রবিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রাজকুমারী কাহিনী

মানুষ মাত্রই সুন্দরের পূজারি। সেখানে নারীদের গণ্য করা হয় সুন্দরের প্রতীক হিসেবে। সুন্দরী দেখা মাত্রই আমরা তাকে রাজকন্যার সঙ্গে তুলনা করি। রাজকুমারী বা রাজরানীরা এখন আর ওই অর্থে নেই। কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশেই অতীত স্মৃতির প্রদীপ জ্বালিয়ে টিকে রয়েছেন রানী-রাজকুমারীরা। কেমন সেই রাজকুমারী? আসলেই কি রূপকথার মতো সৌন্দর্য আর ব্যক্তিত্ব তাদের? সৌন্দর্য কি কেবলই তাদের আভিজাত্যে? নাকি তার পোশাক রীতি, ব্যক্তিত্ব, যোগ্যতায়ও প্রকাশ পেয়েছে। চলুন চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক তাদের দিকে, যারা একালের রাজসুন্দরী।

তানিয়া তুষ্টি

রাজকুমারী কাহিনী

মেরি

ক্রাউন প্রিন্সেস অব ডেনমার্ক

ডেনমার্কের ক্রাউন প্রিন্স ফ্রেডিরিকের স্ত্রী ক্রাউন প্রিন্সেস মেরি এলিজাবেথ ডোনাল্ডসন। উত্তরাধিকার সূত্রে ফ্রেডিরিক যখন সিংহাসনে পদায়ন হবেন, মেরিও তখন রানী হিসেবে বিবেচিত হবেন। এই রাজসুন্দরী নিজেকে সুন্দর দেখাতে সবসময় সচেতন। এ ছাড়া তিনি পেশাগতভাবেই ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত। তার সৌন্দর্যের ঝলকানি শুধু মাথার মুকুটেই নয়, ব্যবহার্য অনুষঙ্গের মাধ্যমেও প্রকাশ পায়। তিনি যে জাঁকজমক পোশাকগুলো পরেন তা বিশ্বের সৌন্দর্য সচেতনদের কাছে সহজেই প্রিয় ও অনুকরণীয় হয়ে ওঠে। কিন্তু এসব বিষয়কে উপেক্ষা করে মেরির রূপের প্রভা ছড়িয়ে থাকে প্রাকৃতিকভাবেই। চকচকে মসৃণ ত্বকের জন্য বিশ্বের অনেক নারীর কাছে তিনি ঈর্ষণীয়। গুণগ্রাহীরা মেরির ত্বকের প্রশংসায় বাচ্চাদের নরম তুলতুলে ত্বককে সমকক্ষ ভাবেন। গাঢ় বাদামি রঙের চুল ও চোখের মণিজোড়া সহজেই সবাইকে আকর্ষণ করে। প্রিন্সেস মেরিকে মিক্সার অব স্টাইলও বলা চলে। তিনি দেখতে এতটাই অত্যাশ্চর্য যে, তাকে অপরূপ লাগতে সব ধরনের পোশাকই উপযুক্ত। তবে হলুদ, ম্যাজেন্টা, কালো ও ন্যুড রঙের পোশাক তাকে বেশি পরতে দেখা যায়। মেরির জন্ম ১৯৭২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার হোবার্টে। ‘সামার অলিম্পিকস ২০০০’ ভ্রমণের সময় তাদের দেখা হয়। এরপর ২০০৪ সালে ফ্রেডিরিক-মেরি বিয়ে করেন।

 

আমিরা বিনতে আইদান বিন নায়েফ আল তায়িল

 সৌদি আরবের হীরা!

সৌদি রাজকুমারী আমিরা বিনতে আইদান বিন নায়েফ আল তায়িল ১৯৮৩ সালের ৬ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। বাবা আইদান বিন নায়েফ আল তায়িল। বাবা-মার বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ায় রাজকুমারী আইদান মায়ের কাছে বড় হন। আইদান নিউ হেভেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৮ বছর বয়সে রাজকুমারী আইদান ২৮ বছরের বড় রাজকুমার আওলাদ বিন তায়িলের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু এই বিয়ের পরিণতি ঘটে ২০১৩ সালে। দর্শনধারী আইদানের রূপের বৈচিত্র্যে সবাই মুগ্ধ। তার চেহারায় একটি ঢেউ খেলানো আবহ ফুটে ওঠে। আর এটিই যেন তার বিশেষ একটি দিক। সুন্দরী রাজকুমারী আইদানের ক্ষুরধার বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন রূপের উপস্থাপন করতে চাইলে পাবেন তার ঢেউ খেলানো চুল বাঁক, চাঁদ বাঁকা চোখ, সরু ঠোঁট, বিউটি চিক ও উন্নত নাক, চিরল ভ্রু, প্রশস্ত ললাট আর আকর্ষণীয় থুতনি। তার রূপের প্রতিটি বৈশিষ্ট্যই যেন একটি রাজসিক আদল এনে দেয়। আইদানের উজ্জ্বল কোমল প্রাণবন্ত ত্বক তুলনা করা যায় যে কোনো শিশুর ত্বকের সঙ্গেই। পোশাক নির্বাচনের ব্যাপারেও রাজকুমারী আইদান থাকেন যথেষ্ট রুচিশীল।

 

কেট মিডলটন

ডাচেস অব কেমব্রিজ ব্রিটিশ রাজকুমারী

ডাচেস অব কেমব্রিজ ক্যাথরিন এলিজাবেথ মিডলটন। তার ডাকনাম কেট। প্রিন্সেস ডায়ানা এবং প্রিন্স চার্লসের বড় ছেলে উইলিয়ামের স্ত্রী তিনি। এই পরিচয়ের বাইরেও তিনি যেমন নজরকাড়া সুন্দরী তেমনি ফ্যাশন স্টাইলের জন্য প্রসিদ্ধ। রুচিশীল নির্বাচনের কারণে একাধিকবার ‘বেস্ট ড্রেসড স্লেব’ তালিকায় থেকেছেন। ২০১০, ২০১১ ও ২০১২ সালে তিনি ভ্যানিটি ফেয়ারের বার্ষিক সেরা পোশাক পরিহিতার তালিকায় এক নম্বরে ছিলেন। ২০১২ সালের মে মাসে বপা কর্তৃক একটি জরিপে অংশগ্রহণের পর কেট সেরা সেলিব্রেটি স্মাইলের খ্যাতি অর্জন করেন। শুধু কি তাই, চুলের বিশেষ স্টাইলে কাটের জন্যও বিশ্বজুড়ে তিনি অনুকরণীয়। অথচ তিনি উঠে এসেছেন একদম সাদামাটা একটি পরিবার থেকে। মাইকেল ফ্রান্সিস মিডলটন ও ক্যারল এলিজাবেথ মিডলটন দম্পতির ঘরে ১৯৮২ সালের ৯ জানুয়ারি বার্কশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন কেট। পড়াশোনা চলাকালে তিনি টুকটাক মডেলিং-এ যুক্ত ছিলেন। একটি দাতব্য সংস্থার জন্য অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশে করা ফ্যাশন শোতে ক্যাটওয়াক করেন কেট। দর্শক সারিতে ছিলেন ব্রিটিশ যুবরাজ উইলিয়াম। কেট তার নজর কেড়ে নেন তখনই। তারপর দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব। এরপর ২০১১ সালের ২৯ এপ্রিল ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে খুব জাঁকজমকভাবে প্রিন্স উইলিয়াম ও ক্যাথরিন এলিজাবেথের বিবাহ পর্ব সম্পন্ন হয়।

 

চার্লিন

প্রিন্সেস অব মোনাকো

চার্লিন লিন্টে উইটস্টক মোনাকো প্রিন্স আলবার্ট-২ এর স্ত্রী। তিনি জিম্বাবুয়েতে জন্মগ্রহণ করেন ১৯৭৮ সালের ২৫ জানুয়ারি। দক্ষিণ আফ্রিকান অলিম্পিক সাঁতারু হিসেবে তার পরিচিতি রয়েছে। আলবার্টের সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয় ২০০০ সালে মোনাকোর একটি সুইমিং ইভেন্টে। তারপর থেকে চার্লিনের অনেক অফিশিয়াল কাজ করা হয় আলবার্টের সঙ্গে। এরই মধ্যে সম্পর্ক, ২০১০-এ বাগদান এবং বিয়ে হয় ২০১১ সালে। বেশ কয়েক বছর আগে একটি ইনজুরির কারণে সাঁতার থেকে বিদায় নেন। তারপরও তিনি প্রতিদিন দুবার সাঁতার কাটেন। এ কারণে তার বডি ফিটনেস অত্যন্ত সুদৃঢ়। তিনি নিজেই বলেন, ‘আমার ফ্যাশন সম্পর্কে জানা সত্যিই খুব কষ্টকর। কারণ আমি পানি ছাড়া একটি মাছ বলা যেতে পারে।’ তিনি ভলিবল খেলতেও ভালোবাসেন। লাল নেইলপলিশে নখ রাঙানো ও সবুজ পোশাক পরা তার অনেক পছন্দের। চুলের কাটের ব্যাপারে চার্লিন খুবই চুজি। তিনি অনেকের কাছেই ফ্যাশন আইকন হিসেবে পরিচিত। তিনি যদিও একজন সাঁতারু, তবু তার চেহারা অত্যন্ত তুলতুলে, উজ্জ্বল ও শিশুসুলভ। তাকে কখনো গাঢ় মেকআপে দেখা যায় না। ফ্যাশন দুনিয়া যতটা না অগ্রসর চার্লিন তার থেকেও অনেক এগিয়ে। তার ওয়্যারড্রোব ভরা আছে ফ্যাশনেবল পোশাকে। আধুনিকসহ গাউন ও অন্যান্য দেশের পোশাকেও তাকে দেখা যায়।

 

রানিয়া

জর্ডানের রানী

জর্ডানের রানী রানিয়া আল আবদুল্লাহ। পশ্চিমা বিশ্বের রানীদের সৌন্দর্যে যখন সবাই মুগ্ধ তখন হয়তো কোনো একটি মুসলিম দেশের রানীর দিকে কারও তেমন নজর পড়ার কথা নয়। রানিয়ার জাতীয় পোশাক রীতি, ঐতিহ্য ও দেশের উপযোগী সাজে নজর কেড়েছে সবার। এ ছাড়াও তার ফ্যাশনের কিছু রীতি স্পেন পর্যন্ত প্রভাবিত করে। রয়্যাল ন্যুড এড়িয়ে লম্বা পোশাকে জনসম্মুখে আসার প্রচলনটি রানিয়ার হাতেই শুরু। তার পছন্দের অনেক ব্র্যান্ডের পারফিউম ইউরোপের অনেক পরিবারের অনুকরণীয়। তার রাজকীয় ভঙ্গির মধ্যেও ফুটে ওঠে একটি প্রাণবন্ত ভাব। তিনি ১৯৭০ সালের ৩১ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ছিলেন ফয়সাল সেদকি আল ইয়াসিন ও মা ইলহাম ইয়াসমিন। মিসরের কায়রোর আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে ডিগ্রি অর্জন করেন। রানিয়া এবং জর্ডানের প্রিন্স আবদুল্লাহ প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়েন। সময় নষ্ট না করে ১৯৯৩ সালের ১০ জুন বসে পড়েন বিয়ের পিঁড়িতে। বিয়ের আগে রানিয়া আম্মানে অ্যাপলের দফতরে চাকরি করতেন।

 

রাজকুমারী তাতিয়ানা

ভেনেজুয়েলা বিউটি

রাজকুমারী তাতিয়ানা বা তাতিয়ানা এললিঙ্কা ব্লাতনিক। তিনি ভেনেজুয়েলায় জন্মগ্রহণ করেন ১৯৮০ সালের ২৮ আগস্ট। তাতিয়ানার বাবা ছিলেন ল্যাডিস্লাভ ভ্লাদিমির ব্লাতনিক ও মা ছিলেন ম্যারি ব্ল্যানচে বার্লিন। তাতিয়ানার বেড়ে ওঠা সুইজারল্যান্ডে। গ্রিসের রাজা কোনস্টাইন ও রানী অ্যান্নে ম্যারির ছেলে রাজকুমার নিকোলাসকে বিয়ে করে তাতিয়ানা গ্রিসের রাজকুমারী হন। তার আগে তাতিয়ানা মোটেই রাজকীয় পরিবারে বেড়ে ওঠেননি। তিনি পেশায় একজন ইভেন্ট পরিকল্পনাকারী ছিলেন। এর পাশাপাশি বেশ নামকরা একজন ফ্যাশন ডিজাইনার ছিলেন। তাতিয়ানার জন্মের ছয় বছর পর তার বাবা মারা যান। তাতিয়ানা তার মায়ের কাছেই বড় হন। তিনি অ্যাইগ্লন কলেজে পড়াশোনা সম্পন্ন করে জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। গ্রিসের প্রিন্সেস তাতিয়ানা ব্লাতনিক ২০০৩ সালে এক মিউচুয়াল বন্ধুর মাধ্যমে প্রিন্স নিকোলাসের সঙ্গে পরিচিত হন। এরপর প্রিন্স নিকোলাসের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করেন। তখনো তাতিয়ানা ইভেন্ট প্ল্যানিংয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২৮ ডিসেম্বর ২০০৯ সালে তাদের প্রেমের পরিণতি ঘটাতে বাগদান সম্পন্ন করেন। এভাবে কিছুদিন চলার পর ২০১০ সালের ২৫ আগস্ট তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহ সূত্রে তাতিয়ানা গ্রিসের রাজকুমারী হন। তাতিয়ানা কর্মগুণে যতটা প্রশংসনীয় ঠিক তেমনি রূপেও প্রশংসার দাবিদার। বিশেষ করে নিজেকে তিনি পরিবেশ উপযোগী করে উপস্থাপন করতে দারুণ পটু। যখন দেশের বাইরে ভ্রমণে যান, তখন খেয়াল রাখেন তিনি একজন পর্যটক। সেখানে বেড়াতে গিয়ে পর্যটকের উপযোগী পোশাককেই বেশি প্রাধান্য দেন।

স্পষ্ট স্বরধ্বনি বজায় রেখে ইংরেজিতে কথা বলা তার কাছে স্মার্টনেসের অংশ। তার উজ্জ্বল রেশমী চুল, সাজানো দাঁত, আকর্ষণীয় সবুজ চোখ, ঈর্ষণীয় গড়ন খুব সহজেই অন্যকে আকৃষ্ট করে। মাঝে মাঝে তাকে জিন্স স্নিকার্সে একদম হিপহপ রূপে দেখা যায়। এক কথায় তিনি মানানসই রূপে উপস্থিত হতে পারেন দক্ষতার সঙ্গে।

 

রানী জেৎসুন পেমা

ভুটান বিউটি

ভুটানের রানী জেত্সুন পেমা ওয়াংচুক। রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংহুকের সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয়েছিল পারিবারিক বনভোজনে। তখন পেমার বয়স ৭ এবং জিগমের ১৭। শৈশবেই তারা একে অপরের প্রেমে পড়েন। জিগমে পেমাকে বলেছিলেন, ‘যখন তুমি বড় হবে, তখন আমি তোমাকে বিয়ে করব। বড় হওয়া পর্যন্ত তুমি অন্য কাউকে বিয়ে করবে না’। ২০১১ সালের ১৩ অক্টোবর বৌদ্ধ ধর্মের নিয়মানুসারে রাজা জিগমে ও পেমা ঠিকই বিয়ে করেন। জেত্সুন পেমা ১৯৯০ সালের ৪ জুন ভুটানের থিম্পুতে জন্মগ্রহণ করেন। জেত্সুন পেমার বাবা ছিলেন ডেনদুপ গায়ালেসন ও মা সোনাম চোখি। পেমা প্রায়ই তার রাজকীয় ফ্যাশন স্টাইলের জন্য রাজসিক মহলসহ সাধারণ মহলে ভূয়সী প্রশংসা পেয়ে থাকেন। বিশেষ করে তার অপ্রতিরোধ্য সৌন্দর্য সবাইকে বিস্মিত করে। কোনো প্রকার মেকআপ ছাড়াই পেমার গ্ল্যামারাস চুল ও ত্বক সবার নজর কাড়ে। সময় ও উপলক্ষ অনুযায়ী পোশাক পরিধান খুবই প্রশংসা পায়।

 

হায়া বিনতে আল হুসেন

দুবাই বিউটি

জর্ডানের রাজা হুসেন ও রানী আলিয়া হুসেনের সন্তান রাজকুমারী হায়া বিনতে আল হুসেন। রাজকুমারী হায়া ১৯৭৪ সালের ৩ মে জন্মগ্রহণ করেন। রাজকুমারী হায়ার শিক্ষাজীবনের শুরুতে ব্রায়োস্টোন স্কুল ও পরে হিন্ডা কলেজে পড়েন। এরপর অন্যান্য রাজকীয় আরব পরিবারের সন্তানের মতো হায়া অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে বিএ অনার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। রাজকুমারী হায়া ব্যাডমিন্টন খেলায় পারদর্শী ছিলেন। উচ্চশিক্ষিত ও খেলাপ্রেমী হায়া তাই নিটল দেহ গড়নের অধিকারী ছিলেন। তার পোশাক রীতিও চমৎকার। যে কোনো জাঁকজমক অনুষ্ঠানে নিজেকে আকর্ষণীয় উপস্থাপনে তার জুড়ি নেই। স্যুট-স্কার্টে দেখলে মনেই হবে না তিনি কোনো পর্দানশীন মুসলিম দেশের রাজকুমারী। তার পোশাক রীতিতে কোনো প্রকার জড়তা না থাকাটাই যেন দৃঢ় ব্যক্তিত্বের প্রকাশ করে। সুনাম, গুরুত্ব ও ক্ষমতার অধিকারী এই রাজকীয় ব্যক্তিত্ব সব সময় নিজেকে একটি উচ্চ মার্গীয় স্থানে রাখতে সক্ষম হন। তিনি আরব নারীদের জন্য বিশেষভাবে অনুকরণীয়। যে কোনো পরিস্থিতি তিনি খুব কৌশলী ব্যবস্থাপনায় মোকাবিলা করতে সক্ষম। চেহারার পাশাপাশি তার ব্যক্তিত্বের নৈপুণ্যতাও মানুষকে মুগ্ধ করে। ২০০৪ সালের ১০ এপ্রিল রাজকুমারী হায়া দুবাইয়ের শাসক শেখ মুহাম্মদ বিন রাশিদ আল মাকতাউমের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

 

লেতিজিয়া

প্রিন্সেস অব অস্ট্রিয়া

অস্ট্রিয়ার প্রিন্স ও স্পেনের রাজা ফেলিপের সঙ্গে ২০০৪ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে স্পেনের রানী হন লেতিজিয়া ওরটিজ রোকাসোলানো। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯৭২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর। জেসাস জোসে ওরটিজ আলভারেজ ও মারিয়া পালোমা রোকাসোলানো রদ্রিগেজ দম্পতির মেয়ে তিনি। লেতিজিয়া মাদ্রিদের কমপ্লুুটেন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় ব্যাচেলর ও লাইসেন্টিয়েট ডিগ্রি অর্জন করেন। লেতিজিয়ার ঢেউ খেলানো চুলের জাদুতে মোহিত হন অনেকেই। পোশাক রীতিতে তিনি যথেষ্ট সচেতন। জানা গেছে, কসমেটিকস ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তিনি যথেষ্ট রুচির পরিচয় দিয়ে থাকেন। তাকে কখনই ভারী মেকআপে দেখা যায় না। নো মেকআপ লুকেই তিনি অনন্য। দেশটিতে ফ্যাশনের কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। তাই তাকেও বিশেষ কোনো পোশাকে সব সময় দেখা যায় না। তবে বেশির ভাগ সময় তাকে খুব ছিমছাম লুকেই হাজির হতে দেখা যায়। এক নজরে তার রূপের বিশেষ কোনো বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করতে পারবেন না। তবে তার রূপের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যায় হয়তো আপনাকে একাধিকবার ভাবতে হবে। এটিই তার রূপের গোপন রহস্য। পেশাজীবনে তিনি ছিলেন সাংবাদিক। ১৯৯৮ সালে তিনি আলোন্স গুরেরো পেরেজের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু ১৯৯৯ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। প্রথম বিবাহবিচ্ছেদের পরেই তিনি স্পেনের রানী হন।

 

রাজকুমারী ম্যাডেলিন

সুইডেনের রূপ

রাজকুমারী ম্যাডেলিন থেরেজ অ্যামেলি জোসেফাইন। সুন্দরী, বুদ্ধিমতী ও গুণী একজন নারী। তিনি একাধারে যথেষ্ট ফ্যাশনেবল, দয়ালু, চমৎকার ব্যক্তিত্ব ধারণকারী ও অবনত আচরণের অধিকারী। ম্যাডেলিনের ভিতরকার এই সৌন্দর্যই যেন তার মার্জিত চেহারায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সুঠাম দেহী এই রাজকুমারী পোশাক ও সাজগোজের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। অনেকের কাছেই তার স্টাইল-শৈলী অনুকরণীয় ও অনুপ্রেরণীয়। ২০১১ সালে সিবিএস টিভি ঘোষণা দেয়, সে বছরে বিশ্বের সবচেয়ে চমৎকার রাজরানী হিসেবে পরিগণিত হয়েছেন ম্যাডেলিন থেরেজ অ্যামেলি জোসেফাইন। সুইডেনের রাজা কার্ল গুস্তাফ ও রানী সিলভিয়ার মেয়ে তিনি। ১৯৮২ সালের ১০ জুন ম্যাডেলিন জন্মগ্রহণ করেন। রাজকুমারী ম্যাডেলিন স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্ট হিস্টোরি নিয়ে পড়াশোনা করেন। এরপর ব্যাচেলর অব আর্টস ডিগ্রি অর্জন করেন ২০০৬ সালে। ২০০৭ সালে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছোটদের সাইকোলজি নিয়ে পড়াশোনা করেন। ২০০৯ সালের ১১ আগস্ট রাজকুমারী তার ছেলেবন্ধু জনাস বার্গস্টোমের সঙ্গে বাগদান করেন। কিন্তু কিছুদিন পর যে কোনো কারণে তাদের মধ্যকার সম্পর্কটি ভেঙে যায়। তারপর ২০১২ সালের ২৫ অক্টোবর রাজকুমার ক্রিস্টোফার ও-নেইলের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর