রুপালি বোচা মাছ অনেকেরই প্রিয়। পঞ্চগড়ের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ৪৬টি নদী। এদের মধ্যে প্রধান নদী হিসেবে ধরা হয় মহানন্দা আর করতোয়াকে। এই দুটি নদীতেই পাওয়া যায় বোচা মাছ। জেলে এবং স্থানীয়রা বলছেন, একদশক আগেও প্রচুর পরিমাণে এই মাছ পাওয়া যেতো। এক একটি মাছের ওজন আধা কেজি থেকে ১ কেজি হতো। কিন্তু এখন বোচা মাছের আকৃতি খুব ছোট হয়ে গেছে।
করতোয়া নদীতে বোরোর আবাদ বেড়ে যাওয়ার ফলে প্রচুর পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহৃত হয়। নদী ভরাট হয়ে যাবার ফলে গ্রীষ্মকালে পানিও কমে যায়। পানি কমে যাবার ফলে বংশ বৃদ্ধি করতে পারছে না এই মাছ। বোচা মিঠা পানির মাছ। বোচা মাছের আবাস সাধারণত নদীতে। স্রোতময় নদীর পানিতে এরা ঝাঁক বেঁধে চলাফেরা করে। মাছটি ভ্রমণপ্রিয়। মাছটি নদী থেকে প্লাবনভূমি এবং প্লাবনভূমি থেকে নদীতে বেশি আনাগোনা করতে ভালোবাসে। এরা বর্ষাকালে নদীতে প্রজনন করে। রাত্রিকালে সাধারণত খাদ্য গ্রহণ বেশি করে থাকে।
বাংলাদেশের পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও মেঘনা নদ এবং কাপ্তাই হ্রদে বোচা মাছ পাওয়া যায়। চলনবিল এলাকাতেও পাওয়া যায়। কিন্তু মাছটি বিলুপ্তির পথে ।তেঁতুলিয়া উপজেলার ভদ্রেশ্বর এলাকার জেলে শাহাবুদ্দিন শাহা জানান, করতোয়া নদীতে আগে বোচা মাছ খুব পাওয়া যেতো। এখন পাওয়া যায় না। কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা, নদীতে সার কীটনাশকের ব্যবহার, পাথর উত্তোলনসহ নানা কারণে নদীর দেশি মাছ হারিয়ে যাচ্ছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ সিরাজী জানান, বোচা মাছ অত্যন্ত সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর মাছ। মাছটি এ অঞ্চল থেকে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। মাছটি নিয়ে এখনো গবষেণা শুরু হয়নি । তবে অচিরেই কৃত্রিম প্রজনন নিয়ে গবেষণার কথা রয়েছে। আপাতত আমরা স্থানীয় অধিবাসী এবং জেলেদের ডিমওয়ালা মাছ না ধরার পরামর্শ দিচ্ছি।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা