১৫ নভেম্বর, ২০২১ ২২:১৩

উঠান কৃষির সফল দৃষ্টান্ত চন্দন-লাকী দম্পতি

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

উঠান কৃষির সফল দৃষ্টান্ত চন্দন-লাকী দম্পতি

উঠান কৃষির সফল দৃষ্টান্ত চন্দন-লাকী দম্পতি

বাড়ির আঙিনায় বিষমুক্ত সবজি আবাদ করে সফলতা পেয়েছেন ভালুকা পৌর এলাকার ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা কামরুল এহসান চন্দন ও সাবিহা সুলতানা লাকী দম্পতি। 

সরেজমিন তাদের বাড়িতে দেখা যায়, তারা সবজি ক্ষেতে পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন। কাজের ফাঁকে কথা হয় এই দম্পতির সঙ্গে। 

কামরুল এহসান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাকালে জাতির উদ্দেশে ভাষণে আহ্বান জানিয়েছিলেন যে, ‘করোনার কারণে দেশে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। তাই যেন দেশবাসী এক ইঞ্চি জমিও পতিত না রাখে।’ তার এ আহ্বান তিনি অনুপ্রাণিত হন। পরে বাড়ির সামনে ১০ শতাংশ অনাবাদী জমিতে সবজি ও ফল ফলাদির আবাদ শুরু করেন। ভালুকা কৃষি অফিস ও ফেসবুক গ্রুপ ‘কৃষকের প্রাণ-কৃষি জগৎ’ থেকে নানাভাবে তথ্য ও সহযোগিতায় চাষাবাদ শুরু করেন।
 
তাছাড়া তিনি কেচু সার তৈরি করেছেন, যা সার হিসেবে নিজের সবজি ও ফল গাছে প্রয়োগ করেন। কোনো প্রকার রাসায়নিক সার প্রয়োগ না করায় তাদের উৎপাদিত ফল ও সবজি স্বাস্থ্যকর ও বিষমুক্ত। 

উঠান কৃষিতে তাদের আবাদের মধ্যে রয়েছে দেশি বেগুন, মূলা, টমেটো, শসা, ফুলকপি, পাতাকপি, ব্রোকলি, রাজমা, শিম, বরবটি, শীতলাউ, মিষ্টি লাউ, দুন্দুল, আদা, বিভিন্ন প্রকারের শাক ও সবজি। এছাড়া রয়েছে কলম পদ্ধতিতে একই গাছে ৫ প্রকারের আমের গাছ, মালটা, কমলা, কদবেল, আমড়া, আতা, এলাচ, শরিফা, সফেদা, সিডলেস লেবুসহ বিভিন্ন ফলের গাছ। ভেষজের মধ্যে রয়েছে এলোভেরা, শতমূল, তুলসি ও দক্ষিণ কোরিয়ার তেল জাতীয় উদ্ভিদ পেরিলার চাষ।

উঠানের একপাশে বায়ুফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করেন, যা সারাবছর নিজেদের পারিবারিক চাহিদা মিটিয়েও আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে থাকেন। কামরুল এহসান পেশায় কলেজের শিক্ষক ও দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার ভালুকার সংবাদদাতা। কর্মস্থলে যাওয়ার আগে প্রতিদিন ভোর ৬টা হতে সকাল ৯টা পর্যন্ত তিনি কৃষি কাজে ব্যস্ত থাকেন। গৃহিনী সাবিহা সুলতানা লাকী সকল কাজে সাহায্য করে থাকেন। 

সাবিহা সুলতানা জানান, তিনি দেশি মুরগি ও কবুতর পালন করে বেশ লাভবান। ১০ জোড়া কবুতর ও ১৫-২০ টির মতো দেশি মুরগি রয়েছে, যা থেকে নিজেরা খেয়ে প্রতিদিন ১০০ টাকার মতো ডিম বিক্রি করতে পারেন। এছাড়া মুরগির ডিম হতে বাচ্চাও ফুটানো হয়। কবুতরের বাচ্চা হতেও কিছু টাকা পাওয়া যায়। শাক-সবজি নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিবেশীদের দিয়েও কিছু বিক্রি করা যায়। এককথায় এটি তাদের পারিবারিক বিষমুক্ত কৃষি খামার। 

তাদের রয়েছে এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে সাবিক হাছান দীপ আনন্দমোহন কলেজে ভুটানিতে অনার্স শেষবর্ষে অধ্যয়নরত। মেয়ে সওদা বিনকে হাছান শ্যামা কানাডায় বিবিএ পড়াশোনা করছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার জেসমিন নাহার জানান, ‘কামরুল এহসান চন্দন-সাবিহা সুলতানা লাকীর এ উদ্যোগ একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। এ মানুসিকতা সবার মাঝে গড়ে উঠলে অতি দ্রুত কৃষি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব।’ 

 বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর