রবিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
রাজশাহী

ফাঁকা পড়ে থাকে লাইব্রেরির চেয়ার

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

ফাঁকা পড়ে থাকে লাইব্রেরির চেয়ার

বিকাল হলেই লাইব্রেরির জায়গা ফাঁকা থাকত না। সকালেও বসত জমজমাট আড্ডা। নতুন কোনো বই এলে থাকত পাঠকদের আগ্রহ। কোন বইটি এখনো পড়া হয়নি এ নিয়ে চলত আলোচনা। কিন্তু এখন উল্টো চিত্র। নতুন বই আসছে, পাঠক নেই। আগে যারা নিয়ম করে আসতেন তারাও একরকম ছুটি নিয়েছেন। রঙিন মলাটের সাদা কাগজে কালো হরফ এখনো পাঠক টানে। তবে সেই টানে আর লাইব্রেরিগুলোতে ছুটে আসছেন না পাঠক। লাইব্রেরির তাকগুলোতে নতুন বইয়ের সারি দীর্ঘ হচ্ছে, ফাঁকা পড়ে থাকছে পাঠকের চেয়ারগুলো। উনিশ শতকের শুরুর দিকে জমিদারদের হাত ধরে রাজশাহীতে লাইব্রেরির যাত্রা শুরু। প্রযুক্তির দাপটে পাঠক টানতে পারছে না লাইব্রেরিগুলো। রাজশাহীর বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারে এখন আর পাঠক যান না। বিশালায়তনের এ পাঠাগারে বহু মূল্যবান ও দুর্লভ বই থাকলেও গ্রন্থাগারের রিডিং রুমে গিয়ে দেখা যায় বেশির ভাগ চেয়ারই ফাঁকা পড়ে আছে। চেয়ার-টেবিলের জমে থাকা ধুলোর পরতই বলে দিচ্ছে এখানে অনেক দিন কেউ বসে না। কিছু পাঠকের আনাগোনা শুধু দৈনিক সংবাদপত্র পড়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বইয়ের দিকে আগ্রহ নেই। ১৯৮৩ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিপরীতে প্রতিষ্ঠা পায় রাজশাহী সরকারি বিভাগীয় গ্রন্থাগার। এ গ্রন্থাগারের আদি নাম ছিল ‘রাজশাহী সাধারণ পুস্তকালয়’। ১৯৭৫ সালে নতুন নামকরণ হয়। সপ্তাহের শনি-বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

গ্রন্থাগারের ৫০ ভাগ বই দুষ্পাপ্য। এখানে প্রায় ২০০ বছরের পুরনো বইও আছে। স্কটল্যান্ড থেকে প্রকাশিত শেকসপিয়র গ্রন্থাবলি প্রথম সংস্করণ, মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘একেই বলে সভ্যতা’ প্রথম সংস্করণ, ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ প্রথম সংস্করণ, ব্রিটিশ আমলের পত্রিকা ভারতবর্ষ, শনিবারের চিঠি, বসুমতী, ক্যালকাটা রিভিউসহ বিভিন্ন পত্রিকা ও দুষ্প্রাপ্য বই আছে। গ্রন্থাগারের সহকারী পরিচালক মাসুদ রানা বলেন, বর্তমানে এখানে বই আছে ৭৮ হাজার ৯৬৮টি। সকাল এবং বিকালের দিকে পাঠক কম থাকে। তবে দুপুরের সময় পাঠক ঠিকই থাকে। এরপরও পাঠকের সংখ্যা বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর