৫ এপ্রিল, ২০২২ ১৭:০৯

চাষাবাদে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন গৃহবধূ স্বপ্না

সাইফুল ইসলাম বেগ, বিশ্বনাথ (সিলেট)

চাষাবাদে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন গৃহবধূ স্বপ্না

কিশোরীকাল থেকেই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন স্বপ্না। নিজে স্বাবলম্বী হবার পাশাপাশি, ইচ্ছে ছিল পরিবারের দুঃখ ঘোচানোর। কিন্তু মা-বাবার অভারের সংসারে, বেশি দূর আগ্রসর হয়নি সে স্বপ্ন। পাঠশালার গণ্ডি পেরিয়েই দরিদ্রতার কষাঘাতে চাপা পড়ে সকল ইচ্ছে, হোঁচট খায় স্বপ্ন। পরে কন্যাভারগ্রস্ত পিতার অনুরোধে স্বপ্নাকে বসতে হয় বিয়ের পিঁড়িতে। বিয়ের পর কিছুদিন সুখ-শান্তিতে কাটে সাংসারিক জীবন। এক পর্যায়ে প্রবাস ফেরত স্বামী উর্পাজনে অক্ষম হলে, তার জীবনে নেমে আসে চরম হতাশা। এরপর ফের অদম্য ইচ্ছে শক্তি কাজে লাগিয়ে জীবন যুদ্ধে ঘুরে দাঁড়ান তিনি। এখন প্রতি মাসে মাছ-সবজি চাষ ও ছাগল পালন থেকে দ্বিগুন আয় করছেন তিনি। মৎস্য অধিদপ্তর থেকে অর্জন করে নেন সফল মৎস্যচাষীর সম্মাননা স্বারকও।   

পুরো নাম স্বপ্না আক্তার হেনা (৩৮)। তিনি উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের বাসিন্দা সায়েদ আলীর স্ত্রী। পারিবারিক জীবনে ১ ছেলে ও ২ মেয়ের জননী। বর্তমানে তিনি মাছ, সবজি চাষ ও ছাগল পালনে সাবলম্বী। 

তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অসুস্থ হয়ে দেশে ফিরে উর্পাজনে অক্ষম হয়ে পড়েন স্বামী। প্রথমে আত্মীয়-স্বজনদের সাহায্য-সহযোগীতায় সংসার চললেও, এক পর্যায়ে একেবারে অচলাবস্থা দেখা দেয়। তখনই নিজের ইচ্ছে শক্তি কাজে লাগিয়ে বাড়ির পুকুরে প্রথমে মাছ চাষ শুরু করি। এনজিও সংস্থা ‘সূচনা’ থেকে প্রশিক্ষণ ও পুঁজি নিয়ে প্রথমেই করেন দ্বিগুণ লাভ। এরপর বাড়ে তার মাছ চাষের পরিধি। লাভের টাকায় খরিদ করেন ৩টি ছাগলও। পাশাপাশি পুকুর পাড়ে শুরু করেন কেরেলা, চাল কুমড়ো, বরবটি, শিম, কদুসহ বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ। মাছ ছাষ ছাড়াও এ থেকে প্রতি মাসে আয় করছেন তিনি ৭-৮ হাজার টাকা। বর্তমানে ছেলে-মেয়েদের পড়া-লোখা ও সংসার চলে তার আয়েই। গত দু’বছর ধরে সাবলম্বী তিনি।  

স্বপ্না বলেন, দূরবস্থার সময় স্বজনদের কাছে বারবার চাইতেও লজ্জা হতো। প্রবল ইচ্ছে শক্তি আর পরিশ্রমই আজকে আমাকে সফলতা এনে দিয়েছে। 

এ বিষয়ে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান বলেন, নারীরাও এখন পুরুষের পাশাপাশি উদ্যোক্তা, চাকরি ও ব্যবসায় সাফল্যের স্বাক্ষর রাখছে।  প্রবল ইচ্ছে আর সঠিক নিয়মে কঠোর পরিশ্রম করলে, সাফল্য নিশ্চিত। গৃহবধূ স্বপ্নাই এর বাস্তব উদাহরণ। তার মতো অন্যরাও এগিয়ে এলে, পরিবারে পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি অর্থনৈতিক মুক্তিও ঘটবে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর