১৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৬:৫২

উপকূল এলাকায় সবজি চাষ ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী প্রান্তিক নারীরা

মনিরুল ইসলাম মনি, সাতক্ষীরা

উপকূল এলাকায় সবজি চাষ ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী প্রান্তিক নারীরা

উপকূলীয় এলাকায় সবজি চাষ, ছাগল ও ভেড়া পালন করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে সাতক্ষীরার প্রান্তিক নারীরা। পুরুষ নির্ভর হতদরিদ্র পরিবারের এসব নারীরা শাক-সবজি ও ছাগল-ভেড়া পালন করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি জীবনমান উন্নয়নেও সক্রিয় হচ্ছেন। ফলে স্বচ্ছলতা ফিরেছে এসব হতদরিদ্র পরিবারগুলোতে।  

দক্ষিণ অঞ্চলীয় সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার মাটি লবনাক্ত হওয়ায় ফসল ফলাতে না পেরে হতদরিদ্র পরিবারগুলোর স্বামীরা দেশের বিভিন্ন জেলার ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ এবং ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে রিক্সা ও দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। ফলে এসব পরিবারে নারীদের শুধু স্বামীর উপার্যনের উপর নির্ভর করে সংসার চালতো। কিন্তু বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ এর সহযোগিতা নিয়ে উপকূলীয় আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার নারীরা এখন অনেকটা স্বাবলম্বী। অর্থনৈতিক ভাবেও সমৃদ্ধ। এখন তারা স্বামীর আয়ের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল না থেকে নিজের উপার্জনে পুরো সংসারই পরিচালনা করছেন।  

ট্রানজিশন ফান্ড প্রজেক্ট (এএসডি) এর মাধ্যমে আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়ার বিছট, প্রতাপনগরের গোকুলনগর, সোনাতন কাটি, চাকলা এবং শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পাতাখালী, ঝাপা, সোনাখালী, চন্ডিপুর ও মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের মিরগাং, পার্শেখালী, টেংরাখালী গ্রামের জীবনমান উন্নয়নে গৃহিণীদের ছাগল, ভেড়া প্রদানসহ বিভিন্ন শাক-সবজি বীজ প্রদান করা হয়। এসব ছাগল ও ভেড়া পালন এবং শাক-সবজি চাষ করে নারীরা স্বপ্ন পূরণে সক্ষম হচ্ছেন। 

পদ্মপুকুর ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রামের অরুন মন্ডলের স্ত্রী পুতুল রানী জানান, স্বামীর উপার্জনের উপর নির্ভর করে সংসার চলতো। ফ্রেন্ডশিপের এএসডি প্রকল্পের সহযোগিতা নিয়ে প্রথমে বাড়ির অঙ্গিনায় সবজী চাষ করে সফলতা পেয়েছে। এ মৌসুমে তার সবজি বিক্রি করে ১৪ হাজার টাকা আয় হয়েছে।  সংসারে স্বামীর পাশাপাশি নিজেও অর্থনৈতিক ভাবে স্বচ্ছলতা পেয়েছেন। 

একই ইউনিয়ানের পাতাখালী গ্রামের মোঃ আব্দুল ওয়াহিদের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন জানান, অভাবের সংসারে শুধু স্বামীর আয়ের টাকায় সংসার চলতো। বর্তমানে ফ্রেন্ডশিপ এনজিও সহযোগিতায় ছাগল পালন করে অনেক লাভবান হয়েছেন তিনি। পুকুরের কাকড়া  ও ছাগল পালন করে তিনি এখন স্বাবলম্বী।

শ্যামনগর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. লতিফুল হাসান বলেন, উপকূলের পিছিয়ে পড়া হতদরিদ্র পরিবারের নারীদের স্বাবলম্বী করতে কাজ করছে ফ্রেন্ডশিপ নামে একটি বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা। তারা বিভিন্ন প্রকারের শাক-সবজির বীজ এবং ছাগল ও ভেড়া বিতরণ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তা উপকূলের হতদরিদ্র পরিবারের নারীরা এখন স্বাবলম্বী। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর