শুক্রবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

কীর্তির চেয়ে মহৎ

শেখ মেহেদী হাসান

কীর্তির চেয়ে মহৎ

শিক্ষাবিদ-গবেষক-সাহিত্যিক-প্রাবন্ধিক লেখক অধ্যাপক যতীন সরকার বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা চিন্তক। সমাজের সামষ্টিক উন্নয়নের কথা ভেবে তিনি লিখেছেন বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বই। তার রচনা আমাদের নিয়ত পাঠ্য। সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- শেখ মেহেদী হাসান

আপনার জন্ম নেত্রকোনায় কেমন ছিল আপনার শৈশব-কৈশোর?

আমার জন্ম নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার চন্দপাড়া গ্রামে ১৮ আগস্ট ১৯৩৬ সালে। আমার ঠাকুরদার একমাত্র সন্তান আমার বাবা। আমার আর কোনো জেঠা, কাকা, পিসি কেউ ছিল না। আমার জন্মের আগে একটি বোনের জন্ম হয়েছিল এবং পাঁচ বছর বয়সে সে মারা যায়। এরপর ঠাকুরদা (পিতামহ) রামদয়াল সরকার বংশ লোপের আশঙ্কায় কাতর ও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। বংশের ধারা অব্যাহত রাখতে দেব-দেবীর শরণাপন্নও হন ঠাকুরমা। পীর-দরবেশের শিরনি মানতও বাদ গেল না। ধাত্রীর মুখে আমার ভূমিষ্ঠ হওয়ার সংবাদ পেয়ে ঠাকুরদা নাকি বলেছিলেন, ‘আজ থেকে আমার অশান্তি দূর হলো। এই নাতিই আমার মনে শান্তি নিয়ে এলো। তাই নাম রাখলাম শান্তি।’ ডাকনাম শান্তি হলে কী হবে, ঠাকুরদা-ঠাকুরমা, মা-বাবার মনে নিরবচ্ছিন্ন শান্তি জোগাতে পারিনি। জন্মের পর থেকেই আমার কঠিন সব পীড়া তাদের উদ্বিগ্ন রাখত। ফলে আমার প্রতি মাত্রাতিরিক্ত মনোযোগ দিতে বাধ্য হন। সেটাই আমাকে অকম্মা ও অপদার্থ বানিয়ে ফেলে। খেলাধুলা থেকে তো দূরে রাখতেনই, এমনকি গাঁয়ের অন্যদের মতো গাছে উঠতেও দিতেন না। খাল-বিলের দেশের মানুষ হয়েও ভালো করে সাঁতারটিও শিখতে পারিনি। কাজের মানুষ হওয়ার বদলে বড় হতে লাগলাম কেবল দেখার মানুষ, ভাবনার মানুষ আর কথার মানুষ হয়ে।

হিন্দু-মুসলিম-ধনী-গরিব, জোতদার-জমিদারদের একটা সমন্বিত সমাজে বেড়ে উঠেছে আমার শৈশব। ধর্মকে, সমাজকে, সময়কে যুক্তির দৃষ্টিতে ছুঁয়ে দেখার চেষ্টাটা আমি আমার পরিবার থেকেই শিখেছিলাম। আমার পরিবারটি ছিল ধর্মীয় গোঁড়ামির ঊর্ধ্বে পুরো গ্রামের মধ্যে একটি এলিট পরিবার। আমার ঠাকুরদা রামদয়াল সরকার ছিলেন একজন গ্রামীণ এলিট। প্রকৃত অর্থেই আমার চিন্তা, চৈতন্য ও মানস জগতের ভিত্তিভূমি কিংবা শিক্ষালয় ছিল আমার পরিবার।

এলিট বলতে আপনি কি বিদ্যান বুঝিয়েছেন?

তুমি ঠিকই বলেছ, ‘এলিট’ শব্দটি নানা অর্থে ব্যবহার হয়। আসলে এলিট মানে বিদ্যান। আমি এলিট বলতে বুঝিয়েছি পুরো গ্রামটার মধ্যে আমাদের বাড়ির মতো এমন বিদ্যার চর্চা কোথাও হতো না। সেই অর্থে আমি একটা এলিট পরিবারের উত্তরাধিকার বহন করছি। এই বিদ্যান এলিট পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় আমার একটা সুবিধা হয়েছে। আমি হাল-চাষ শিখিনি। ক্ষেত-খামারেও কোনো দিন কাজ করিনি। কারণ কৃষকের সন্তান আমি ছিলাম না। আমার বাবা ছিলেন হোমিওপ্যাথ ডাক্তার। কিন্তু কৃষকের জমির আইলে দাঁড়িয়ে কৃষকের জীবনকে দেখার ও অনুভব করার একটা সংবেদনশীল এবং যৌক্তিক মন তৈরি হয়েছিল সেই রামপুরের প্রতিবেশে।

আপনার মননচর্চার শুরু তাহলে পরিবার থেকে গড়ে উঠেছিল।

অবশ্যই। আমার শেকড়ের বাইরে আমার কোনো অস্তিত্ব নেই। শেকড়ের সংযুক্তিতেই আমার বিকাশ। আমার ঠাকুরদা, আমার ঠাকুরমার চেতনাতেই রাঙায়িত হয়েছি আমি। আমার ঠাকুরমা বলতেন, ‘তোকে মাথায় রাখতাম না উকুনে খাবে, মাটিতে রাখতাম না পিঁপড়েয় খাবে। তোকে কোলেই রাখতাম’। আমিও বইয়ের জগতের মধ্যেই সমস্ত কিছুই পেয়ে গেলাম। বইয়ের চাইতে বড় কিছু নেই, এই বোধটা ছেলেবেলাতেই আমার হয়ে গেল। আসলে বইয়ের পাঠক ছাড়া আমি আর কিছুই হই নাই। এভাবেই কিন্তু আমি বড় হয়ে উঠেছি।

দেশভাগ আপনার মনোজগতকে কীভাবে প্রভাবিত করেছিল?

দেশভাগ, দাঙ্গা, দ্বিখণ্ডিত বাংলা-এসব ব্যাপার আমাকে নিশ্চয়ই আলোড়িত করেছে। তবে এই ব্যাপারটায় খুব দৃঢ় ভূমিকা রেখেছেন আমার বাবা। আমাদের আত্মীয়রা দেশত্যাগ করে চলে যাচ্ছে, প্রতিবেশীরা চলে যাচ্ছে, চারদিক থেকে চাপ আসছিল চলে যাওয়ার জন্য; কিন্তু বাবা যাননি। চারপাশের হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামগুলো প্রায় জনশূন্য হয়ে গেল। তখন স্কুলে পড়ি। স্কুলে যেতে পারি না। রায়টের ভয়ে প্রতিনিয়ত আমরা তখন সঙ্কুচিত ছিলাম। কিন্তু বাবার স্থিরতায় এবং আত্মবিশ্বাসে আমরা দেশত্যাগ করিনি। ছোট বেলার বিপন্ন মনটাই হয়তো দেশকে বুঝতে, দেশের মানুষকে বুঝতে, সমাজকে বুঝতে একটা পাটাতন তৈরি করেছিল।

আপনি ভাষা আন্দোলনেরও কর্মী ছিলেন।

১৯৫২ সালে আশুজিয়া হাইস্কুলে আমি তখন দশম শ্রেণির ছাত্র। বলতে পার ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমার রাজনৈতিক জীবনের সম্পৃক্ততা। বাজারে বাজারে চোঙ্গায় মুখ লাগিয়ে স্লোগান ধরেছি। গ্রামের বাজারে হরতাল করেছি। গীতিকবি জালাল খাঁর পুত্র কবি খান মোহাম্মদ আবদুল হাকিম আমাদের ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছিলেন। শুধু বাজারে হরতাল নয়, গ্রামের ভেতরে বৈঠকে আমি বাংলা ভাষার পক্ষে কথা বলেছি। গ্রামের মানুষদের এই বৃহত্তর আন্দোলনটা সম্পর্কে ধারণা দেওয়াই ছিল ওই বৈঠকের উদ্দেশ্য। আমার জীবনের নায়ক যদি হন আমার ঠাকুরদা রামদয়াল সরকার, তবে বলতে হবে আমার বক্তা হওয়ার নায়ক আমার বাবা।

কমিউনিস্টদের সঙ্গে কিংবা কমিউনিস্ট রাজনীতির সঙ্গে কখন, কীভাবে যুক্ত হলেন?

১৯৫৭ সালে ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজে বিএ ক্লাসে ভর্তি হওয়ার পরই মার্কসবাদে দীক্ষিত হই। ময়মনসিংহে ‘নয়াজামানা পুঁথিঘর’ নামের বইয়ের দোকানটি ছিল নিষিদ্ধঘোষিত কমিউনিস্ট পার্টির ‘অঘোষিত অফিস’। এখানে কমিউনিস্টরা আড্ডা দিত। আড্ডা বসত কমরেড শৈলেন রায়ের বাসায়ও। এ দুটি আড্ডাতেই কমিউনিস্ট নেতাদের সংস্পর্শে আসি। এরপর ১৯৫৮ সালের অক্টোবরে আইয়ুবের মার্শাল ’ল জারির পর সবই ছত্রখান হয়ে গেল। নয়াজামানা পুঁথিঘরে তালা পড়ল। কমিউনিস্টদের অনেকেই গ্রেফতার হলো, অনেকেই আত্মগোপনে চলে গেল। ১৯৫৯ সালে বিএ পাস করার পর স্কুলে মাস্টারি নিই। প্রথমে আশুজিয়া হাইস্কুলে, পরে বারহাট্টায়। বারহাট্টায় আত্মগোপনকারী কমিউনিস্ট নেতাদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হয়। কমরেড সুকুমার ভাওয়াল ও কমরেড অজয় রায়ের সঙ্গে গোপন বৈঠকে মিলিত হই। এ সময় থেকেই কমিউনিস্ট পার্টির গোপন মুখপত্র ‘শিখা’ পাঠের সুযোগ পাই। শিখার পাতা থেকেই খবর পাই যে পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টির ভেতর ভাঙনের সূচনা হচ্ছে। পরে পার্টি ‘মস্কোপন্থি’ ও ‘পিকিংপন্থি’ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। আমি দুই বছর বারহাট্টায় মাস্টারি করার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএ ক্লাসে ভর্তি হই ১৯৬১ সালে। সেখানেই ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মুখে পড়ি ১৯৬২ সালে।

 

 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক আপনাকে সবচেয়ে প্রভাবিত করেছিল?

একাধিক শিক্ষক আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। ড. মুহম্মদ এনামুল হকের কথা বিশেষভাবে মনে পড়ে। তার ক্লাসে আমরা পারতপক্ষে সামনের সারির বেঞ্চে বসতে চাইতাম না। কারণ ওই ভয়। একেবারে শারীরিকভাবে নির্যাতন হওয়ার ভয়। তুলনামূলক ভাষাতত্ত্ব, বাংলা ভাষার ইতিহাস ও চর্যাপদ পড়াতে গিয়ে তিনি যা যা বলতেন তার নির্যাস আমাদের খাতায় লিখে নিতে হতো। তিনি আমাদের অন্তত সামনের বেঞ্চের ছাত্রদের, খাতায় উঁকি দিয়ে দেখতেন আমরা কী লিখেছি। একটু ভুল পেলেই ছাত্রদের মাথায় প্রচণ্ড চাটি মেরে গর্জন করে উঠতেন,- ‘কী লিখেছিস হতভাগা?’ একদিন বললেন ‘লিখো,- চর্যাপদের ভাষা-বিচার’। আমরা সবাই এই শিরোনামটি লিখে কলম ধরে অপেক্ষা করছি। তিনি আস্তে আস্তে এগিয়ে এলেন। সামনের সারির ছাত্রদের খাতাগুলো এক নজর দেখেই একেবারে ফেঠে পড়লেন; ‘সব মূর্খ, মূর্খ... কতগুলো গাধা-গরু ইস্কুল কলেজে মাস্টার হয়ে যাবে, আর কতগুলো গাধা-গরু তৈরি করে এখানে পাঠাবে।’ আমাদের ভুলটা হলো ‘ভাষা-বিচার’ লিখতে ‘ভাষা’ ও ‘বিচার’ এর মধ্যে আমরা কেউ হাইফেন দিইনি। ডক্টর হকের দৃষ্টিতে এটি মারাত্মক অপরাধ। ক্লাসে নয় শুধু, ক্লাসের বাইরেও তিনি আমাদের ভাষা-শিক্ষকের ভূমিকায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতেন।

আপনি শিক্ষক হলেন কেন?

স্কুলে পড়ার সময় এক সভায় ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজের দর্শনের অধ্যাপক সুধীন চক্রবর্তীর বক্তৃতা শুনে একান্ত মুগ্ধ হয়ে পড়ি। সে দিনই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি যে, আমাকে কলেজের অধ্যাপক হতে হবে। দারিদ্র্যের সঙ্গে যুদ্ধ করে একাডেমিক পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হয়েছে। লক্ষ্য, কলেজের অধ্যাপক হওয়া। ১৯৬৪ সালের আগস্টে বাংলার অধ্যাপক হিসেবে নাসিরাবাদ কলেজে যোগদানের মধ্য দিয়ে আমার লক্ষ্য পূরণ হয়। তবে শুধু ক্লাসে পড়িয়ে তৃপ্তি পাই না। ময়মনসিংহ শহরে ‘মুক্তবাতায়ন পাঠচক্র’সহ অনেক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়লাম। সেই সব সংগঠনে যা করতাম তা ‘মাস্টারি’ ছাড়া আর কিছুই না। ময়মনসিংহ শহরে এখানে-ওখানে সারা দিন মাস্টারি করার যে সুযোগ পেয়েছিলাম, সেটিই ছিল পরম পাওয়া। তাই নাসিরাবাদ কলেজ ও ময়মনসিংহ শহর ছেড়ে আর কোথাও যাওয়ার কথা ভাবিইনি। সারা জীবন ধরে আমার আনুষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক সব ছাত্রের শ্রদ্ধা পেয়ে আসছি।

১৯৭১ সালের স্মৃতি?

১৯৭১ সালে নানা বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে আমাদের পরিবারটি তিন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। আমার স্ত্রী কানন সরকার তার পিতৃ পরিবারের সঙ্গে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয় কিভাবে সেসব বিস্তৃতভাবে ‘পাকিস্তানের জন্মমৃত্যু দর্শন’ গ্রন্থে লেখা হয়েছে। একাত্তরের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত নেত্রকোনায় ভাটি এলাকায় স্কুল-কলেজের কিছু ছাত্রকে নিয়ে ‘পাঠচক্র’ চালাই। এই ছেলেদের অনেকেই মুক্ষুক্তিযুদ্ধে যোগদান করে। ভারতের মেঘালয়ে গিয়ে সেপ্টেম্বর মাস  থেকেই বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির অনেক নেতার সাক্ষাৎ লাভ করি। তারা মেঘালয়ে ক্যাম্প করে মুক্ষুক্তিযুদ্ধের কাজে সহায়তা দান করেন। আমিও তাদের নির্দেশে বাংলাদেশ থেকে মেঘালয়ে চলে যাওয়া অনেক ছাত্রকে রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ দিই এবং তারা মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করে।

বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করেন?

একটা জিনিস আমি বুঝি, শিক্ষানীতিকে সমাজনীতি থেকে, সমাজব্যবস্থা থেকে আলাদা করে চিন্তা করা যায় না। একটা শিক্ষানীতিকে পরিপূর্ণভাবে, যথার্থরূপে, সব মানুষের উপযোগী করার জন্য কোনো কমিটি-কমিশনের কার্য না, যদি না সমগ্র সমাজ ব্যবস্থাটার পরিবর্তন ঘটে। কাজেই সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই আমাদের নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে উঠবে এর আগ পর্যন্ত এই শিক্ষানীতি সেই শিক্ষানীতি- এগুলো জোড়াতালি ছাড়া আর কিছুই হবে না। সমাজব্যবস্থা যেভাবে চলছে তার সঙ্গে সাজুয্যপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা চলতে হবে। প্রকৃত শিক্ষা নামের প্রয়াস বর্তমান রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নাই। সমস্ত সমাজ সংকটময়। সমাজব্যবস্থা পরিবর্তনের যে সংগ্রাম, সেই সংগ্রামের মধ্য দিয়েই আমাদের নতুন শিক্ষানীতি প্রতিষ্ঠার পথ অবারিত হবে। 

অবসর কাটে কিভাবে?

অবসর কাটে পড়াশোনা আর লেখালেখি করে। বর্তমানে ‘বুদ্ধি মুক্তির আন্দোলন’ শীর্ষক একটি নতুন প্রবন্ধ লিখছি।      

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর