বুধবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

মিরপুর-ভেড়ামারায় অনেক হিসাব

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

মিরপুর-ভেড়ামারায় অনেক হিসাব

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলা নিয়ে গঠিত কুষ্টিয়া-২ আসনে। এই আসনের বর্তমান এমপি জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এই নির্বাচনী এলাকায় এলাকার বাসিন্দা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ও হাসানুল হক ইনু। এখানে জাসদ ও আওয়ামী লীগের মধ্যে চলমান প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ভোটের মাঠে অব্যাহত থাকলে হাসানুল হক ইনুকে অগ্নিপরীক্ষায় ফেলবে বলে মনে করছেন এখানকার মানুষ। অন্যদিকে বিএনপিতেও হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে। জানা যায়, জোটের স্বার্থে ২০০৮ সালের নির্বাচনে মাহবুব-উল আলম হানিফকে আসনটি ছেড়ে দিতে হয়। ওই নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে অংশ নিয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন হাসানুল হক ইনু। নির্বাচনে ১৪-দলীয় জোট ক্ষমতায় এলে হানিফকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী করা হয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এই আসন থেকে ইনু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। আর মাহবুব-উল আলম হানিফ জেতেন কুষ্টিয়া-(৩) সদর আসন থেকে।

একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ফের একাট্টা হয়ে ইনু বিরোধিতায় নেমেছে মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতারা। গত সপ্তাহে দুই উপজেলায় পৃথক পৃথক সভা করে এ আসনে দলের যে কাউকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। এ সভায় ইনু তথা জাসদের বিরুদ্ধে নানা কটূক্তিও করেন তারা। এ আসনে ইনুর বিপক্ষে কাজ করছেন মাহবুব-উল আলম হানিফের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিন। যা কাটানো সম্ভব ওই আসন সম্পর্কে সংশ্লিষ্টদের মতে হানিফকে কাজ করতে হবে ইনুর পক্ষে। মহাজোটের স্বার্থে এবারও মনোনয়ন পাবেন হাসানুল হক ইনু। জাতীয় নেতা হিসেবে সাধারণ মানুষ তাকে চান। আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতার বিরোধিতা সংকট তৈরি করলেও নেত্রী ডেকে বললে সব ঠিক হয়ে যাবে। সংকটের সমাধান করতে হবে দ্রুত। হাসানুল হক ইনু এর মাঝে ব্যাপক প্রচারণা শুরু করেছেন। তিনি কাজ করছেন ব্যাপকভাবে। মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিন বলেন, আগামী নির্বাচনে দলের হাইকমান্ডকে অনুরোধ করা হবে ইনুকে মনোনয়ন না দেওয়ার ব্যাপারে। পর পর দুবার এমপি নির্বাচিত হলেও মাঠ পর্যায়ে তার কোনো জনপ্রিয়তা নেই। এবার তাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে জয়লাভ করা কঠিন হয়ে পড়বে।

তার সঙ্গে ভিন্ন মত পোষণ করে জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসীন বলেন, বিএনপির ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হলে ১৪-দলীয় জোটগতভাবেই নির্বাচন করতে হবে। যারা প্রকৃত আওয়ামী লীগ করে তারা নৌকার প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করবে। ছোটখাটো কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন এই নেতা।

এদিকে নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপিতেও দলীয় কোন্দল দিন দিন তীব্র হচ্ছে। এ ছাড়া বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) একজন প্রেসিডিয়াম সদস্যও এ আসনে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। এই আসনে বিএনপি থেকে একাধিকবার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক শহীদুল ইসলামের সঙ্গে শরিক দল তথা জামায়াতের বিরোধ চলে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। এই সুযোগে এবার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী দলীয় মনোনয়ন পেতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন।

সর্বশেষ খবর