১৪ জুলাই, ২০১৬ ১৬:১২

পূর্বসূরিকে প্রশংসায় ভরিয়ে শুরু তেরেসার

অনলাইন ডেস্ক

পূর্বসূরিকে প্রশংসায় ভরিয়ে শুরু তেরেসার

উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিচ্ছিলেন কনজারভেটিভ এমপি'রা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে হাউস অব কমন্সে শেষ দিনে ডেভিড ক্যামেরন তখন বলছিলেন, ‘‘বাকি দিনটার ডায়েরি কিন্তু একেবারেই হাল্কা।’’

১০ ডাউনিং স্ট্রিট থেকে জিনিসপত্র সরানো হয়ে গিয়েছিল আগেই। বাকি ছিল বিকেলে বাকিংহ্যাম প্যালেসে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া। সেই চিঠি হাতে আসতেই রানির দফতর থেকে ফোন গেল তেরেসা মে'র কাছে। মার্গারেট থ্যাচারের পর ব্রিটেনের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে ৫৯ বছরের কনজারভেটিভ নেত্রী পৌঁছলেন ডাউনিং স্ট্রিটে। ঘণ্টাখানেক আগে যে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন সপরিবার ক্যামেরন, তার ‘১০’ লেখা বিখ্যাত কালো দরজার সামনে দাঁড়ালেন তেরেসা। পাশে স্বামী ফিলিপ। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে পূর্বসূরির ভূয়সী প্রশংসা করে বললেন, ‘‘ক্যামেরনের মধ্যে এক আধুনিক প্রধানমন্ত্রীকে পেয়েছি। সারা দেশের সব মানুষের কথা একসঙ্গে ভাবে, এমন একটা সরকারের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। আমিও সেই পথে চলব। একটা বদল আসছে। সবাই মিলে তার মোকাবিলা করব।’’

রাজনৈতিক আদর্শগতভাবে ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষপাতী ছিলেন তেরেসা। কিন্তু এ নিয়ে প্রচারে সে ভাবে দেখা যায়নি তাঁকে। এখন ‘ব্রেক্সিট’ কার্যকর করার দায়িত্ব বর্তাবে তাঁরই উপরে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, নতুন প্রধানমন্ত্রী আজ বারবার বলেছেন ‘ঐক্যবদ্ধ’ ব্রিটেনের কথা। বলেছেন, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের বন্ধন সযত্নে রক্ষা করে এমন এক দেশ তিনি গড়তে চান, যে দেশ সকলের। যেখানে গুরুত্ব পাবে সামাজিক ন্যায়, খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার।

তেরেসাকে অভিনন্দন জানাতে গিয়ে ক্যামেরন আগেই মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, থ্যাচারও ছিলেন কনজারভেটিভ নেত্রী। তবে হাউসের বক্তৃতায় বিদায়ী প্রধানমন্ত্রীর গলায় ছিল যেন ঈষৎ আক্ষেপও। গ্যালারিতে তখন স্ত্রী সামান্থা। ক্যামেরন বলছিলেন, ‘‘পিছনের সারি থেকে এ বার সব দেখতে হবে। বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়তে হবে না!’’ হাল্কা চালে এমপি ড্যানি কিনাহান তাঁকে বললেন, ‘‘এ বার তো টিভি চ্যানেলের উপস্থাপক, অথবা ইংল্যান্ড ফুটবল দল বা মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদের জন্যও লড়তে পারেন!’’ হাসতে হাসতে ক্যামেরন বললেন, ‘‘দারুণ প্রস্তাব! কিন্তু ও সব বেশ কঠিন। আমার দ্বারা হবে না!’’

কৌতূহল আরও একটা ছিল। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের জনপ্রিয় ‘মার্জার’ বাসিন্দা ল্যারিরও কি ঠিকানা পাল্টে যাবে? ক্যামেরন বলেন, ‘‘ওকে খুবই ভালবাসি। কিন্তু নিয়ে যেতে পারছি না। ও তো এই বাড়িরই বাসিন্দা!’’ ডাউনিং স্ট্রিটে শেষ ডিনারটা ক্যামেরন দম্পতি আনিয়েছিলেন ওয়েস্টমিনস্টারের জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ ‘কেনিংটন তন্দুরি’ থেকে। ভারতীয় ‘কারি’র বরাবরই ভক্ত তাঁরা। ‘কেনিংটন  তন্দুরি’ও তা-ই পাঠিয়েছিল বিদায়ী প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে।

তবে এ বার কী হবে বলা মুশকিল। কারণ তেরেসা তো রান্না করতে ভালোবাসেন!  


সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা


বিডি-প্রতিদিন/ ১৪ জুলাই, ২০১৬/ আফরোজ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর