শিরোনাম
৭ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৩:৫৫

হারিয়ে যাচ্ছে খেজুরের গুড়

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

হারিয়ে যাচ্ছে খেজুরের গুড়

মানিকগঞ্জ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুরের গুড়। নির্বিচারে খেজুরগাছ নিধন, নতুন করে চারা রোপণ না করা নদী ভাঙ্গনসহ নানাবিধ কারণে মানিকগঞ্জ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ব্রান্ডিং পণ্য হাজারির গুড়সহ লাল গুড়। এক সময় জেলার সর্বত্রই খেজুরের গাছ ছিল। রাস্তার দু’পাশে বাড়ির আঙ্গিনাসহ সর্বত্রই খেজুরের গাছ চোখে পড়তো। হরিরামরামপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি খেজুরের গাছ ছিল। এ অঞ্চলের  হাজারি গুড়ের সুনাম দেশ ছাড়িয়ে বহিঃবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।

এলাকার গুড়ের ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে কিছু অসাধু লোকজন চিনির সাথে চুন ও রং মিশিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। প্রতিবছর প্রশাসন অভিযান চালিয়ে জরিমানাসহ ভেজাল গুড় ধ্বংস করে যাচ্ছে। তার পরেও থামছে না ভেজাল গুড় তৈরি। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে মানিকঞ্জের গুড়ের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে।

সদর উপজেলার বালিয়াবিল এলাকার আলীম মেম্বার বলেন, একসময় এলাকায় প্রচুর খেজুর গাছ ছিল। আমাদের বাড়িতেই ছিল দুইশত গাছ। এখন মাত্র ৩৫/৩৬টি গাছ আছে। জ্বালানির অভাব, গাছির (গাছ কাটার লোক) অভাবসহ বিভিন্ন কারণে খেজুর গাছের প্রতি আগ্রহ কমছে। ইটভাটায় গাছ পোড়ানো হয়। কিন্তু গাছ রোপণ করা হয়নি। যার কারণে গাছের সংখ্যা দিনে দিনে কমে যাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গুড় উৎপাদনকারীরা বলেন, এলাকায় খেজুরের গাছ নাই বললেই চলে। তারপরেও দেদারসে গুড় তৈরি হচ্ছে। চিনির দামের সাথে গুড়ের দাম নির্ধারণ হয়। কারণ গুড়ের বেশিরভাগ চিনি। এক কেজি হাজারির গুড় দুই হাজার টাকার কমে বিক্রি করা যায় না। আর লাল গুড় কমপক্ষে একহাজার টাকা কেজি। অথচ বাজারে এক হাজার টাকা কেজি দরে হাজারি গুড় ও দেড় থেকে দুইশত টাকায় লাল গুড় বিক্রি হয়।

রাজশাহী বাঘা এলাকা থেকে খেজুর গাছ কাটতে আসা মামুন ও জামাল বলেন, প্রতিটি গাছ দেড় কেজি গুড়ের বিনিময়ে ভাড়া নেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর এ মৌসুমে মানিকগঞ্জ থেকে রস সংগ্রহ করে গুর তৈরি করে বিক্রি করি। গাছ কম বলে সুবিধা হচ্ছে না।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু মোহাম্মদ এনায়েত উল্লাহ বলেন, এক সময় মানিকগঞ্জের হাজারি গুড়ের সুনাম বিদেশেও ছড়িয়ে পড়ে। নদী ভাঙন, জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার, নতুন করে চারা রোপণ না করাসহ বিভিন্ন কারণে খেজুরের গাছ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তবে আমাদের পরামর্শে কিছু কিছু জায়গায় নতুন করে চারা রোপণ করা হয়েছে। যে সকল স্থানে কৃষি পণ্য উৎপাদন ব্যাহত হবে না সে সকল স্থানে খেজুরের চারা রোপণের পরামর্শ দেওয়া হয়। খেজুর গাছ একদিকে  মাটির ক্ষয়রোধ করে অন্যদিকে পরিবেশ রক্ষায় খুবই কার্যকর। তিনি সকলকে বেশি করে খেজুর গাছ লাগানোর পরামর্শ দেন। 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর