১১ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৪:৫৬

মাদারীপুরে রোপা আমনে কৃষকের মুখে হাসি

বেলাল রিজভী, মাদারীপুর

মাদারীপুরে রোপা আমনে কৃষকের মুখে হাসি

মাদারীপুরে চলতি রোপা আমন ধানে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। অনুকূল আবহাওয়া থাকায় উচ্চ ফলনশীল জাতের রোপা আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে ধানের দামও তুলনামূলক ভালো থাকায় অনেক খুশি আমন চাষিরা। কৃষকরা বলছেন, ধানের দাম ভাল থাকায় আমন উৎপাদন করে লাভ হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের আনারদ্দিন মৃধা পাট কেটে তার ৫ বিঘা জমিতে উচ্চফলনশীল রোপা আমনের চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। বিঘায় তার ৩০ থেকে ৩৫ মন ধান উৎপাদন হয়েছে। 

তিনি বলেন, ‘গত পাঁচ বছরের মধ্যে এবারই আমাদের এত ভাল আমন ধান হয়েছে। তবে কয়েক দিন আগে ঝড়ের কারণে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। গত কয়েক বছর ধানের দাম কম থাকায় ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছিলাম। চলতি বছর এখনো ধানের দাম ভাল আছে।’ 

দক্ষিণ বিরাঙ্গল গ্রামের আরেক চাষি আনন্দ বৈদ্য চলতি বছর দুই বিঘা জমিতে চিনিগুড়া জাতের ধান চাষ করেছিলেন। তিনি জানালেন, ‘এই বছরই তিনি চিনিগুড়া জাতের ধান চাষ করেছেন। এবং ফলন খুব ভালো হয়েছে। চিনিগুড়া ওজনে কিছুটা কম হলেও দামের দিক দিয়ে পুষিয়ে যায় বলে জানালেন এই কৃষক। ডাসার উপজেলার রতন চন্দ্র জানালেন, তিনি এবছর ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে আমন ধানের চাষ করেছেন। তারও ক্ষেতে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে।’ 

মদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর জেলায় রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ৩১ হেক্টর জমি। অর্জিত হয়েছে ১৭ হাজার ৬’শ ৮০ হেক্টর জমি।  যার মধ্যে মাদারীপুর সদরে ৩ হাজার ৯৬২ হেক্টর, কালকিনিতে ৭ হাজার ৭৩ হেক্টর,রাজৈরে ৩ হাজার ১৭৪ হেক্টর এবং শিবচরে উপজেলায় ৩ হাজার ৪৭১ হেক্টর জমিতে উন্নত জাতের উফশী রোপা আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তরা জানিয়েছেন, আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবং কৃষকের মাঝে সরকারের প্রনোদনা কার্যক্রম চালু থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চাইতেও বেশি জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে।

মাদারীপুররের কালকিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস বলেন, এই অঞ্চলে চলতি বছর কৃষকরা ব্রি-৩৩, ৩৯, ৪৯, ৫১, ৫২, ৭৫, ৮৭ ও বিনা ধান-৭ উন্নত জাতের উফশী রোপা আমন ধানের চাষ করায় কাঙ্খিত ফলন ঘরে তুলতে পারছে। তিনি বলেন, চলতি বছরে রোপা আমন ধান চাষ করার জন্য কৃষকদের সরকারি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন ধরনের বীজ ও সার বিতরণ করেছি। ধানের ফলনও ভালো হয়েছে।’

মাদারীপুর জেলা কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা এস.এম সালাউদ্দিন বলেন, আমরা সারা বছরই কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের প্রক্ষিণ দিয়ে থাকি। এবার ধানের ভাল উৎপাদন হয়েছে। ধান ভাল হওয়ায় চালের বাজারও সহজ্যলভ্য হবে। তিনি বলেন, প্রতি হেক্টরে সাড়ে ৩ টন চাল হিসেবে ১৭ হাজার ৬’শ ৮০ হেক্টর জমিতে ৬০ হাজার ৮ শত ৮০ মে. টন চাল উৎপাদন হবে।’

মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে আমাদের কৃষি কর্মকর্তরা তদারকি করায় এবার আমন ধানে তেমন কোনো রোগ বালাই হয়নি। তাই ফলন ভাল হয়েছে। আশা করি বাজারে যেহেতু ধানের দাম ৯’শ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠামান করছে। তাতে মাদারীপুরের আমন চাষিরা লাভবানই হবেন।’

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

সর্বশেষ খবর