শিরোনাম
১১ মার্চ, ২০২২ ১৫:৫৫

বগুড়ায় শশা চাষে কৃষকের মুখে হাসি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ায় শশা চাষে কৃষকের মুখে হাসি

ছবি- বাংলাদেশ প্রতিদিন।

বগুড়ায় শশা চাষে কৃষকের মুখে হাসি। জেলার সারিয়াকান্দিসহ বিভিন্ন উপজেলায় শশা চাষ করে লাভের স্বপ্ন বুনছেন কৃষক। আগাম চাষে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনাও দেখা গেছে। 

সারিয়াকান্দি উপজেলার ৮ ইউনিয়নের ফসলি জমিগুলো যমুনা নদীগর্ভে। প্রতিবছর বন্যায় জমিগুলোতে বালু পরে বিশাল এলাকা অনাবাদী হয়ে যায়। এসব অনাবাদী বালু জমিগুলোতে এ বছর কৃষকরা শশার আবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বেড়ে ওঠা শশার গাছগুলো ভাল ফলনের জানান দিচ্ছে। প্রতিটি গাছে প্রচুর পরিমাণে শশার ফুল ধরেছে। 

বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথেই কৃষকরা জমিতে শশার চাষ করেছিলেন। দাম ভাল থাকলে প্রচুর লাভবান হন কৃষকরা। তবে দাম কমে গেলে লোকসান গুনতে হয়। কারণ শশা চাষে খরচ অপেক্ষাকৃত একটু বেশি। জমিতে নিড়ানি দিতে হয় কয়েকবার। গাছ বড় হলে লাঠির সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে দিতে হয়। এরপর গাছ বিছিয়ে যাওয়ার জন্য মাচা করে দিতে হয়। প্রতিনিয়ত শশা গাছের পরিচর্যা করতে হয়।

সারিয়াকান্দি কৃষি অফিসের সূত্রে জানা যায়, শশার বীজ বপনের পর ৫ হতে ৬ দিন পর চারা গজায়। চারা গজানোর ৩০ হতে ৩৫ দিন পর হতেই শশা সংগ্রহ করা যায়। সর্বোচ্চ ৭৫ হতে ১২০ দিন পর্যন্ত শশার গাছ হতে কয়েকবার শশা সংগ্রহ করা যায়। শশার ফলন বিঘা প্রতি ৪৫ হতে ৬০ মণ পর্যন্ত হয়ে থাকে। 

বর্তমানে বাজারে প্রতিমণ শশা ১২০০ টাকা হতে ১৬০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি বিঘা জমিতে শশার উৎপাদন খরচ হয় ২০ হতে ৩০ হাজার টাকা। এ হিসাব অনুযায়ী প্রতি বিঘা জমি হতে শশা বিক্রি করে কৃষকের ৩০ হতে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ হওয়া সম্ভব। তবে শশার লাভ একেবারেই বাজারের দামের উপর নির্ভরশীল।  

উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের পাকেরদহ  চরের চাষী মালেক মিয়া জানান, গত কয়েকবছর হলো আমি শশার চাষ করি। দাম ভাল থাকলে ভালই লাভ হয়। করোনার জন্য গত দুই বছর বাজারে শশার দাম কমই পেয়েছি। দাম কম থাকায় গত বছর শশাচাষে লোকশান হয়েছিল। জমিতে এ বছর শশার ফলন খুবই ভাল হয়েছে। বাজারে শশার দামও ভাল শোনা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে এ বছর মোটামুটি ভালই লাভ হবে। এ বছর আমি আমার ৪ বিঘা জমিতে শশার আবাদ করেছি।

একই ইউনিয়নের টেংরাকুড়া চরের শাহ আলম জানান, তিনি প্রতিবছর শশার চাষ করেন। গত বছর শশার ভাল দাম পাননি। দাম ভাল না পাওয়ায় এ বছর কম জমিতে শশার চাষ করেছেন। এরপরও তিনি তার ৩ বিঘা জমিতে শশা লাগিয়েছেন। এখন তার জমিতে শশার গাছগুলো জমি হতে এক ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়েছে। 

উপজেলায় এ বছর শশার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১০০ হেক্টর। অর্জন হয়েছে মাত্র ৩০ হেক্টর। ৩০ হেক্টরের মধ্যে শুধুমাত্র চরাঞ্চলেই ২০ হেক্টর জমিতে শশার চাষ হয়েছে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম জানান, প্রতি বছরের তুলনায় এ বছরও কৃষকরা শশার চাষ করেছেন। ফলন মোটামুটি ভাল হয়েছে। করোনার কারণে দাম কম থাকায় গত বছর কৃষকরা শশাতে লোকসানে পরেছিল। তাই এ বছর শশার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি। তবে এখন বাজারে শশার ভাল দাম থাকায় কৃষকরা আবারও শশাচাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। 


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর