বৃহস্পতিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিশ্বজুড়ে আইকনিক সিটি

আবদুল কাদের

বিশ্বজুড়ে আইকনিক সিটি

একটি শহরের কাঠামো- সড়ক, ভবন, নদী, উপত্যকা মিলিয়ে গড়ে ওঠে আইকনিক সিটি। কোলাহলপূর্ণ থেকে শান্ত প্রকৃতি সবই আছে এই তালিকায়। তবে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে স্থানীয় সংস্কৃতি।  তাই তো শত বছর ধরে সংস্কৃতির সঙ্গে পথ হেঁটেই বিশ্বের সেরা শহরগুলো সগর্বে দাঁড়িয়ে আছে পৃথিবীর বুকে

 

নিউইয়র্ক সিটি পৃথিবীর রাজধানী শহর!

আধুনিক সভ্যতার শহর নিউইয়র্ক; যা আমেরিকার প্রধান বাণিজ্যিক, আর্থিক এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোর মধ্যে অন্যতম। বাহারি রং আর নানা আলোকসজ্জায়  উচ্ছল থাকে আমেরিকার এই শহর

পৃথিবীব্যাপী হইচই যে শহরকে নিয়ে তা হলো নিউইয়র্ক। একে বলা হয় পৃথিবীর রাজধানী। বিশাল এই শহর কখনো ঘুমায় না। তাই তো নিউইয়র্ক শহরকে বলা হয় ‘দ্য সিটি নেভার স্লিপস’। আধুনিক সভ্যতার হইচই আর রঙের আলোয় নিউইয়র্ক থাকে উচ্ছল। বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত নগরী। বিশ্ব বিনোদন-শিল্পের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। শীত, গ্রীষ্ম যে কোনো আবহাওয়ায় আমার সবচেয়ে প্রিয় স্থান এটি।

১৫২৪ সালে গোড়াপত্তন হওয়া নিউইয়র্কের। ১৭৯০ সাল পর্যন্ত ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী। প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের অভিষেক হয়েছিল নিউইয়র্কের ওয়াল স্ট্রিটের ফেডারেল ভবনে। ২০০১ সালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার পর আবারও করোনাভাইরাসের কারণে চরমভাবে আক্রান্ত হলো ৫০০ বছরের পুরনো এই ঐতিহাসিক শহর।

সাংস্কৃতিক ও সামাজিক গুরুত্বের মতোই নিউইয়র্ক অর্থনৈতিক দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে সম্পদশালী মহানগরী। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বহু প্রতিষ্ঠান ও জাতিসংঘের সদর দফতর এখানেই। মার্কিন জাতির আইকন যেন নিউইয়র্ক। নিউইয়র্কের ওয়াল স্ট্রিট বললেই ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্রডওয়ে বললেই মঞ্চনাটক, ফিফথ এভিনিউ বললেই মার্কেটিং, ম্যাডিসন এভিনিউ বললেই মিডিয়া-বিজ্ঞাপন, গ্রিনিচ ভিলেজ বললেই বোহেমীয় জীবনচিত্র, সেভেনথ এভিনিউ বললেই ফ্যাশন-পোশাক শিল্প, ট্যামানি হল বললেই কূটনীতি-রাজনীতি, হারলেম বললেই জ্যাজ সংগীতের আদিযুগ ও আফ্রিকান-আমেরিকান জীবনের বহুমাত্রিক প্রতিচ্ছবি ভেসে ওঠে।

বিশ্বের চারটি দিক থেকে আগত অভিবাসীদের স্বাগত জানিয়েছে ‘সিটি অব ইমিগ্রেন্টস’ নিউইয়র্ক, যেখানে সাম্য, মৈত্রী, স্বাধীনতার ফরাসি সৌরভ নিয়ে দন্ডায়মান ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টি’। লোয়ার ম্যানহাটনে আকাশচুম্বী অট্টালিকার মিছিলে আর্ট ডেকো ধাঁচের এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং, স্কাইসলার বিল্ডিং ইত্যাদি গগনবিস্তারী অট্টালিকাগুচ্ছের নিউইয়র্ক শহরকে ঐশ্বর্য ও খ্যাতির আইকনে পরিণত করেছে। নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের অট্টালিকাদ্বয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমৃদ্ধির মুকুটে সোনার পালকের মতো উজ্জ্বল। আর ম্যানহাটনের টাইম স্কয়্যারের আশপাশে আছে থিয়েটার, ব্রডওয়ে শো, দুর্দান্ত সব খাবারের গাড়ি, স্যুভেনির শপ ও ভোজনশালা।

 

ভালোবাসার শহর প্যারিস

শিল্প-সাহিত্য ও ঐতিহ্যের নগরী প্যারিস। জনসংখ্যা ২২ লাখের কিছু বেশি। যে শহরের নাম শুনলেই মনের গহিন কোণে ভেসে ওঠে নানান ছবি। প্যারিস বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষের অবকাশ, ব্যস্ততা, উদযাপন এবং মধুচন্দ্রিমার মতো অসংখ্য স্মরণীয় মুহূর্তের সাক্ষী। সেইন নদীর তীরে ইলে-ডি-ফ্রান্স অঞ্চলের কেন্দ্রে অবস্থিত প্যারিস। তবে অতীতে এই শহরটির নাম ছিল প্যারিসি। সেইন নদীর তীরে বসবাসকারী সেল্টিক যুগের মানুষদের এখানে আনা হয়। আজ শহরটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, বৃহত্তম শহর হিসেবে বিখ্যাত। এখানকার মানুষ তাদের ঐতিহ্যের মতোই সমৃদ্ধ। প্যারিস হচ্ছে বিশ্বের ফ্যাশন জগতের রাজধানী এবং কেনাকাটার জন্য সুবিখ্যাত। আলোর শহর প্যারিস। সন্ধ্যা হওয়ার পর অন্ধকার প্যারিস যখন আলোকিত উঠে তখন প্যারিসের সৌন্দর্যে অভিভূত না হয়ে থাকা যায় না। ভ্রমণবিলাসী মানুষের প্রথম পছন্দ এই ঐতিহ্যবাহী নগরী। সম্প্রতি এক জরিপে জানা গেছে, বছরে প্রায় ৮২ দশমিক ৬ মিলিয়ন পর্যটক পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ দেশে বেড়াতে আসেন। ইউনেসকোর দ্বারা নির্বাচিত প্রায় ৪১টি জায়গা ফ্রান্সে অবস্থিত। জাদুঘরের শহর প্যারিস। প্যারিসের ল্যুভর আর্ট মিউজিয়ামটি পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় জাদুঘর। এর পাশাপাশি আইফেল টাওয়ার, নটর ডেম ক্যাথিড্রাল এবং আর্ক ডি ট্রায়ম্ফ, মিউজ ডি’ অরসে হলো প্যারিসের বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান। প্রায় ৪০০ ধরনের বিভিন্ন খাবার ও পানীয় ফ্রান্সে দেখা যায়। বিখ্যাত পানীয় শেমপেন তৈরি হয় এই দেশে। সিনেমা জগতের সবচেয়ে বড় উৎসব কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালও অনুষ্ঠিত হয় ফ্রান্সের বিখ্যাত কান নগরীতে। যেখানে ছুটে আসেন লাখ লাখ মানুষ।

 

ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মূল কেন্দ্র লন্ডন

পৃথিবীর বৈচিত্র্যময় ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডন। এ শহরে পুরনো অভিজাত স্থাপনা যেমন নজর কাড়ে, তেমনি চোখ ধাঁধিয়ে দেয় আধুনিকতাও। এই শহরে সবার জন্যই কিছু না কিছু আছে। ইতিহাসপ্রেমী কিংবা স্থাপত্যপ্রেমীরা প্রায়ই ঐতিহ্যের এই নগরীতে বেড়াতে আসেন। পার্লামেন্ট হাউস, ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে, বিগ বেন, বাকিংহাম প্যালেস এবং ওয়েস্ট এন্ডের মতো দর্শনীয় স্থানগুলোর কদর রয়েছে পৃথিবীর সব ভ্রমণপ্রিয় মানুষের কাছে। এই শহরে বিশ্বের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষের বাস। মোট জনসংখ্যা ৮০ লাখেরও বেশি। তাই স্বাভাবিকভাবে এখানে আছে বৈচিত্র্যময় খাবারের বিশাল সমাহার। রাতের লন্ডন ভিন্ন এক সৌন্দর্যের ডালি সাজিয়ে হাজির হয়। আলোর ঝলকানি আর বিবিধ আয়োজন এর রূপ যেন পাল্টে দেয়। এই বৈচিত্র্যময় শহরজুড়ে আরও অনেক আইকনিক সাইট রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে লন্ডনের শীর্ষস্থানীয় আকর্ষণ থিয়েটার, টেমস নদীর ভ্রমণ, অসংখ্য প্রদর্শনী এবং আরও অনেক কিছু। ব্রিটিশ রাজার রাজবাড়িগুলোও এই শহরের অন্যতম আকর্ষণ।

 

মনোমুগ্ধকর ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিও

রিও ডি জেনেরিও; ব্রাজিলের বিশাল সমুদ্রতীরবর্তী শহর। যা দেশটির সবচেয়ে আইকনিক শহর হিসেবে পরিচিত। এটি তার অত্যাশ্চর্য সৈকত এবং প্রাণবন্ত কার্নিভাল পরিবেশের জন্য বিখ্যাত। সমুদ্র উপকূলীয় শহরটি ব্রাজিলের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। বিশ্বব্যাপী এটি রিও নামেই বেশি পরিচিত। কারণ, কর্কুভাদু পর্বতের ওপরে অবস্থিত ৩৮ মিটার উচ্চতার ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার (ত্রাণকর্তা যিশুখ্রিস্ট)। আছে কোপাকাবানা, ইপানেমা সৈকত এবং গ্রানাইট শিলাময় পাঁউ দি আসুকার পর্বতও। এখানকার মোট জনসংখ্যা ৬০ লাখের কিছু বেশি। ঐতিহ্যের মতো সংস্কৃতিতেও অনেক সমৃদ্ধ রিও ডি জেনেরিও। এখানকার প্যারেড ফ্লোট, জমকালো পোশাক এবং সম্মিলিত সাম্বা নৃত্য গোটা বিশ্বের মানুষের নজর কাড়ে। এটি দেশটির মানুষের ঐতিহাসিক উৎসব। এই কার্নিভাল উৎসবকে আবার বিশ্বের বৃহত্তম কার্নিভাল বলে মানা হয়। শহরটির মূল আকর্ষণ হলো- ইপানেমা সমুদ্রসৈকত, চমৎকার পাহাড়, মারাকানা স্টেডিয়াম, সুগারলোফ মাউন্টেন এবং আইকনিক ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার।

 

আরও যত শহর

কোপেনহেগেন, ডেনমার্ক

আইকনিক শহরের তালিকায় রয়েছে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনও। বিশাল জনসংখ্যা নিয়ে উত্তর ইউরোপের সবচেয়ে ধনী শহর এটি। শহরটি ওরেসুন্ড ব্রিজ দ্বারা দক্ষিণ সুইডেনের মালমোর সঙ্গে সংযুক্ত। বাই সাইকেল চালাতে যারা পছন্দ করেন তাদের কাছে এই শহরের চেয়ে প্রিয় আর কিছু হতেই পারে না।  পায়ে হাঁটা এবং সাইক্লিং-এর জন্য আলাদা সুনাম রয়েছে কোপেনহেগেনের। অন্য ভাষায়, কোপেনহেগেন হচ্ছে বিশের অন্যতম পরিবেশবান্ধব শহর। সপ্তাহে ৩৭ ঘণ্টা কাজের সঙ্গে পর্যাপ্ত অবসর, এক বছরের মাতৃত্বকালীন ছুটি- চমৎকার এ নীতির জন্য সমগ্র বিশ্বের সুনাম কুড়িয়েছে শহরটি। আছে ইন্দ্রে বাই এবং ফ্রেডেরিকস্টাডেন। এটি হলো- ১৮ শতকের রোকোকো জেলা, যেখানে রাজপরিবারের আমালিয়েনবার্গ প্রাসাদ রয়েছে। কাছাকাছি ক্রিশ্চিয়ানসবার্গ প্রাসাদ এবং রেনেসাঁ-যুগের রোজেনবার্গ ক্যাসেল রয়েছে, যার চারপাশে বাগান ও আকর্ষণীয় মুকুট রত্ন রয়েছে।

টোকিও, জাপান

যে কোনো আগ্রহী ভ্রমণকারীকে জিজ্ঞাসা করুন, জীবদ্দশায় কোন শহরটি দেখতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করবেন। এক কথায় উত্তর আসবে জাপানের টোকিও। অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত সমৃদ্ধিশালী বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত শহর এটি। এখানকার জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ।  ২০১৮ সালের সবচেয়ে জনাকীর্ণ মেট্রোপলিটন টোকিও। প্রযুক্তির মুনশিয়ানায় গোটা বিশ্বকে মাতিয়ে রেখেছে শহরটি। ট্রান্সপোর্ট থেকে শুরু করে কনভেনিয়েন্স স্টোর সব কিছুতেই শহরটি তার প্রতিটি নাগরিককে দিয়েছে জীবনযাপনের সব সুযোগ-সুবিধা। মজার বিষয় হলো, অন্যান্য দেশের মতো বর্জ্যের ভাগাড় পর্যন্ত নেই এখানে। কারণ তারা সব রকম বর্জ্য বিশেষ পদ্ধতিতে রিসাইকেল করে। টোকিওকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ শহর। এই শহরে দুই পা এগোলেই দেখা মিলবে প্রকৃতির। বসন্তকালে সাকুরার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য থেকে শুরু করে আধুনিক স্থাপত্য, ঐতিহ্যবাহী  খাবার ও চোখ ধাঁধানো ফ্যাশন শো সার্বক্ষণিক আকর্ষণ।

সিঙ্গাপুর সিটি, সিঙ্গাপুর

মাত্র ৪০ থেকে ৫০ বছরের ব্যবধানে উন্নত দেশে পরিণত হয়ে সিঙ্গাপুর চমক সৃষ্টি করেছে। ফোর্বস-এর মতে, বিশ্বের শীর্ষ  পাঁচটি প্রভাবশালী শহরের মধ্যে একটি হলো পরিকল্পিত শহর সিঙ্গাপুর।  এখানকার জনসংখ্যা মাত্র ৬ লাখের কিছু বেশি। ট্রান্সপোর্ট, স্বাস্থ্যসুবিধা, বিনোদন, আর সব কিছুর সহজলভ্যতার কারণে এশিয়ার বাকি শহরগুলো থেকে অনেকটাই আলাদা সিঙ্গাপুর। এই শহরে ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি অত্যাশ্চর্য মিল রয়েছে। কারণ এখানে আকাশচুম্বী দালানের পাশাপাশি পুরনো ভবনও রয়েছে। এই শহরের অলিগলিতে থাকা শিল্প, সংস্কৃতি আর আধুনিকতা মানুষের মাঝে এনেছে বৈচিত্র্য।

বার্সেলোনা, স্পেন

দৃষ্টিনন্দন সৈকত, বিশাল ভবন এবং নৌকা; এটাই বার্সেলোনা। আলো ঝলমলে এই শহরটি গোটা ইউরোপের সবচেয়ে বড় পর্যটন নগরী। অত্যাশ্চর্য ভূমধ্যসাগরীয় সৈকত থেকে শুরু করে আন্তোনি গাউদির স্থাপত্যের বিস্ময় এবং ইয়ট সংস্কৃতি; গোটা শহর যেন সমুদ্রের ধারে বাস করে। পাশাপাশি শিল্প, ইতিহাস বার্সেলোনাকে করেছে সমৃদ্ধ। জনসংখ্যার বিচারে এটি স্পেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। এটি দেশটির শিল্প ও বাণিজ্যের প্রধানতম কেন্দ্র। এ ছাড়া এটি স্পেনের সংস্কৃতি ও শিক্ষাব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। মূল বার্সেলোনা শহরের জনসংখ্যা ১৬ লাখ। আধুনিক নগরী হিসেবে বার্সেলোনা গড়ে ওঠে বিংশ শতাব্দীর শুরুতেই। এই সময়ে বিখ্যাত স্থপতি আন্তোনি গৌডি তৈরি করেন কাসা মিলি, কাসা বাট্টেলা এবং সাগ্রাডা ফ্যামেলিয়া গির্জার মতো বিশ্ববিখ্যাত নকশাগুলো। যদিও পরবর্তীতে গৃহযুদ্ধে বিপাকে পড়া বার্সেলোনা ১৯৭৮ সালে পুনরুদ্ধার করে গণতন্ত্র, ফিরে পায় অর্থনৈতিক শক্তি আর কাতালান ভাষা।

আমস্টারডাম, নেদারল্যান্ডস

শিল্পের শহর আমস্টারডাম। শহরটি তার নৈশজীবন এবং উৎসব কার্যকলাপের জন্য সুপরিচিত। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি যেমন- মেলকইগ, প্যারাডিসো বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত নাইটক্লাবগুলোর অন্যতম। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বহুজাতিক শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম, যেখানে কমপক্ষে ১৭৭টি জাতির মানুষের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। এখানকার মোট জন্যসংখ্যা ৮ লাখের কিছু বেশি। শহরটির বুক চিরে এঁকেবেঁকে চলা খাল (লক), বাইক, হিগলেডি-পিগলডি টাউনহাউস আর কোথাও নেই। আমস্টারডামে অনেক জাদুঘর রয়েছে। এর মধ্যে রাজকীয় রিকস মিউজিয়াম, ভ্যানগগ মিউজিয়াম, আনা ফ্রাঙ্ক মিউজিয়াম, মাদাম তুশোর আমস্টারডাম শাখা, হার্মিটেজ এবং আমস্টারডাম মিউজিয়াম বেশি বিখ্যাত। সেন্ট্রাল আমস্টারডামের বাড়িগুলোও দেখার মতো। ক্যানেলের তীরে রং করা সারি সারি বাড়ি মনে হালকা দোলা দেয়।

ইস্তাম্বুল, তুরস্ক

ইস্তাম্বুল তুরস্কের প্রাণকেন্দ্র। এটি দেশটির রাজধানী শহর না হলেও আগে এটি রোমান সাম্রাজ্য, বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য, ল্যাটিন সাম্রাজ্য এবং অটোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল। সেই সমৃদ্ধ সংস্কৃতি আজও বহন করে চলেছে এই শহর। তুরস্কই একমাত্র দেশ যা পৃথিবীর দুই মহাদেশে অবস্থিত। এখানে প্রায় দেড় কোটি মানুষের বসবাস। এই শহরের প্রতিটি দিক চেহারা এবং স্থাপত্যে অনন্য। দ্য ইস্তাম্বুলের ইউরোপীয় দিকটি আরও মহাজাগতিক এবং শহরটির কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয় বাণিজ্য ও শিল্পের কেন্দ্র। এটি দেশটির সবচেয়ে বিখ্যাত স্মৃতিস্তম্ভগুলোর আবাসস্থল। তোপকাপি প্রাসাদ, হাজিয়া সোফিয়া এবং নীল মসজিদ। শতবর্ষী অসংখ্য প্রাসাদ এই শহরের অন্যতম আকর্ষণ। দ্য এশিয়ান দিকটি ইস্তাম্বুলের পুরনো দিক যদিও অধিকাংশ ঐতিহাসিক ভবন ইউরোপীয় দিকে অবস্থিত। এশিয়ান দিকটি অন্য দিকের তুলনায় কম নগরায়ণ হওয়ায় আরও সবুজ দেখাবে। বসফরাস প্রণালির তিনটি ঝুলন্ত সেতুর মধ্যে একটি বসফরাস সেতু, যা দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপে অবস্থিত। আয়তনে ছোট হলেও এটি তুরস্কের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

সর্বশেষ খবর