১০ জানুয়ারি, ২০২২ ২০:৩৩
বিবিসি বাংলা’র প্রতিবেদন

যেভাবে চলছে জলচর পরিযায়ী পাখি শুমারির কাজ

অনলাইন ডেস্ক

যেভাবে চলছে জলচর পরিযায়ী পাখি শুমারির কাজ

ফাইল ছবি

দেশে জলচর পরিযায়ী পাখি শুমারি শুরু হয়েছে। পাখির বিচরণক্ষেত্র, জীবনমান, স্থানীয় মানুষ ও পরিবেশের নেতিবাচক পরিবর্তন প্রতিরোধে এই শুমারি করা হচ্ছে।

জানুয়ারি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ এই পাখি শুমারির কাজ করা হয়। তবে ফেব্রুয়ারির শুরুতে এবং মে- জুন মাসে আরেকবার করা হয়।

পাখি শুমারির এই কাজটি করছে বাংলাদেশ বার্ডস ক্লাব, বন অধিদপ্তর এবং টেকসই বন ও জীবিকা প্রকল্প (সুফল)। প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়নের (আইইউসিএন) অর্থায়নে এ বছর পাখি শুমারি শুরু হয়েছে।

উপকূলীয় জলচর পাখি শুমারি দল সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৭ সাল থেকে সারা বিশ্বের সঙ্গে এবার ভোলায়ও জলচর পাখি শুমারি হচ্ছে।

বাংলাদেশ বার্ডস ক্লাব জানাচ্ছে, টাঙ্গুয়ার হাওড়ে গত ২ ও ৩ জানুয়ারি জলচর পাখি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়। পাখি গণনায় মোট ৩৬ প্রজাতির ২৭ হাজার ১৭০টি পাখি গণনা করা হয়, যাদের মধ্যে ৩৩ প্রজাতির ২৭ হাজার ১৬৭টি ছিল জলচর পাখি।

বাংলাদেশে পরিযায়ী বুনোহাঁসদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে লালমাথা-ভুতিহাঁস ( Red Crested Pochard) ৭ হজার ৩৩২টি, এরপর দেখা গেছে মরচে রঙ-ভুতিহাঁস ( Ferruginous Pochard) ৭ হাজার ২০৫টি।

গত ৪ জানুয়ারি হাইল হাওড়ের বাইক্ক্যা বিল অভয়াশ্রমে দিনব্যাপী শীতকালীন জলচর পাখি শুমারি সম্পন্ন হয়, যাতে মোট ৩৪ প্রজাতির ৩ হাজার ২৩০টি জলচর পাখি দেখা গেছে। যাদের মধ্যে অন্যতম ছিল ৯০০টি গেওয়ালা-বাটান (Ruff), ৪৫২টি বেগুনি-কালেম ( Purple Swamphen), ২৫০টি খয়রা-কাস্তেচরা ( Glossy Ibis)।

এখন একটি দল ভোলায় জলচর পাখির গণনার কাজ করছে।

কীভাবে পাখি গণনা করা হয়

গণনার কাজে টেলিস্কোপ (দূরবীক্ষণ যন্ত্র) ব্যবহার করা। জলচর পাখি শুমারির জাতীয় সমন্বয়কারী এনাম আল হক বলেন, জলচর পাখি গণনা করা সহজ।

তিনি বলেন, এই ধরনের পাখি পানিতে বসে থাকে, খুব বেশি উড়াউড়ি করে না। পানির নিচে লতা গুল্ম খায়, মাঝে মাঝে ডুব দেয় আবার উঠে পড়ে। এটা গাছের পাখির মত না যে বেশি উড়া-উড়ি করে"।

সারা বিশ্বে আশির দশকে জলচর পরিযায়ী পাখির গণনা শুরু হয়। সেই সঙ্গে দেশেও একদল স্বেচ্ছাসেবক কাজটা একেবারে নিজেদের উদ্যোগে করেন।

৬ মিটারের গভীরতায় যেসব পাখি বসে সেগুলোকে জলচর পাখি বলে। হাওড়, বিল এবং উপকূলীয় এলাকায় এই পাখি বেশি থাকে।

মে-জুন মাসে আরেকবার পাখি শুমারি হয়। কারণ পরিযায়ী পাখি এক এক সময় এক এক দেশে থাকে।

তিনি আরও বলেন, এটা অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটা কাজ। এজন্যই মানুষ নিজের পকেটের টাকা খরচ করে চলে আসে। এখানে যেটা লাগে সেটা হল দক্ষতা। পাখি দেখে আপনাকে চিনতে হবে পাখিটি কোন প্রজাতির। এটা করতে ৫ থেকে ১০ বছর সময় লাগে।

তবে এই জন্য ব্যয় সেটা একটা বড় বাধা। উপকূলীয় এলাকায় ৬ জন লোক ১০দিনের জন্য বের হলে দুই লাখের মত টাকা দরকার পরে।

পাখি গণনার উদ্দেশ্য কী

আন্তর্জাতিকভাবে পাখি গণনা করে আগে ছাপানো হত। এখন ওয়েবসাইটে দেয়া হয়। এর ফলে সারা বিশ্বে পাখির সংখ্যা কোথায় বাড়ছে বা কমছে সেটা বোঝা যায়।

তবে ৪০ বছর আগে যে সংখ্যায় জলচর পাখি ছিল এখন সেটা কমে গেছে। এই সংখ্যা যে কেউ চাইলে ব্যবহার করতে পারে।

এনাম আল হক বলেন, জলচর পাখি গণনা করাই তাদের কাজ। এর পর ওই সংখ্যাটা দেখে যদি কোনো সরকার ব্যবস্থা নিতে চায় সেটা তারা নিতে পারে।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

সর্বশেষ খবর