রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কল্যানী ইউনিয়নের বুলবুল মিয়া ২ একর জমিতে পাট আবাদ করে ফলন পেয়েছেন ৪০ মণ। প্রতি মণ ২ হাজার ৮০০ টাকা দরে বিক্রি করে পেয়েছেন এক লাখ টাকা উপর। একই পরিমান জমি থেকে পাটখড়ি পেয়েছেন ৭০ মণের উপর। পাটখড়ি বিক্রি করে তার ঘরে আসবে আরও ৩৫ হাজার টাকার বেশি। যা তিনি তার মেয়ের বিয়ে জন্য রেখে দিবেন। বুলবুলের মত রংপুর বিভাগের কয়েক লাখ পাট চাষি তাদের উৎপাদিত ফসলের ভালো দাম পাওয়ায় তারা বেশ খুশি।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় ৫১ হাজার ৬২৭ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এর মধ্য রংপুরে ৯ হাজার ২৫৫ হেক্টরে, গাইবান্ধায় ১৫ হাজার হেক্টর, কুড়িগ্রামে ১৬ হাজার ৫৭৭ হেক্টর, লালমনিরহাটে ৪ হাজার ৮৫ হেক্টর এবং নীলফামরী জেলায় ৬ হাজার ৭১০ হেক্টর জমিতে দেশী, তোষা, মেস্তা এবং কেনাফ জাতের পাট চাষ হয়েছে। সেই হিসেবে এবারে ৬ লাখ ২ হাজার বেল পাট উৎপাদন হবে।
কৃষি অফিসের সূত্র মতে, প্রতি হেক্টরে পাটের উৎপাদন হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ মণ । প্রতি মণ পাট বিক্রি হয়েছে সর্বনিম্ন ২ হাজার ৮’শ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। সেই হিসেবে পাট বিক্রি হবে ৯২৮ কোটি টাকার উপর। অপরদিকে প্রতিমণ পাটখড়ি বিক্রি হয়েছে গড়ে সাড়ে ৪’শ থেকে ৫০০ টাকা। প্রতি হেক্টর জমির পাটখড়ি বিক্রি হয়েছে ৩০ হাজার টাকার উপরে। সেই হিসেবে এ অঞ্চলের চাষিরা পাটখড়ি বিক্রি করবেন ১৫৪ কোটি টাকার ওপর। পাট ও পাট খড়ি বিক্রি করে ১১’শ কোটি টাকার ওপরে ঘরে তুলবে এ অঞ্চলের কৃষকরা।কাউনিয়ার চাষি আফজাল হোসেন জানান, পাট আবাদ করে তারা ২ ধরনের লাভ পাচ্ছেন। তা হলো ভালো দামে পাট বাজারে বিক্রি করা এবং পাটখড়িও বেশ চাহিদা থাকায় তা বিক্রি করেও লাভবান হচ্ছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি ঢাকার ডিএই অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আবু সায়েম জানান, গত কয়েক মৌসুম থেকে পাটের বাজার দর বৃদ্ধি পাওয়ায় এ অঞ্চলে সোনালী আশ পাটের সুদিন ফিরে আসতে শুরু করেছে। চাষিরা এখন পাটের উপর নির্ভরশীল। অনেক চাষি পাট ঘরে তোলার পর তা বিক্রি করে ছেলে মেয়ের বিয়ে, ধার দেনা শোধ অথবা অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করতে পারছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল