বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিশ্বজুড়ে দ্বীপরাষ্ট্র

আবদুল কাদের

বিশ্বজুড়ে দ্বীপরাষ্ট্র

আমাদের সবার জানা আছে, পৃথিবীর ৭১ শতাংশ জলে আচ্ছাদিত এবং মহাসাগরগুলো বিশ্বের প্রায় ৯৫ শতাংশ জল ধারণ করে আছে। সমগ্র বিশ্বের এই বিশাল সমুদ্রের মধ্যে হাজার হাজার ছোট, বড় ও মাঝারি দ্বীপ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। এদের মধ্যে কোথাও রয়েছে জনবসতি, কতকগুলো এখনো বিচ্ছিন্ন এবং অনেক দ্বীপপুঞ্জ এখনো মানুষের কাছে অজানা। তেমনি কিছু দ্বীপরাষ্ট্রের খবরাখবর নিয়েই আজকের আয়োজন...

 

বৈচিত্র্যময় ইন্দোনেশিয়া

পৃথিবীর বড় দ্বীপরাষ্ট্র

এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের মাঝে অবস্থিত দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশ। এ ছাড়া বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যার দেশ ইন্দোনেশিয়া। প্রচলিত তিন শতাধিক ভাষায় সমৃদ্ধ এবং দেশটি জাতিগতভাবেও বেশ বৈচিত্র্যময়। গ্রামীণ শিকারি সম্প্রদায় থেকে অভিজাত শহর পর্যন্ত প্রায় সব ধরনের মানুষের বাস দেশটিতে। মজার ব্যাপার- ইন্দোনেশিয়ায় ১৭ হাজারের বেশি দ্বীপ রয়েছে। যার মধ্যে ১৬ হাজার ৫৬টি জাতিসংঘ দ্বারা স্বীকৃত। এর মধ্যে মাত্র ৬ হাজার মানুষের বসবাস। আয়তনে ইন্দোনেশিয়া প্রায় ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৬৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। সুমাত্রা বৈচিত্র্যময় দেশটির বৃহত্তম দ্বীপ এবং বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম দ্বীপ। তবে সারা বছরই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ঝুঁকিতে থাকে সুমাত্রা দ্বীপটি।

 

আকর্ষণীয় জাপান

সূর্যোদয়ের দ্বীপরাষ্ট্র

পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র জাপান। দেশটি যৌগিক আগ্নেয়গিরির দ্বীপমালা হিসেবে পরিচিত। জাপানকে প্রায়শই ‘উদীয়মান সূর্যের দেশ’ বলে অভিহিত করা হয়। এটি বিশ্বের অন্যতম আধুনিক শহুরে এবং জনবহুল রাষ্ট্র। বিশ্বের বৃহত্তম মহানগরীয় অর্থনীতির দেশ। অর্থাৎ জাপান বিশ্বের আকর্ষণীয় দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ দেশগুলোর একটি। চারটি প্রধান দ্বীপসহ দেশটিতে প্রায় ৬ হাজার ৮৫২টি দ্বীপ রয়েছে, যা ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৯১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। হোনশু জাপানের বৃহত্তম দ্বীপ। তবে দেশটির বৃহত্তম চারটি দ্বীপ মোট ভূখণ্ডের ৯৭% এলাকা নিয়ে গঠিত।

 

পূর্ব এশীয় দেশ : মালয়েশিয়া

২০ হাজার দ্বীপের রাষ্ট্র

প্রায় ২০ হাজারের বেশি দ্বীপ নিয়ে গঠিত মালয়েশিয়া, যা প্রায় ৩ লাখ ২৯ হাজার ৮৪৭ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। দক্ষিণ চীন সাগর একে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে, মালয়েশিয়া উপদ্বীপ এবং পূর্ব মালয়েশিয়া। দেশটির বোর্নিও দ্বীপটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দ্বীপ। জায়গাটি খুব সুন্দর সৈকত এবং উপকূলরেখায় ভরপুর। তবে দ্বীপটি বড় অংশ ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে, আর বাকি অংশ মালয়েশিয়ার সঙ্গে যুক্ত। ১৩টি রাজ্য এবং তিনটি ঐক্যবদ্ধ প্রদেশ নিয়ে গঠিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া। দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুর এবং পুত্রজায়া হলো ফেডারেল সরকারের রাজধানী।

 

হরেক নামের দ্বীপরাষ্ট্র

গ্রেট ব্রিটেন বা ইংল্যান্ড

যুক্তরাজ্য বিশ্বের নবম বৃহত্তম দ্বীপ এবং ইউরোপের বৃহত্তম দ্বীপ। প্রথমে ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ছাড়াও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড নিয়ে গঠিত ইংল্যান্ড কিংবা গ্রেট ব্রিটেন। দেশটির উত্তর দিকে রয়েছে স্কটল্যান্ড, পশ্চিমে ওয়েলস এবং উত্তর-পশ্চিমে একটু দূরেই নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড। রাজনৈতিকভাবে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ গ্রেট ব্রিটেন। বিশ্বের অনেক ভ্রমণপ্রিয় মানুষের কাছে দেশটি একটি স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত। ব্রিটেন বৃহত্তম দ্বীপ দেশগুলোর মধ্যে একটি; যেখানে ৮১ হাজার বর্গমাইল এলাকা নিয়ে রয়েছে বিশ্বের নবম বৃহত্তম একটি দ্বীপ। তবে দ্বীপগুলো আসলে বিভিন্ন জাতির মধ্যে বিভক্ত। যা ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলস দ্বারা ভাগ করা হয়েছে। জাতিসংঘের উদ্দেশ্যে এবং বিশ্ব ক্রীড়া সংস্থার জন্য এরা গ্রেট ব্রিটেন হিসেবে পরিচিত এক জাতি।

 

অদ্ভুত মাদাগাস্কার

দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ

মাদাগাস্কার একটি অবিশ্বাস্য বৈপরীত্যের দ্বীপ। আফ্রিকার মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ৪৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দ্বীপরাষ্ট্রটি। গ্রিনল্যান্ড, নিউ পাপুয়া গিনি আর বোর্নিওর পর এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দ্বীপ। ভারত মহাসাগরে একটি অত্যাশ্চর্য উপকূলরেখায় দেশটির অবস্থান- যেখানে সৈকতগুলো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় স্বর্গের প্রতীক। আয়তনে দেশটির আয়তন ৫ লাখ ৮৭ হাজার ২৯৫ বর্গকিলোমিটার। মোজাম্বিক চ্যানেল এই দ্বীপরাষ্ট্রকে আফ্রিকান মহাদেশ থেকে আলাদা করেছে। এখানে রয়েছে বনাঞ্চল, বিশাল নদী, মরুভূমি, খরখরে পাহাড় এবং নিষিদ্ধ মালভূমি। বিশ্বের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় ভূ-প্রকৃতি আর প্রাণীকূলের সন্ধান পাওয়া যায় এই দ্বীপে। মজার ব্যাপার হলো- এখানে যেসব প্রাণী বা উদ্ভিদের দেখা মেলে, তা পৃথিবীর অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। এই দ্বীপের প্রাণীগুলোর অধিকাংশই একটু আলাদা ধরনের। এ ছাড়াও দ্বীপটি বেশ কয়েকটি অনন্য প্রজাতি এবং বৈচিত্র্যময় বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল; যা পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যায় না।

 

পাপুয়া নিউগিনি

প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ

বেশ কয়েকটি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে গঠিত পাপুয়া নিউগিনি। এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ; যার আয়তন ৭ লাখ ৮৫ হাজার ৭৫৩ বর্গকিলোমিটার। এটি প্রশান্ত মহাসাগরের একটি দ্বীপরাষ্ট্র। ওশেনিয়া মহাদেশের মেলানেশিয়া অঞ্চলে অবস্থিত দেশটি। দ্বীপের উভয় পাশের উপকূলই ডাইভিংয়ের জন্য বেশ প্রসিদ্ধ। তাই তো বছরজুড়ে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকরা এখানে ভ্রমণে আসেন। মজার ব্যাপার হলো- ডাইভিং করার সময় এখানে রঙিন প্রবাল এবং মাছ পাওয়া যায়। পাপুয়া নিউগিনি বিশ্বের অন্যতম সবুজের দেশ হিসেবেও ব্যাপক জনপ্রিয়।

 

হাসিখুশির দেশ

অত্যাশ্চর্য দেশ ফিলিপাইন

ফিলিপাইন হলো একটি অত্যাশ্চর্য দ্বীপদেশ; যেখানে বিশ্বের মধ্যে বেশ কিছু বৈচিত্র্যময় সমুদ্রসৈকত রয়েছে। দেশটি ৭ হাজার ৬০০টিরও বেশি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। আর এখানকার দ্বীপগুলো মিন্দানাও, ভিসায়াস ও লুজন নামের তিনটি অঞ্চল হিসেবে বিভক্ত; যা ৩ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। এর মধ্যে প্রধান দ্বীপ লুজন প্রায় ৪২ হাজার ৫০০ বর্গমাইল (৬৮ হাজার ৩৯৭ কিলোমিটার) এবং বিশ্বের ১৫তম বৃহত্তম দ্বীপ। দেশটি কেবল বৃহত্তম দ্বীপরাষ্ট্রই নয়, বিশ্বের ১২তম জনবহুল দেশ হিসেবেও বেশ পরিচিত। একসময় দ্বীপরাষ্ট্রটি স্প্যানিশ উপনিবেশের অধীনে ছিল। এখন এটি শান্তিপ্রিয় রাষ্ট্র।

 

রোমাঞ্চকর নিউজিল্যান্ড

সুন্দর এক দীপরাষ্ট্র

নিউজিল্যান্ড ৭০০টিরও বেশি দ্বীপ নিয়ে গঠিত যা ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৮ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। এটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় একটি দ্বীপরাষ্ট্র। বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম দ্বীপরাষ্ট্র হিসেবেও পরিচিত নিউজিল্যান্ড। এর বৃহত্তম দুটি দ্বীপ হলো- নর্থ আইল্যান্ড এবং সাউথ আইল্যান্ড। দ্বিতীয় দ্বীপটি বিশ্বের ১২তম বৃহত্তম দ্বীপ, যার আয়তন ১ লাখ ৫০ হাজার ৪৩৭ বর্গকিলোমিটার। নিউজিল্যান্ড পর্যটকদের দৃষ্টিতে বিশ্বের অন্যতম শান্ত ও সুন্দর দেশ। দেশটি পাহাড়, হৃদ, বন, নদী এবং সৈকতের চমৎকার মিশেলে আবৃত। অপরূপ সুন্দর দেশটিতে হলিউডপাড়ার বৃহত্তম সেট রয়েছে।

 

ক্যারিবীয় বৃহত্তম দ্বীপরাষ্ট্র

অনেক দ্বীপের কিউবা

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে পশ্চিমের দ্বীপরাষ্ট্র হলো কিউবা। আশপাশের অনেক ছোট ছোট দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত কিউবা প্রজাতন্ত্র। দেশটি উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যস্থলে অবস্থিত। কিউবা সেই জায়গায় অবস্থান করছে যেখানে ক্যারিবিয়ান সাগর আটলান্টিক মহাসাগর এবং মেক্সিকো উপসাগরের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। দেশটি প্রায় ৪০ হাজার মাইল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। এটি খুবই শুষ্ক এক দ্বীপ যেখানে মানবসৃষ্ট ‘জাজা জলাধারা’টি পানির বৃহত্তম উৎস। হাভানা হলো দেশটির রাজধানী শহর এবং ভারাদেরো হলো দেশটির প্রধান শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম।

 

বিরল সৌন্দর্যের আইসল্যান্ড

ইইউর দ্বিতীয় দ্বীপরাষ্ট্র

উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের ছোট্ট এক দ্বীপরাষ্ট্র আইসল্যান্ড; যা প্রায় ১ লাখ ৩ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে বিস্তৃত। দেশটি ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপরাষ্ট্র এবং প্রায় ৩০টি ছোট ছোট দ্বীপের সঙ্গে প্রধান একটি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। এমনকি দেশটির মূল ভূখণ্ড বিশ্বের ১৮তম বৃহত্তম দ্বীপরাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেয়েছে। এটি এমন এক দেশ যেখানে একই সঙ্গে রয়েছে বরফের রাজ্য ও আগ্নেয়গিরি। ফলে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এবং বেহেমথ হিমবাহ সৃষ্টি করে অপরূপ জাদুকরী স্থানের; যার নাম নর্দার্ন লাইটস। এটি দেখতেই বছরব্যাপী পর্যটকরা ভিড় করেন।

 

বিস্ময়কর স্থান : গ্রিনল্যান্ড

বিশ্বের প্রথম বৃহত্তম দ্বীপ

গ্রিনল্যান্ড হলো বিস্ময়ের স্থান এবং আয়তনের দিক থেকে দেশটি বিশ্বের দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর অন্যতম। এটি বিশ্বের প্রথম বৃহত্তম দ্বীপ; যা আয়তনে ৮ লাখ ২৩ হাজার বর্গমাইল। দেশটি বছরের বেশির ভাগ সময় তুষারে আবৃত থাকে এবং এটি বরফের দেশ। দেশটি আটলান্টিক এবং আর্কটিক মহাসাগরের মধ্যে অবস্থিত। ফলে এখানে রাস্তা কম।

বছরের বেশির ভাগ সময় কুকুরের স্লেজ গাড়ি দিয়ে ঘোরাঘুরি এখানকার সর্বোত্তম উপায়। যদিও গ্রীষ্মকালে দ্বীপবাসী গাড়ি এবং কায়াকিংয়ের মাধ্যমে চলাফেরা করে থাকেন। শীতকালে এখানকার পরিবেশ ধবধবে সাদা আকৃতি ধারণ করে। তবে গ্রীষ্ম আসে অল্প সময়ের জন্য। সে সময় দ্বীপটিতে ফুল ফোটে। আশ্চর্যজনক ভাবে এই ঋতুতে সাদা বরফে সবুজের সমারোহের দেখা মেলে। একসময় গ্রিনল্যান্ডকে কেবল ভ্রমণপ্রিয় মানুষের আবাসস্থল বলে মনে করা হতো। তবে এখন দেশটি রোমাঞ্চকর পর্যটন এলাকায় পরিণত হয়েছে।

 

ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র

ভ্রমণপিপাসুদের প্রিয় শ্রীলঙ্কা

শ্রীলঙ্কা এক সময় ঝামেলাপূর্ণ জায়গা ছিল না। তবে ৩০ বছরের গৃহযুদ্ধ এবং ২০০৪ সালের সুনামির ধ্বংসযজ্ঞ এই উন্নয়নশীল দেশটির ওপর ভয়ানক চাপ সৃষ্টি করেছে। যদিও সৌভাগ্যক্রমে দেশটি সেই দুরবস্থা কাটিয়ে আজকের বিশ্বের অন্যতম সেরা পর্যটনরাষ্ট্রে নিজের জায়গা করে নিয়েছে। শ্রীলঙ্কা ভারত মহাসাগরের একটি দ্বীপরাষ্ট্র। দেশটির প্রধান দ্বীপটির আয়তন প্রায় ৬৫ হাজার ২৬৮ বর্গকিলোমিটার; যা আয়তনের দিক থেকে বিশ্বের ২৫তম বৃহত্তম দ্বীপ। মূল দ্বীপসহ অসংখ্য ছোট ছোট দ্বীপ একে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম দ্বীপরাষ্ট্রে পরিণত করেছে। তবে এসব দ্বীপ কিন্তু এখানে আগত পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু নয়। মূলত ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধমন্দির, চা এবং মসলার বাগানগুলোই প্রতিবছর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুদের টানে।

 

ক্যারিবীয় উন্নত দ্বীপরাষ্ট্র

ছোট-বড় দ্বীপের জ্যামাইকা

জ্যামাইকা ক্যারিবীয় সাগরে অবস্থিত আরেকটি দ্বীপরাষ্ট্র। কিউবা এবং হিস্পানিওলার পরে এটি ক্যারিবিয়ান সাগরের তৃতীয় বৃহত্তম দ্বীপ। এটি হাইতির প্রায় ১০০ মাইল পশ্চিমে, কিউবার ৯০ মাইল দক্ষিণে এবং উত্তর-পূর্বে ক্যারিবিয়ান উপকূলে কেপ গ্রাসিয়াসে অবস্থিত। দ্বীপটি মাত্র ৪ হাজার ৩০০ মাইল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এবং এটি অসংখ্য ছোট বড় দ্বীপ নিয়ে গঠিত। তালিকায় অনেক বড় দ্বীপরাষ্ট্র রয়েছে। তবে এদের মধ্যে কোনোটিই একমাত্র রাষ্ট্রীয় দ্বীপ নয়। অন্যদিকে জ্যামাইকা হলো পর্যটনের দিক থেকে ক্যারিবীয় অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে উন্নত দ্বীপ। বিলাসবহুল হোটেল, রিসোর্ট এবং সমুদ্রসৈকত এখানে আগত দর্শনার্থীদের প্রচুর আনন্দ দেয়। ফলে দ্বীপরাষ্ট্রটি বরাবরের মতোই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দ্বীপগুলোর মধ্যে সেরার অবস্থানটি ধরে রেখেছে।

 

কানাডার বিচিত্র দ্বীপ ব্যাফিন

বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম দ্বীপ

ব্যাফিন দ্বীপটি কানাডার বৃহত্তম দ্বীপ; যা উত্তর-পূর্ব কানাডার নুনাভুত প্রদেশের একটি দ্বীপ। এটি কানাডার বৃহত্তম দ্বীপ এবং বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম দ্বীপ। ব্যাফিন দ্বীপের দৈর্ঘ্য প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার এবং আয়তনে প্রায় ৫ লাখ ৭ হাজার ৪৫১ বর্গকিলোমিটার। দ্বীপটির জলবায়ু মেরুদেশীয়। এটি বৃক্ষহীন। এখানে অনেক সুপেয় পানির হ্রদ আছে। এ ছাড়া এর ভিতরে রয়েছে অসংখ্য বরফাচ্ছাদিত অঞ্চল। এমনকি এদের অনেকগুলো আবার জর্জিয়ান উপসাগরের পূর্ব তীরে একাই অবস্থান করছে। ব্যাফিন দ্বীপের আশপাশের জলজ জীবনও বিচিত্র। ব্যাফিন দ্বীপের খনিগুলোতে সিসা, দস্তা এবং রুপা পাওয়া যায়। দ্বীপটিতে জনবসতি খুবই কম। ১৬১৬ সালে ব্রিটিশ নাবিক উইলিয়াম ব্যাফিন দ্বীপটির দেখা পান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর