১৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ০৮:৪৬

রেশমের সুদিনের অপেক্ষায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রেশমের সুদিনের অপেক্ষায়

রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী রেশম কারখানা বন্ধ হয় ২০০২ সালে। টানা ১৬ বছর বন্ধ থাকার পর ২০১৮ সালে আবার চালু হয় কারখানাটি। রাজশাহীর রেশমের ঐতিহ্যের কারণে এ বছর আন্তর্জাতিক ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বীকৃতিও মেলে। এতে সরকার রেশমের সুদিন ফেরাতে একনেকে পাস করে ১৫৩ কোটি টাকার ৪ প্রকল্প। এতে আবারও সুদিনের অপেক্ষায় রেশম উন্নয়ন বোর্ড। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার পর রেশম কাপড়ের চাহিদাও বেড়েছে। বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থ ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক ড. এম এ মান্নান বলেন, ‘রেশম শিল্পের হারানো ঐতিহ্য ও জনপ্রিয়তা ফিরে পেতে ইতিমধ্যে আমরা বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। বর্তমানে গবেষণা কার্যক্রমসহ রেশম সম্প্রসারণে প্রায় ১৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম, রংপুর, রাজশাহীসহ সারা দেশে চারটি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান আছে। এর মধ্যে রেশম চাষ সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে পার্বত্য জেলাগুলো হতদরিদ্র ১০ হাজার ব্যক্তির কর্মসংস্থান অন্যতম। এ ছাড়া পার্বত্য জেলাগুলোতে রেশম চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে ১২ মেট্রিক টন কাঁচা রেশমের নতুন উৎস সৃষ্টির প্রক্রিয়া চলমান। বৃহত্তর রংপুর এলাকায় ১৫ হাজার হতদরিদ্র ও ভূমিহীন বিশেষ করে নারীদের রেশম চাষে সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি ও আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানোর আরেকটি প্রকল্প চলমান। এতে রেশমের বিভিন্ন বিষয়ে দুই হাজার ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে রেশম চাষের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার চেষ্টা চলছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ১৮ মেট্রিক টন কাঁচা রেশমের উৎপাদন বৃদ্ধি সম্ভব যা দেশীয় চাহিদা পূরণ করবে।

বর্তমানে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড পাঁচটি আঞ্চলিক কার্যালয়, সাতটি জোনাল কার্যালয়, ৪১টি রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্রের মাধ্যমে রেশম সম্প্রসারণের কাজ করছে। রেশম বোর্ডের প্রধান উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ বিভাগের কর্মকর্তা জেরিন মৌসুমী কান্তা বলেন, ২০১৮ সালে কারখানা চালু হওয়ার পর থেকে প্রায় ২৩ হাজার ৫০০ মিটার কাপড় উৎপাদিত হয়েছে। বর্তমানে দেশে অভ্যন্তরীণ সুতার চাহিদা আছে ৩০০ মেট্রিক টন। চলমান চারটি প্রকল্প থেকে আরও ৪১ মেট্রিক টন রেশম গুটি উৎপাদন সম্ভব হবে। এ পর্যন্ত গুটি উৎপাদন হয়েছে ১৬.৭৯ লাখ কেজি এবং তা থেকে রেশম সুতা তৈরি হয়েছে ১২ হাজার ২১১ কেজি। এ ছাড়া রাজশাহী রেশম কারখানায় এ পর্যন্ত কাপড় উৎপাদন হয়েছে ৯ হাজার ৩৮৩ মিটার। পরিচালক ড. এম এ মান্নান বলেন, ‘রেশমের পুরনো ঐতিহ্য, গুণগত মান ও জনপ্রিয়তার কারণে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে রেশম কাপড়ের চাহিদা আছে। অভিজাতদের প্রথম পছন্দ রেশমজাত পণ্য। তবে প্রচার প্রচারণার অভাবেই আমাদের এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পটি পিছিয়ে আছে।

জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য সময়োপযোগী নতুন পরিকল্পনা ও আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ের চেষ্টা চলছে। লক্ষ্য আছে আবারও রেশম শিল্পের সুদিনে ফেরার।’

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

সর্বশেষ খবর