২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২২:১৩

কুড়িগ্রামে ক্রেতা সংকটে আলুর বাজার, মাথায় হাত কৃষকের!

বিপুল পরিমাণ আলু হিমাগারে অবিক্রিত থাকার আশঙ্কা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামে ক্রেতা সংকটে আলুর বাজার, মাথায় হাত কৃষকের!

কুড়িগ্রামে আলুর বাজারে অব্যাহত দরপতন আর ক্রেতা সংকটে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন জেলা আলু ব্যবসায়ী ও চাষিরা। দাম কম হওয়ায় আলুর হিমাগারে বিপুল পরিমাণ আলু অবিক্রিত থাকার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আলুর মৌসুম শেষ হয়ে এলেও হিমাগারে এখনও সংরক্ষিত রয়েছে অর্ধেকেরও বেশি আলু।

এর ওপর দিনে দিনে কমছে আলুর দাম। পাইকারি কিংবা বাজারগুলোতে ক্রেতা সংকটে বিপাকে আলু ব্যবসায়ী ও চাষিরা। তাই লোকসান কমাতে আলু চাষি, হিমাগার মালিক ও ব্যবসায়ীরা আলু রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। 

গত বছর আলুর ভালো দাম পেয়ে এবছর অনেক বেশি পরিমাণ জমিতে আলুর আবাদ করেন এখানকার কৃষকরা। আলুর উৎপাদন খরচও পড়ে যায় কিছুটা বেশি। লাভের আশায় সে খরচ গায়ে না লাগলেও এখন তা কৃষক ও ব্যবসায়ীদের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, প্রতি বস্তা আলুতে জেলার হিমাগারসমূহে ভাড়া বেড়েছে ৪০-৬০ টাকা। অথচ আলুর দাম দিন দিন কমছেই। এ কারণে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের মাথায় এখন বাজ পড়েছে। এখন আলু রপ্তানি করলে লাভের মুখ দেখবেন বলে জানান চাষিরা। 

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার শিবরাম গ্রামের আলু চাষি হাবিবুর রহমান জানান, প্রতি কেজি আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করতে খরচ পড়েছে ১৭-১৮ টাকা। অথচ বতমানে আলু বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১১ টাকা। লোকসানের কারণে কৃষকরা আলু বিক্রি করতে চাচ্ছেন না। তার উপর ক্রেতার সংকটও রয়েছে। 

সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী বাজারের আলু ব্যবসায়ী সোলেমান আলী জানান, মোকামে চাহিদা কম থাকায় আর আলু কিনতে পারছিনা। গত বছর করোনাকালে ত্রাণ হিসেবে আলু বিতরণ ও বিদেশে আলু রপ্তানি হলেও এবার ভিন্ন চিত্র। তাই আলুর চাহিদা দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। এক ট্রাক আলু কিনে বিক্রির আগেই পড়ে যাচ্ছে দাম। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, কুড়িগ্রামে ৪টি আলুর হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়। উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার মেট্রিক টন আলু। চারটি হিমাগারে সংরক্ষিত হয়েছে ৫২ হাজার মেট্রিক টন আলু। 

ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিকরা জানান, এখন বিক্রির সময় আছে আর মাত্র দুই মাস। আলু রপ্তানির উদ্যোগ না নিলে ঋণের বোঝা বৃদ্ধিসহ বিপুল লোকসানের আশঙ্কা হিমাগার মালিকদের। সেকেন্দার বীজ হিমাগারের মালিক সেকেন্দার আলী জানান, তাঁর হিমাগারে সংরক্ষিত ২ লাখ বস্তা আলুর মধ্যে এখনও এক লাখ ২০ হাজার বস্তা আলু অবিক্রিত। কুড়িগ্রামের এ হক হিমাগার লিমিটেড এর ম্যানেজার মোমিন মিয়া জানান, কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সংরক্ষিত আলুর উপর বিপুল পরিমাণ ঋণ দেয়া হয়েছে, কাজেই আলু বিক্রি না হলে হিমাগার মালিকরাও ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়বেন। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

সর্বশেষ খবর