২১ আগস্ট, ২০২২ ১৯:২৯

বগুড়ায় ন্যায্য মূল্যে সার পেয়ে খুশি আমন চাষিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ায় ন্যায্য মূল্যে সার পেয়ে খুশি আমন চাষিরা

বগুড়ায় কৃষকদের দুর্ভোগের সংবাদের পর জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হকের হস্তক্ষেপে সার পেলো আমন চাষিরা। জেলার ১২টি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণের তদারকিতে ডিলারদের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে সার বিতরণ করা হয়েছে। ন্যায্য মূল্যে সার পেয়ে আমন চাষিরা খুশি হয়ে ঘরে ফিরেছে। 

তেলের দাম বৃদ্ধিতে, সারের সংকট সৃষ্টি হবে এ ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়ায় কৃষকরা সারের জন্য ভিড় করতে থাকে। আবার কোথাও কোথাও ডিলাররা সার উত্তোলন করেও বিক্রি বন্ধ রাখে। ডিলাররা বেশি দামে বিক্রির চেষ্টা করে আসছিল। ডিলারদের দোকানগুলোতে আমন চাষিদের ভিড় দেখে ডিলাররা এই অপচেষ্টা করে। সংবাদ পেয়ে জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক উপজেলা নির্বাহী অফিসারদেরকে সার সুষ্ঠুভাবে বিক্রি ও কৃষকরা যেন ন্যায্য মূল্যে সার পায় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেন। এরপর রবিবার বগুড়ার সার বিক্রির ব্যবস্থাপনায় চমক আসে। জেলার ১২টি উপজেলায় ডিলাররা সুষ্ঠুভাবে সার বিক্রি শুরু করে।

বগুড়া বিসিআইসি বাফার গুদাম এর হিসাব রক্ষক মো. আহসান হাবীব জানান, জেলায় আগস্ট মাসে ইউরিয়া সারের চাহিদা ছিল ৯ হাজার ৩৫৫ মেট্রিক টন। এরমধ্যে ডিলাররা সার উত্তোলন করায় এখন আছে প্রায় ১ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। দুই একদিনের মধ্যে এটিও ডেলিভারি হয়ে যাবে। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের জন্য এখন পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার ৫০০ মেট্রিক টনের চাহিদা আছে। বগুড়ায় চাহিদার বেশি সার আছে। সার নিয়ে জেলায় কোন সমস্যা হবে না। 

তিনি বলেন, ডিলাররা ১ হাজার টাকা করে বস্তা প্রতি দাম দিয়ে কিনেছে। শুনেছি কৃষক পর্যায়ে ১১০০ টাকা করে বিক্রি করছে। জেলায় ১৬৩ জন ডিলার রয়েছে। যারা নিয়মিত সার উত্তোলন করে বিক্রি শুরু করেছে। 

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউপির পারতিত পরল গ্রামের কৃষক আব্দুল হামিদ বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ইউরিয়া সারের জন্য ঘুরতে হয়েছে। রবিবার সদরের ডিলারের কাছে থেকে ইউরিয়া সার খুব সহজে পাওয়া গেল। সার না পেয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম, এখন সার পেয়ে ভালো লাগছে।

সারিয়াকান্দি কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, উপজেলায় ১৪ জন ডিলারের মাধ্যমে কৃষকদের সার বিতরণ চলছে। এ চালানে আমরা ৮৪৫ মে. টন ইউরিয়া সার ডিলারদের মাঝে বিতরণ করেছি। প্রতিটি ডিলারদের সাথে আমাদের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার বিক্রয়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং অব্যাহত রেখেছেন। ফলে প্রকৃত কৃষকরাই সার পাচ্ছেন। উপজেলায় সারের কোনো সংকট নেই।

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, মূলত সারের কোন সংকট সারিয়াকান্দিতে নেই। কৃষকদের অতিরিক্ত সার কেনার প্রবনতা থেকে ২/১ টা ইউনিয়নে ডিলারের সার দ্রুত শেষ হয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট ডিলার নতুন সার তোলায় এখন থেকে সারের অভাব হবে না।

বগুড়া জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক জানান, বগুড়ায় ইউরিয়াসহ সকল প্রকারের সার অতিরিক্ত আছে। কিছু মানুষ সার প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কিনে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে অপচেষ্টা করেছিল। বিষয়টি জানার পরপরই জেলার ১২ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করা হলে বিষয়টি দ্রুততার সঙ্গে তদারকি করায় প্রকৃত কৃষকরা সার পাচ্ছেন। আমাদের প্রচেষ্টা হলো কেউ যেন বেশি দামে সার বিক্রি না করে আবার কেউ যেন অতিরিক্ত সার কিনে মজুদ না করে। আমন মৌসুমে চাষিরা যেন সুষ্ঠুভাবে সার পায় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর