৬ মার্চ, ২০২২ ১৪:৩৪

নীলফামারীতে বাদুড়ের অভয়ারণ্য

আবদুল বারী, নীলফামারী

নীলফামারীতে বাদুড়ের অভয়ারণ্য

এক সময় গ্রাম-গঞ্জে, বনে জঙ্গলে উঁচু গাছের মগডালে বাদুড়ের মাথা নিচু করে ঝুলে থাকার দৃশ্য হরহামেশাই চোখে পড়ত। তখন বাদুড়ের উড়াউড়ি আর কিচির মিচির শব্দে মুখরিত হতো চারপাশ। তবে বর্তমানে বাদুড়ের নিরাপদ আবাসস্থল, খাবারের সংকট, গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ এর লাইন; নানা কারণে বিলুপ্তপ্রায় স্তন্যপায়ী নিশাচর প্রাণী বাদুড়।

নানা হুমকির মুখে থাকা সত্ত্বেও শতবর্ষ ধরে নীলফামারীর নগরবন গ্রামের প্রায় ২ বিঘা এলাকা বাদুড়ের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এ বিশাল এলাকার বটগাছ, শিমুল গাছ ও বাঁশবাগানজুড়ে দেখা মিলবে শত শত বাদুড়ের। এ যেন বাদুড়ের রাজ্য। প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যে তাদের হুকের মতো পা দু’টো আটকিয়ে নিস্তব্ধতায় ঝুলছে অসংখ্য বাদুড়। মাথায় সামান্য হলুদ রঙ থাকলেও পুরো দেহটি কালো। একটু শব্দ হলেই দল বেঁধে পালকহীন চামড়া মোড়ানো ডানায় কয়েকটা ঝাপটা দিয়ে আবার নীরব। রাতের অক্লান্ত শ্রমে যেন তারা শুধু একটু প্রশান্তির ঘুমই খুঁজছে।

গোধূলির রং মাখতেই যেন অন্যান্য পাখি আর বাদুড়ের ছোটাছুটিতে এলাকাটিতে সৃষ্টি হয় সৌন্দর্যের অবর্ণনীয় এক পরিবেশ। সকালে এর আশপাশে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকালে এদিক-সেদিক দেখা যায় উড়ন্ত বাদুড়ের দল। 

ওই গ্রামের আব্দুল হালিম বলেন, প্রায় ১০০ বছর ধরে এরা স্থায়ীভাবে এখানেই আছে। খাদ্যের সন্ধানে গোধুলির রঙ মাখতেই উড়ে চলা এবং ভোরে নীড়ে ফিরে আসা বাদুড়গুলো দেখে মনে হয় আকাশ যেন কালো মেঘে ছেয়ে গেছে।

কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অন্তরা আক্তার বলেন, বাদুড় নিরীহ প্রাণী। গরমে ডানা ছেড়ে হাত পাখার মত বাতাস করে। আবার নিস্তব্ধ  হয়ে যায়। এরা যেন পোষা প্রাণীদের মতোই নির্ভয়ে বসবাস করছে বহুকাল ধরে।

পাখি পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ নিয়ে কাছ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেতুবন্ধনের সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, বাদুড় নিয়ে কল্প-কাহিনী আর কুসংস্কারের যুগ কেটে গেছে। এরা কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসলকে রক্ষা করে। পরাগায়নে সাহায্য করে। তাই উপকারী ও পরিবেশবান্ধব এ স্তন্যপায়ী প্রাণীটি রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।


বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর