২৬ এপ্রিল, ২০২০ ১২:০০

দূরে যাওয়ার পাঁজরভাঙা আর্তনাদ


দূরে যাওয়ার পাঁজরভাঙা আর্তনাদ

উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা আর অনিশ্চয়তার আঁধারে যেন বিশ্বের আকাশ ক্রমশ অন্ধকার হয়ে আসছে। ক্রমে স্তব্ধ হয়ে পড়ছে বিশ্ব। এশিয়া, ইউরোপ আর আফ্রিকার সর্বত্রই আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে নিত্যদিন পার করছে প্রতিটি জনপদ। বিশ্বের পরাশক্তিগুলোও আজ পরাজিত হচ্ছে ভয়ানক এই ভাইরাসের কাছে। সারাজীবন মহান স্রষ্টাকে অস্বীকারকারী দাম্ভিক মানুষটিও আজ নীরবে সেই মহান স্রষ্টাকেই বিপদমুক্তির শেষ ভরসা জ্ঞান করে মিনতিভরে মুক্তি প্রার্থনা করছে। 

ভয়ানক এই ভাইরাসের নাম করোনা। যার পোশাকি নাম কোভিড-১৯। ভাইরাসের আরেকটি নাম হচ্ছে ২০১৯ এনসিওভি বা নোভেল করোনাভাইরাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা কোন প্রাণী থেকে ভাইরাসটির উৎপত্তি হয়। চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে। গত বছরের শেষের দিকে শুরু হয় এই ভাইরাসের প্রকোপ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই রোগটিকে বিশ্ব মহামারি ঘোষণা করেছেন। করোনাভাইরাস একটি সংক্রমণ ভাইরাস। যা আগে কখনও মানুষের মাঝে ছড়ায়নি। 

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের থাবায় মৃত্যুর মিছিলে শামিল হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। উন্নতির চরম উৎকর্ষের দাবিদার চিকিৎসাবিজ্ঞান মুখ থুবড়ে পড়েছে এই সংক্রামক ব্যাধির সামনে। শহরের পর শহরজুড়ে বিরাজ করছে এক ভূতুড়ে পরিবেশ। স্কুল, কলেজ, মাদরাসা সব কিছুতেই সুনসান ভৌতিক নীরবতা। কেউ কারো কাছে ঘেঁষতে সাহস পাচ্ছে না। এখন গুঞ্জরিত হচ্ছে দূরে যাওয়ার পাঁজরভাঙা আর্তনাদ। 

বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। ইতিমধ্যে ইতালিকে ছাপিয়ে সবচেয়ে বড় মৃত্যুপুরী হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। আমাদের দেশে প্রতিদিনই নতুন নতুন আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে। বাড়ছে মৃত্যুও। একইসঙ্গে বাড়ছে মানুষের মাঝে আতঙ্ক। এ অবস্থায় দেশের সব গণমাধ্যম, সাধারণ জনগণ, রাজনৈতিক শক্তি, প্রশাসনের সব পর্যায়ের কর্মীদের, বিশেষ করে স্বাস্থ্যকর্মীদের সাহসের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। 

এর আগে মানুষ লড়াই করেছে দৃশ্যমান কোন শত্রুর বিরুদ্ধে। আর এবারের লড়াই এক অদৃশ্য মরণব্যাধির বিরুদ্ধে। যাকে দেখা যায় না, কখন কোথায় কীভাবে এর দ্বারা মানুষ আক্রান্ত হবে বলা যায় না। একমাত্র পূর্ণাঙ্গ সচেতনতাই আমাদের এ বিপদ মোকাবিলার প্রধান অস্ত্র। তাই নিজে সচেতন হওয়ার মাধ্যমে অন্যদের সচেতন করতে হবে। আপনার সচেতনতাই পারে নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ রাখতে।

মো. মেহেদী হাসান অর্ণব
সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

সর্বশেষ খবর