হলুদ সোনা। কোদাল ও শাবলের কোপে মাটির নিচ থেকে উঠে আসছে। এই দৃশ্য দেখে প্রতিবেশীরা মন্তব্য করছেন-মতিন মিয়া ঘরের পিছনে গুপ্তধন পাওয়া গেছে। চাষি হলুদ ভেঙে দেখছেন। শীতের সকালের সূর্যের মিষ্টি আলোয় হলুদের সোনা রঙ আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। জমিতে ছড়িয়ে পড়েছে মিষ্টি ঘ্রাণ।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা গ্রামে গিয়ে এই দৃশ্য দেখা যায়। কুমিল্লার ১৭ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অবহেলায় পড়ে থাকা পতিত জমিতে এবার বারি-৪,পাটনাই,ডিমলা জাতের হলুদের চাষ হয়েছে।এবার দেশি হলুদের তিনগুণ ফলন পেয়েছেন চাষিরা। অনাদরে পড়ে থাকা জামিত এই ফসল পেয়ে খুশি তারা। অনাবাদি পতিত জমি ও বসতবাড়ির আঙ্গিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রকল্পের আওতায় এই হলুদ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রমতে, প্রতি বিঘা জমিতে কৃষকের খরচ ১৮-২০ হাজার টাকা। ফসল হয় ৪ টনের মতো। কাঁচা হলুদ ৪ টনের বাজার মূল্য ৭০-৮০ হাজার টাকা। এতে কৃষক বিষা প্রতি মৌসুমে ৫০-৬০ হাজার টাকা লাভ করতে পারেন।
ভারেল্লার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফখরুল আলম ভূইয়া ও পূর্ণমতির উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিলকিস আক্তার বলেন, ঘরের পেছনে গাছতলায় অনেকে হলুদ চাষ করেছেন। আমরা বীজ ও পরামর্শ দিয়েছি।
বুড়িচং উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা বানিন রায় বলেন, আমরা ছায়াযুক্ত পতিত জমি আবাদের আওতায় আনতে কাজ করছি। সেনিরিখে হলুদ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এবার আমরা ৫টি প্রদর্শনী দিয়েছি। আগামীতে আরো চাষ বাড়বে বলে আশা করছি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, কুমিল্লা গতবার ১১৫ হেক্টর জমিতে হলুদ চাষ হয়েছিলো। এবার তা দাঁড়িয়েছে ১৪০ হেক্টরে। এটি উচ্চ মূল্যের ফসল। যাদের ছায়াযুক্ত পতিত উচু জমি আছে তারা এই হলুদ চাষ করে লাভবান হতে পারেন।
বিডি প্রতিদিন/এএম