রবিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
সিলেট

পাঠক বাড়াতে নানা আয়োজন

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

পাঠক বাড়াতে নানা আয়োজন

শনিবার সকাল ১১টা। বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে নগরীর বেশির ভাগ পাড়া-মহল্লার রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। পানি ঢুকেছে অনেকের বাসা-বাড়িতে। বৈরী আবহাওয়ার মাঝে সিলেট বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের দ্বিতীয় তলায় ঢুকতেই দেখা গেল কিছু মনোযোগী পাঠকের। কেউ পড়ছেন দৈনিক পত্রিকা, কেউ বই। তৃতীয় তলার পাঠকক্ষেও বেশ কয়েকজন মগ্নপাঠক। বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। বিভিন্ন রেফারেন্স বই ঘাঁটছেন। কাগজে নোট লিখছেন। গণগ্রন্থাগারের উপপরিচালক দিলীপ কুমার সাহা জানালেন, খারাপ আবহাওয়ার কারণে আজ পাঠক কম। না হলে গ্রন্থাগারের তিনটি পাঠকক্ষই মুখর থাকে পাঠকে। বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারটি নগরীর পূর্ব রিকাবিবাজারে। ২০০৫ সালে গ্রন্থাগারটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় পাঠকদের জন্য।

গ্রন্থাগারে সাধারণ পাঠকক্ষে ৮২টি, বিজ্ঞান ও রেফারেন্স পাঠকক্ষে ১৩০ ও শিশু-কিশোর পাঠকক্ষে ৫০টি আসন রয়েছে। নীরবে জ্ঞান প্রদীপ জ্বেলে যাওয়া বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারে রয়েছে জনবল সংকট। ২৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে আছেন মাত্র নয়জন। সীমিত জনবল দিয়েও চলছে পাঠক সৃষ্টির চেষ্টা। পাঠস্পৃহা তৈরির লক্ষ্যে গ্রন্থাগারটি বছরজুড়ে আয়োজন করে নানা প্রতিযোগিতার।

শনিবার (৭ অক্টোবর) বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারে গিয়ে দেখা যায়, নিচতলায় চলছে ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ বিষয়ক বিশেষ লার্নিং সেশন। মনোযোগী শ্রোতারা শুনছেন মুক্তিযুদ্ধের গল্প। গল্প শোনাচ্ছেন সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল। তিনি বলেন, ‘ইতিহাস পড়ে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানা আর মুক্তিযোদ্ধাদের মুখ থেকে যুদ্ধদিনের গল্প শোনার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। বিভাগীয় গণগ্রন্থাগার যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটি প্রশংসনীয়। এতে আমাদের সন্তানরা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জানার সুযোগ পেয়েছে।’ গণগ্রন্থাগারের উপপরিচালক দিলীপ কুমার সাহা জানান, প্রতি মাসে বিষয়ভিত্তিক লার্নিং সেশনের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া বছরজুড়ে বিভিন্ন বিশেষ দিবসে আয়োজন করা হয় অনুষ্ঠানমালার। শিশু-কিশোরদের মাঝে পাঠস্পৃহা জাগাতে গণগ্রন্থাগারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় রচনা, কবিতা-ছড়া আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন ও কুইজসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারে রয়েছে ৯১ হাজার বই। এর মধ্যে অনেক দুর্লভ বই রয়েছে। পাঠকদের জন্য রাখা হয় ২৬টি দৈনিক ও সাময়িকী। ২৮ বছরে গ্রন্থাগারের আর্কাইভও বেশ সমৃদ্ধ হয়েছে। উপপরিচালক জানান, পাঠক তৈরির জন্য গণগ্রন্থাগার কাজ করছে। প্রযুক্তির এ সময়ে প্রতিদিন শতাধিক পাঠক গ্রন্থাগারে আসেন বইয়ের নেশায়। যা মোটেও কম নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর