দিনাজপুরে ধানের জমিতে এবার লাভজনক ও অর্থকরী মসলা ও ওষুধি গুণ সমৃদ্ধ তেজপাতার বাগান করা হয়েছে। দীর্ঘ মেয়াদী লাভের আশায় বাণিজ্যিকভাবে এই তেজপাতার বাগান করে সাড়া ফেলেছেন মোঃ রহমত আলী।
২০১৭ সালে এক একর ২০ শতক জমিতে ৮০০ তেজপাতা চারা রোপণ করে তিনি। গাছের বয়স দুই বছরের পর থেকে তেজপাতা সংগ্রহ এবং বিক্রি শুরু করেন। এ পর্যন্ত সাড়ে ৩ লাখ টাকার তেজপাতা বিক্রি করেছেন এবং উল্লেখযোগ্য কোন খরচ ছাড়াই বছরে ১ লাখ টাকা আয় সম্ভব বলে জানিয়েছেন রহমত আলী। তিনি আরও জানিয়েছেন, তেজপাতা গাছের পাতা কমপক্ষে ৭০ বছর পর্যন্ত সংগ্রহ ও বিক্রি করা যাবে।
তেজপাতা এ অঞ্চলের মশলার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করে কৃষি বিভাগ।
মো. রহমত আলী জানান, দীর্ঘমেয়াদী আয়ের কারণে ২০১৭ সালে বাণিজ্যিকভাবে এই তেজপাতার বাগান করার কথা চিন্তা করেন। আবার এই তেজপাতা কমপক্ষে ৭০বছর পর্যন্ত পাতা সংগ্রহ ও বিক্রি করা যায়। তাই ধানের ওই জমিতে ৮শ’ তেজপাতার চারা রোপণ করে বাগান গড়ে তোলেন। যতই গাছের বয়স বাড়বে ততই এই পাতা বেশি পাওয়া যাবে। দামও ভাল এবং সাড়া বছরই বিক্রি করা যায়। বর্ষার সময় গাছের পাতা বেশি বৃদ্ধি পায়। একটি গাছে ৫-৭ তেজি পাতা পাওয়া যায়। একসময় এক গাছ থেকেই এক হাজার টাকার পাতা বিক্রি করা যাবে।
তিনি আরও জানান, চারাগাছ রোপণের পর একটি পরিপূর্ণ গাছ দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে পাতা সংগ্রহ করার উপযুক্ত হয়। বছরে দুই থেকে তিনবার গাছ থেকে পাতা সংগ্রহ করা যায়। এক কেজি কাঁচা তেজপাতা ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় বাগান থেকেই। চারা রোপণসহ গাছের যত্নে তিন বছরে প্রায় ৫ লাখ টাকা তার খরচ হয়েছে। ২০২০সাল থেকে তেজপাতা বিক্রি শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে ৩ লাখ টাকার পাতা বিক্রি করেছেন। আগামীতে আরও বেশি বিক্রি হবে বলে তিনি আশা করেন। তেজপাতার বাগানের চারপাশে ৩৫০টি সুপারি গাছ লাগানো আছে। ভবিষ্যতে বাগান সম্প্রসারিত করে বাগানের চারিদিকে রাস্তা করে তেজপাতার বাগানকে একটি পিকনিক স্পট বানানোর পরিকল্পনাও আছে এই কৃষকের।
এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার জানান, লাভজনক ও অর্থকরী এ তেজপাতা চাষের সাফল্য কৃষকের মধ্যে এনে দিয়েছে নতুন প্রেরণা।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল