছুক এমন এক প্রেসিডেন্টকে তারা হত্যা করেছে। সাক্ষ্য-প্রমাণ ও আলামত থেকে বোঝা যায়, জন এফ কেনেডি এবং তার ভাই রবার্ট কেনেডির হত্যার সঙ্গে ইসরায়েল জড়িত। দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় নিহত আমেরিকার চতুর্থ প্রেসিডেন্ট ছিলেন জন এফ কেনেডি। মার্কিনরাও মার্ক গ্লিনের সঙ্গে বিভিন্ন জনমত জরিপে একমত প্রকাশ করেছেন।

 

ধামাচাপা দেন সিআইএ পরিচালক

কেনেডি হত্যাকাণ্ডের রহস্য ধামাচাপা দিয়েছিলেন দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর একজন সাবেক পরিচালক। সিআইএর একটি গোপন রিপোর্ট থেকে এ তথ্য জানা গেছে বলে বিশ্ব গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ২০১৩ সালে তৈরি ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৯৬৩ সালে যখন কেনেডিকে গুলি করে হত্যা করা হয় তখন সিআইএর পরিচালক ছিলেন জন ম্যাককোন। ওই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নিয়োজিত একটি ফেডারেল তদন্ত কমিশনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য আটকে দিয়েছিলেন তিনি। গোপন রিপোর্টের লেখকও সিআইএর ইতিহাসবিদ ডেভিড রবার্জ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর