২১ আগস্ট, ২০২২ ১১:০০

নিমপাতার রস ও মেহগনির বীজে নিরাপদ সবজি

কুমিল্লা প্রতিনিধি

নিমপাতার রস ও মেহগনির বীজে নিরাপদ সবজি

ছবি- বাংলাদেশ প্রতিদিন।

কুমিল্লায় নিমপাতার রস ও মেহগনির বীজের রস দিয়ে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করা হচ্ছে। জেলার বুড়িচং উপজেলায় এই প্রক্রিয়ায় সবজি চাষ করতে দেখা গেছে। জৈব বালাইনাশক নামক এই প্রক্রিয়া বেশি ব্যবহার হচ্ছে উপজেলার এতবারপুর ও দক্ষিণগ্রামে। এতবারপুর গ্রামে নিম পাতা আর সীমান্তবর্তী দক্ষিণগ্রামে ব্যবহৃত হচ্ছে মেহগনির বীজের রস।

এতবারপুর ও দক্ষিণগ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা পোকা দমনে আগের মতো কীটনাশক ব্যবহার করছেন না। গাছের পাতার আর বীজের রস দিয়ে জৈব বালাইনাশক তৈরি করছেন। তা ব্যবহার করে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করছেন। জমিতে উৎপাদন হচ্ছে বিষমুক্ত শশা, বেগুন ও ঢেঁড়সসহ নানা সবজি। এই গ্রামের কৃষকদের সবজির প্রতি আগ্রহী ক্রেতারা। এতে ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা।

এই কার্যক্রমের পরিকল্পনাকারী অতিরিক্ত উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায় জানান, গত বছরের নভেম্বর মাসে কৃষক পর্যায়ে জৈব বালাইনাশক তৈরি ও তা ব্যবহার করে নিরাপদ সবজি উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। চারটি গ্রামের কৃষকদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। পাঁচ মাসের প্রশিক্ষণে আশানরুপ সাফল্য আসে ভারেল্লা দক্ষিণ ইউনিয়নের এতবারপুর ও রাজাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গ্রামে। এতবারপুর গ্রামে নিমের নির্যাস আর সীমান্তবর্তী দক্ষিণগ্রামে ব্যবহৃত হয় মেহগনির বীজ। তার মধ্যে, দক্ষিণগ্রামের আটজন কৃষক সাত মেট্রিক টন নিরাপদ সবজি উৎপাদন করেন। 

দক্ষিণগ্রামের কৃষক আব্দুল মালেক ও রফিক মিয়া জানান, শুরুতে তারা মেহগনির বীজ থেকে তৈরি জৈব বালাইনাশকে কাজ হবে বা ফসলের কোন ক্ষতি হবে কিনা এনিয়ে আশ্বস্ত হতে পারছিলেন না। স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. মুজিবুর রহমান ও উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা দুই দফা উঠান বৈঠক ও আলোচনা সভার আয়োজন করেন। জৈব বালাইনাশক তৈরির হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। মাঠে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন পোকামাকড় ও রোগ চেনান। এখন গ্রামের প্রায় সবাই পোকা দমনে মেহগনির বীজের রস ব্যবহার ব্যবহার করেন। 

কৃষক সুমন মিয়া জানান, পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় প্রচুর মেহগনি বীজ পাওয়া যায়। সবাই যার যার প্রয়োজন মতো জোগাড় করে নেন। গাছে এখন নতুন ফল আসছে, আগামী শীতের জন্য সবাই সংগ্রহ করবো।

উপজেলা কৃষি অফিসার মোছা. আফরিনা আক্তার জানান, কৃষকদের নিরাপদ সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করাটা বেশ কষ্টসাধ্য। তবে আমাদের এ পথে যাওয়া ছাড়া বিকল্প উপায় নেই। ভোক্তা পর্যায়ে নিরাপদ সবজি গ্রহণের সচেতনতা ও নিরাপদ সবজির ভালো দাম নিশ্চিত করা গেলে কৃষক পর্যায়ে আগ্রহ বাড়বে। মাঠে কর্মরত উপসহকারী কৃষি অফিসাররা নিরাপদ সবজি উৎপাদনে কাজ করে যাচ্ছেন।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর