২৭ এপ্রিল, ২০২৩ ১৮:০০

ঘরে উঠছে নতুন ধান, খুশি কুমিল্লার কৃষকরা

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা:

ঘরে উঠছে নতুন ধান, খুশি কুমিল্লার কৃষকরা

কুমিল্লার মাঠে দুলছে বিনা ধান-২৫। যাকে কৃষকরা বলছেন আসল মিনিকেট! এই ধানের চাল মিনিকেটের মতো চিকন। স্বাদ ভালো। এর দাম তুলনামূলক ভালো হওয়ায় কৃষকরা এই ধান চাষে ঝুঁকছেন। 

বৃহম্পতিবার এই ধান কাটা নিয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার কুন্দারঘোড়া এলাকায় আয়োজিত কৃষক সমাবেশে এই তথ্য জানানো হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের(বিনা) মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. মিজানুর রহমান ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান গবেষক ড. সাকিনা খানম। সভাপতিত্ব করেন বিনা কুমিল্লা উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. আশিকুর রহমান।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লা ও বিনা কুমিল্লা উপকেন্দ্রের সূত্রে জানা যায়,বাজারে মিনিকেট বলে চিকন চাল দেখা যায়। এটি মূলত মোটা চাল কেটে চিকন করা হয়। এতে পুষ্টি বঞ্চিত হন ভোক্তারা। বিনা ধান ২৫ এর চাল মিনিকেটের মতো চিকন ও লম্বা। এবার কুমিল্লার ১৭উপজেলার ১৮ হেক্টর জমিতে প্রথম এই জাতের ধান চাষ করা হয়। বোরো মৌসুমের অন্য ধান থেকে এর ফলন ভালো। সার ও সেচ কম লাগে। জীবনকালও কম। দাম বেশি হওয়ায় এই ধান চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন কুমিল্লার কৃষকরা। এছাড়া এই ধানের রোগ-বালাইও কম।

সদর দক্ষিণ উপজেলার কুন্দারঘোড়া গ্রামের কৃষক আবু বকর শিবলী ও আবুল কালাম আজাদ বলেন,অন্যবার ধানে ব্লাস্ট রোগ হয়েছিলো। তবে এবার বিনা ধান ২৫ করেছি। রোগ হয়নি। ভালো ফলন পেয়েছি। চিকন ধান নিজেরা খেতে রাখতে চেয়েছি। ফলন ভালো দেখে অন্য কৃষকরা বীজ চাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত নিজেরা মনে হয় রাখতে পারবো না। আগামী বছর আরো বেশি জমিতে এই ধান চাষ করবো।
স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাহিদা খাতুন বলেন, ২৮ ও ২৯ জাতের ধান প্রতি হেক্টরে ৬টন হতো। এবার বিনা ধান ২৫ প্রতি হেক্টরে উৎপাদন হয়েছে সাড়ে ৭টন। ফলন দেখে খুশি আমার ব্লকের কৃষকরা।
বিনা কুমিল্লা উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. আশিকুর রহমান বলেন, ব্লাস্টসহ বিভিন্ন রোগে বোরো মৌসুমের ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছিলো। এনিয়ে কুমিল্লার কৃষকরা চিন্তিত ছিলেন। বিনা ধান ২৫ নতুন জাতের ধান। এটি এবার কুমিল্লার মাঠে চাষ করা হয়েছে। দেখা গেছে এতে ব্লাস্ট আক্রমণ করতে পারেনি। কম সময়ে,কম সেচ ও সারে এটির ভালো ফলন হয়েছে। এদিকে কুমিল্লার মানুষ সৌখিন। তারা চিকন চাল খেতে পছন্দ করেন। তাই এটি এই এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। 
 
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. মিজানুর রহমান বলেন, এবার কুমিল্লার ১৭উপজেলার ১৮ হেক্টর জমিতে প্রথম এই জাতের ধান চাষ করা হয়। এটির ফলন প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। এটির গাছ শক্ত হওয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায়ও ভূমিকা রাখবে। এটি প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ধান। যা বিদেশে রপ্তানি করা যাবে। গাছ লম্বা হওয়ায় এটি থেকে কৃষক বেশি খড় পাচ্ছেন। গবাদি পশুর জন্য খড় পেয়ে খুশি কৃষকরা।

বিডি প্রতিদিন/এএম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর