১২ মার্চ, ২০২২ ১৬:৪৭

আত্রাই নদ খননে প্রাণ ফিরবে কৃষিতে

নাটোর প্রতিনিধি

আত্রাই নদ খননে প্রাণ ফিরবে কৃষিতে

নাটোরের সিংড়ার চলনবিলের শস্য উৎপাদন এবং বন্যার পানি নিষ্কাশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ আত্রাই নদ। নদে পলি পড়ে ভরাট হওয়ার কারণে অল্প পানিতেই বন্যা হচ্ছিল। দীর্ঘদিন পর হলেও খননকাজ শুরু হয়েছে আত্রাই নদে। এতে করে নদের নাব্যতা ফিরে আসার পাশাপাশি কৃষি এবং মৎস্য খাতে প্রাণ ফিরে আসবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁ জেলার সীমানা দিয়ে সিংড়া হয়ে সিরাজগঞ্জের হুরাসাগরে গিয়ে মিলিত হয়েছে আত্রাই নদ। এটি চলনবিলের সিংড়া, পাবনার বেড়া, সিরাজগঞ্জের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত হয়েছে। এই নদ ঘিরে চলনবিলের শস্য, মৎস্য উৎপাদনের ভাণ্ডার বলা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন নদে পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। নদকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য এবং শস্য উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটছিল। 

বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ জানায়, আত্রাই নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে নাটোরের সিংড়া, গুরুদাসপুর এবং আত্রাই উপজেলা মিলে নদের মোট ৪৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে খননকাজ চলছে। ৪৮ কোটি ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির এর মধ্যে ২৫ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং এবং ১০ লাখ ঘনমিটার খনন করা হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, সিংড়া পৌরসভার শোলাকুড়া এলাকায় আত্রাই নদে ড্রেজিংয়ের কাজ চলছে। আর ড্রেজিংয়ের মাটি দিয়ে বন্যায় প্রায় ২৫০ মিটার ভাঙন পূরণ করা হচ্ছে। এতে সেখানে নদের পানির তোড়ে বিলীন হয়ে যাওয়া অর্ধশতাধিক পরিবার নতুন করে আবারও বাঁচার স্বপ্ন দেখছে।

স্থানীয় কৃষক আবদুর রাজ্জাক বলেন, আত্রাই নদ খননে নাব্যতা ফিরে আসবে। এতে শস্য উৎপাদন ও মৎস্য উৎপাদনের পাশাপাশি নদীপথে যোগাযোগ বাড়বে।

চকসিংড়া এলাকার কৃষক এন্তাজ আলী প্রামাণিক বলেন, নদী খননের ফলে চলনবিলের কৃষি এবং কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। খরা মৌসুমে তাদের ধান চাষ করার সময় জমিতে পানি সেচ দিতে অতিরিক্ত খরচ করেও বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হতো, কিন্তু নতুন করে নদী খননের ফলে পানি সেচ অনেকটা সহজলভ্য হয়েছে।

বালুভরা মহালের কৃষক আনোয়ার হোসেন বাবু বলেন, নতুন করে নদী খননের ফলে একদিকে কৃষকেরা যেমন উপকৃত হচ্ছেন, তেমনি মাছ শিকারিরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন।

মাছ ব্যবসায়ী দাউদার রহমান বলেন, আত্রাই নদে পলি পড়ে ভরাট হওয়ার কারণে অল্প পানিতেই বন্যা হতো। খরা মৌসুমে নদী শুকিয়ে গেলে তার মতো মাছ শিকারিদের জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়ত। তবে দীর্ঘদিন পর হলেও খননকাজ শুরু হয়েছে। নদী খননের ফলে বারো মাস মাছ শিকার করতে পারবেন।

বিআইডব্লিউটিএর কারিগরি সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আত্রাই নদের ড্রেজিং ও খননকাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আত্রাই নদের খননকাজ শেষ হলে নাব্যতা বৃদ্ধি, সেচ সুবিধাসহ হাজারো কৃষক এর সুফল পাবেন।


বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর