৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১১:২৪

নীলফামারীর গ্রামীণ জনপথ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে হাতন্যাংলি

আবদুল বারী, নীলফামারী

নীলফামারীর গ্রামীণ জনপথ থেকে  হারিয়ে যাচ্ছে হাতন্যাংলি

নীলফামারীর গ্রামীণ জনপথ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে আদি লোকজ ঐতিহ্যের অন্যতম আগাছা নিড়ানি যন্ত্র হাতন্যাংলি। একসময় ফসলের খেত  নিড়ানি বা পরিষ্কার করার একমাত্র  যন্ত্র ছিল এটি। প্রযুক্তির ছোঁয়া আর কীটনাশকের কারণে তা বিলুপ্তির পথে। আগাছা বা উদ্ভিদ, লতাপাতা জন্মালে ফসলের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। আগাছা পরিষ্কার করার জন্য তৈরি করা হতো হাতন্যাংলি। হাতের সাহায্যে টানা হয় বলে আঞ্চলিক ভাষায়  এটি হাতন্যাংলি বা আঁচড়া নামে পরিচিত।

দুই থেকে তিন হাত লম্বা মোটা একটি কাঠ বা বাঁশে সমান দূরত্বে ছিদ্র করে আধা ফুট লম্বা বাঁশের (ফলা) সূঁচালো টুকরা অগ্রভাগে ঢুকিয়ে প্যানা (খোজ) দিয়ে শক্ত করে আটকানো হতো। এরপর মাঝখানে আড়াআড়ি আরেকটি ছিদ্র করে বাঁশের লাঙ্গলের মতো সংযুক্ত করা হয়। এটি ধরেই হাতন্যাংলি টেনে কৃষকেরা বোনা ফসল পাট, সরিষা, ধান, কাউন বেশি ঘন হলে পাতলা করার কাজে ব্যবহার করতেন। এছাড়াও বীজতলা তৈরি ও সারি সারি ভুট্টার মতো এমন অনেক ফসলের আগাছা নিড়ানি কাজে ব্যবহৃত হতো।

ডিমলা উপজেলার প্রবীণ কৃষকরা আব্দুল্লাহ মিয়া বলেন, ‘২০/২৫ বছর আগেও এ সনাতন পদ্ধতি  দিয়ে জমির আগাছা পরিষ্কার বা নিড়ানিসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হতো। বর্তমানে বিকল্প হিসেবে কৃষক আগাছানাশক বিষ এবং জমিতে স্প্রে করাসহ সারের সঙ্গে মিশিয়ে ছিটিয়ে দিয়ে আগাছা দমন করছেন।’

তবে এর ফলে ইতোমধ্যে আমরা উপকারী বিভিন্ন প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রজাতি হারিয়েছি। বিশেষ করে ফসলের পোকা খাওয়া পাখি, ইঁদুর, সাপ, কেঁচো, ব্যাঙ, শামুক, নানা ধরনের জলজ পোকা, দেশীয় ছোট মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে।

কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের কৃষক আতিয়ার রহমান,‌ ‌‘পরিবেশবান্ধব চমৎকার এ যন্ত্র ঐতিহ্য হিসেবে আজও ধরে রেখেছেন কেউ কেউ।বিনা খরচে পূর্ব পুরুষদের এ উদ্ভাবন কৃষি কাজে সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হলেও এখন তা প্রায় বিলুপ্তির পথে।’ 

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর