শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

কবি যখন জেলে

কাজী নজরুলের লেখা যুগবাণী, বিষের বাঁশি, ভাঙ্গার গান, প্রলয় শিখা ও চন্দ্রবিন্দুসহ মোট ৫টি গ্রন্থ ব্রিটিশ সরকার বাজেয়াপ্ত করে। ১২ সেপ্টেম্বর ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত ধূমকেতুর দ্বাদশ সংখ্যায় ‘আনন্দময়ীর আগমন’ নামক একটি কবিতা প্রকাশিত হয়। এ কবিতায় নজরুলের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম রাজদ্রোহের মামলা হয়। একই বছরের ৮ নভেম্বর রাজদ্রোহের অপরাধে নজরুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। পরবর্তীতে এ মামলার রায়ে ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের ১০ জানুয়ারি নজরুল এক বছর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হন। রায় ঘোষণার পরের দিন তাকে আলীপুর সেন্ট্রাল জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের ১৪ এপ্রিল নজরুলকে আলীপুর ন্ট্রোল জেল থেকে হুগলি জেলে স্থানান্তর করা হয়। এ সময় নজরুল তার বিখ্যাত ‘শিকল পরার গান’ জেলে বসেই রচনা করেন। জেলখানার ভিতর অকথ্য নির্যাতন আর বৈষম্যের শিকার হয়ে নজরুল এখানেও বিদ্রোহী হয়ে উঠলেন। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের ১৪ এপ্রিল হুগলি জেলে অনশন ধর্মঘট শুরু করেন। হুগলি জেলে কবি নজরুলের সঙ্গে মৌলভী সিরাজউদ্দীন এবং বাবু গোপাল চন্দ্র সেনও অনশনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেই সময় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্বয়ং নজরুলকে চিঠি লিখে অনশন ভঙ্গ করার অনুরোধ জানান। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলং থেকে এ বিষয়ে তাকে টেলিগ্রাম পাঠান। জেল কর্তৃপক্ষ ‘Address is not found’ লিখে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে টেলিগ্রামটি ফেরত পাঠান। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় শিবপুর থেকে ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের ১৭ মে হুগলি জেলে গিয়ে নজরুলের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেন। কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতা ও অনীহার কারণে তিনি দেখা করতে পারেননি। চুরুলিয়া থেকে নজরুলের মা জাহেদা খাতুনও নজরুলের সঙ্গে দেখা করতে ব্যর্থ হন। অনশনের ৩৯ দিন পর কুমিল্লার মাতৃসম বিরজা সুন্দরী দেবীর অনুরোধে নজরুল অনশন ভঙ্গ করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর