২২ এপ্রিল, ২০২২ ১৭:১১

কলা চাষে ভাগ্যবদল কয়েক হাজার কৃষকের

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

কলা চাষে ভাগ্যবদল কয়েক হাজার কৃষকের

একবার কলার চারা রোপণ করে দুই বছরে তিনবার ফলন পাওয়া যায়। খরচ কম লাভ বেশি তাই বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার চারটি ইউনিয়ন চিংড়াখালী, রামচন্দ্রপুর, বনগ্রাম ও হোগলাপাশায় কলা চাষিরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি নিজেদের ভাগ্য বদলে সুদিনে ফিরেছে। মাটি ও আবহাওয়া কলা চাষের উপযুক্ত তাই দিনদিন মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় কলার আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোড়েলগঞ্জে এই কলা চাষ, ব্যবসা ও পরিবহনের সাথে জড়িত রয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। দেশব্যাপী মোড়েলগঞ্জে উৎপাদিত কলার চাহিদা ভাল থাকায় দিনদিন কলা চাষের আবাদ বাড়ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা পূরন করে সড়ক পথে ট্রাক যোগে এ কলা যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

ট্রাকযোগে কলা নিতে আসা ঢাকা কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ি আনোয়ার পারভেজ জানান, মোরেলগঞ্জের কলা খেতে সুস্বাধু হওয়ায় ঢাকায় এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কারওয়ান বাজার মোকামে অনেক ফরিয়া এসে মোড়েলগঞ্জের কলার খোঁজ করেন। ঢাকায় মোড়েলগঞ্জের কলা এখন ব্যান্ডে রূপ নিয়েছে। প্রতি সপ্তাহে ৫ থেকে ৬ ট্রাক কলা ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করা হয়। এভাবে অনেক ব্যবসায়ী মোড়েলগঞ্জ থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কলা নিচ্ছেন।

কলা চাষি হামিদুল কাজী জানান, কলা চাষে তেমন কোন রোগবালাই নেই তবে ঝড় হলে কলাগাছ ভেঙে ক্ষতি হয়। মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের চাষি আতাউর রহমান জানান, প্রথমদিকে একবিঘা জমিতে কলা চাষ করেছিলেন। ভালো লাভ হওয়ায় পরে আবারো দুই বিঘা জমিতে চাষ শুরু করেন। এরপর থেকে কলার আবাদ প্রতিবছরই বাড়াচ্ছেন। 

কলা চাষ করে মোড়েলগঞ্জ উপজেলার চারটি ইউনিয়ন চিংড়াখালী, রামচন্দ্রপুর, বনগ্রাম ও হোগলাপাশার কয়েক হাজার মানুষের ভাগ্য বদলে সুদিনে ফিরেছে।

মোড়েলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সিফাত আল মারুফ জানান, কলা চাষ লাভজনক হওয়ায় মোড়েলগঞ্জের চাষিরা কলা চাষ করছেন। এখানে অনুপম, সাগর, সবরি, চিনিচাম্পা, উন্নত জাতের কাঁচকলা, আনাজিসহ বিভিন্ন প্রজাতির কলা চাষ হচ্ছে। গত মৌসুমে মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় কলা চাষ হয়েছিল ১ হাজার ৭ শত হেক্টর জমিতে। উপজেলার চারটি ইউনিয়ন চিংড়াখালী, রামচন্দ্রপুর, বনগ্রাম ও হোগলাপাশায় কলা সুস্বাধু হওয়ায় মোড়েলগঞ্জের কলা এখন ব্যান্ডে রূপ নিয়েছে। সে কারণে চলতি মৌসুমে কলা আবাদে জমির পরিমান আরো ৭৫০ হেক্টর বেড়েছে। আগামী মৌসুমে এ চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে। কৃষি বিভাগ কলা চাষে সব ধরনের সহযোগিতার পাশাপাশি একই জমিতে দুই অথবা তিন বছরের বেশি সময়ে কলার চাষ না করতে চাষিদের বলা হয়েছে। এতে জমির উবরতা শক্তি মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। দুই বছর কলার চাষ ও পরের বছরে আবার অন্য যেকোন সবজি আবাদের পর আবারো কলার চাষের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর