২১ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৫:৫৮

ঔষধি বাগানে ভাগ্য বদল

নজরুল মৃধা, রংপুর

ঔষধি বাগানে ভাগ্য বদল

নিজের ঔষধি বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত গোলাম কিবরিয়া।

রংপুরের পীরগঞ্জে ঔষধি গাছে ভাগ্য বদল করছেন শতাধিক কৃষক। ঔষধি গাছের মাধ্যমে ভাগ্য পরিবর্তন শুরু করেন উপজেলার জাহাঙ্গীরাবাদ গ্রামের মেহেদুল ইসলাম (৪০)। তার দেখাদেখি অনেকেই অন্য ফসলের চেয়ে ঔষধি গাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

পীরগঞ্জের জাহাঙ্গীরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে ঔষধি বাগানে চারা লাগিয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন মেহেদুল ইসলাম। তিনি ওই গ্রামের মহব্বত আলীর ছেলে। সামান্য জায়গা জমিতে গত ২০১৪ সালে উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বিভিন্ন জাতের ঔষধি গাছের চারা রোপণ করেন তিনি। দেখতে দেখতে ঔষধি বাগানে রুপ নেয় তার জমি।

তার বাগানে তুলসী, কালমেঘ, বাসক ও অর্শগন্ধাসহ বেশ কয়েক প্রজাতির ঔষধি গাছ রয়েছে। তিনি বাগানে যত প্রকার ঔষধি গাছ রয়েছে, সেগুলোর পাতা সঠিক মূল্যে ক্রয় করার চুক্তি করেন একটি ওষুধ কোম্পানির সাথে। মেহেদুল ইসলামের বাগানের সফলতা দেখে পাঁচগাছি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের কৃষক তার বাগান থেকে চারা কিনে নিজ নিজ জমিতে ঔষধি গাছের বাগান করে বণিজ্যিকভাবে বিক্রি করছেন। ওই এলাকায় শতাধিক কৃষক এখন ঔষধি গাছের চারা লাগিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন।

মেহেদুল ইসলাম বলেন, ঔষধি বাগান থেকে এবছরে তার লক্ষ্যমাত্রা তুলসী পাতা ১০ টনে ১০ লাখ টাকা, বাসক ৮ টন ৪ লাখ টাকা, কালমেঘ ২ টন ২ লাখ টাকা ও অর্শগন্ধা ৩ টন ৬ লাখ টাকায় বিক্রি হবে। তিনি আরও বলেন, বিক্রির ৩ ভাগের এক ভাগ উৎপাদন ব্যয় হয়। উৎপাদন ব্যয় বাদ দিয়ে প্রতি বছর ১৫ থেকে ১৭ লাখ টাকা আয় হয়। ওষুধ কোম্পানিতে ২০১৬ সাল থেকে পাতা বিক্রি করে আসছেন তিনি। তিনি বলেন, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে কৃষি কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত ৫ বছর থেকে ঔষধি গাছ তার ভাগ্য বদল করে দিয়েছে।

পানেয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে গোলাম কিবরিয়া বলেন, তাদের ইউনিয়নে শতাধিক কৃষক মেহেদুল ইসলামের কাছ থেকে প্রতিবছর চারা ও বীজ সংগ্রহ করে ঔষধি বাগান তৈরি করেছেন। তার মাধ্যমে কোম্পানিতে বিক্রি করে থাকেন। তিনিও ঔষধি বাগান করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছেন।

পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ সাদেকুজ্জামান সরকার বলেন, উপজেলার পাঁচগাছি এলাকার অনেক কৃষক কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের জমিতে ঔষধি গাছ লাগিয়ে ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন। এছাড়াও আমাদের কৃষি বিভাগ সবসময় তাদের পাশে থেকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর