৮ এপ্রিল, ২০২৩ ১৪:৩৬

হাওরজুড়ে কৃষকদের মাঝে ব্লাস্ট আতঙ্ক

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

হাওরজুড়ে কৃষকদের মাঝে ব্লাস্ট আতঙ্ক

হাওরজুড়ে কৃষকদের মাঝে ব্লাস্ট আতঙ্ক

নেত্রকোনার হাওর অঞ্চলে ধান কেটে আতঙ্কিত কৃষকরা। ধানে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। ঋণ নিয়ে জমি চাষ করে এখন ফসল ঘরে তুলতে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। তবে কৃষি বিভাগের প্লান প্রটেকশন কর্মকর্তা ফসলের এমন রোগের জন্য আবহাওয়াকে দায়ী করছেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, জেলার হাওরাঞ্চলের অন্যতম ডিঙ্গাপোতা হাওর। মোহনগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন জুড়ে এই হাওরের অবস্থান। তেতুলিয়া, মাঘান ইউনিয়নের পাইকুড়াটি, মল্লিকপুর গ্রামসহ প্রায় অর্ধশত গ্রামের কৃষকদের অভিযোগ, ফসলের অর্ধেকে মিলছে ধান, বাকি অর্ধেকে চিটা। ব্রি-২৮ এবং ২৯ সহ নতুন ব্রি-৮৮ সবগুলোতে প্রায় একই অবস্থা।

তেতুলিয়া ইউনিয়নের বেতাই নদীর এপাড়ে বড় পাইকুরাটি গ্রামের নিরঞ্জন পাল ও মালতি রানী কৃষক দম্পত্তি ঘাম ঝরিয়ে কেটে নিচ্ছেন ধান। কিন্তু হতাশার ছাপমাখা মুখে জানান, তাদের এবার মানুষের বাড়িতে কাজ করে দিনানিপাত করতে হবে। ৫ কাঠা জমির প্রায় আড়াই কাঠায় ধানের চিটা। আসল টাকাই উঠবে না। ঋণ পরিশোধ করবে কি করে!

একই অবস্থা জানিয়ে মল্লিকপুর গ্রামের কৃষক অজয় সরকার বলেন, ডিঙ্গাপোতা হাওরের সকল ধান সাদা হয়ে গেছে। বন্যায় না ডুবালেও তারা এবার ব্লাস্ট রোগে নিঃস্ব হবেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (পিপি) এ এম শহিদুল ইসলাম বলেন, দিনে গরম, রাতে ঠাণ্ডা, আবার গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। এগুলো ব্লাস্টের অনুকূল পরিবেশ। এছাড়াও ২৮ জাতের ধানটি পুরনো হয়ে গেছে। তাই আমরা এবার হাওরে এর পরিবর্তে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে ৮৮ নতুন ধানের জাত আবাদ করিয়েছি। এই রোগ দমনে কাজ করছি। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করার কথাও জানান তিনি।

কৃষির অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মো. আব্দুল মালেক জানান, জেলায় এবছর ১ লাখ ৮৪ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে হাওরাঞ্চলে ৪৪ হাজার ৭৬৭ হেক্টর। জেলায় ব্রি-২৮ ধান করা হয়েছে ৩৪ হাজার ২৯৮ হেক্টর। আগামী ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ৫ মে পর্যন্ত চলবে। সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে বন্যার আগেই এবার ধান কাটতে পারবেন বলে জানান। এর জন্য ৭৩০টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও ১৬৬৭৫ জন শ্রমিকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে বিক্ষিপ্তভাবে অনেকে ধান কাটছেন। ব্লাস্টের বিষয়ে বলেন, মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তারা সজাগ আছে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর