৬ মে, ২০২৩ ১৫:০৬

রংপুরে সুগন্ধি ধানের চাষ বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুরে সুগন্ধি ধানের চাষ বাড়ছে

ফাইল ছবি

রংপুর অঞ্চলে বিশেষ জাতের ধান থেকে তৈরি সুগন্ধি চাল কৃষি ক্ষেত্রে নতুন বিপ্লব ঘটিয়েছে। মাত্র ৭ বছরে এই ধানের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। সুগন্ধি ধানের জাতগুলোর মধ্যে চিনিগুড়া, কালিজিরা ও কাটারিভোগ ধানের আতপ চালের পোলাও জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। এইসব ধান কৃষি ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। এই চাল এখন বিদেশেও রফতানি হচ্ছে।

রংপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় বোরো এবং আমন মৌসুমে ৩৪ হাজার ৫৯৬ হেক্টর জমিতে সুগন্ধি ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে আমন মৌসুমে রংপুরে ৯৪৮ হেক্টর, গাইবান্ধায় ৭ হাজার ১৪০ হেক্টর, কুড়িগ্রামে ৫ হাজার ১৭০ হেক্টর, লালমনিরহাটে ৩ হাজার ৩৪০ হেক্টর, নীলফামারীতে ৭ হাজার ৩৯৬ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।

অপরদিকে বোরো মৌসুমে রংপুরে ৬৫ হেক্টর, গাইবান্ধায় ২৭৫ হেক্টর, কুড়িগ্রামে ১ হাজার ১৬৫ হেক্টর এবং নীলফামারীতে ১৫০ হেক্টর জমিতে সুগন্ধি ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বোরো মৌসুমে ১ হাজার ৬৫৫ হেক্টর এবং আমন মৌসুমে ৩২ হাজার ৯৪১ হেক্টর জমিতে সুগন্ধি ধান আবাদ হয়েছে।

কৃষি অফিসের তথ্য মতে, বোরো ও আমন মৌসুমে সুগন্ধি ধানের উচ্চ ফলনশীল জাতের মধ্যে রয়েছে ব্রি-৩৪,  বিআর-৫৫, ব্রি ধান-৩৪, ব্রি ধান-৩৭, ব্রি ধান৩৮, ব্রি ধান৭০, ব্রি ধান৮০ এবং স্থানীয় জাতের মধ্যে কাটারিভোগ, কালিজিরা, চিনিগুড়া (জিরাকাটারি), চিনি আতপ, বাদশাভোগ, জটাকাটারি, বেগুনবিচি, ফিলিপিনকাটারি, বাসমিত, বাবুই ভোগ, নুনিয়া,পটলপারি, জামাই সোহাগী, তিলকাপুড়, উকুনমধু, জটাপাইরি, দড়িয়া ও ভোগধান উল্লেখযোগ্য।

ব্রি ধান ৩৪ স্থানীয় সুগন্ধি জাতের ধান চিনিগুড়া বা কালিজিরার মতই অথচ ফলন প্রায় দ্বিগুণ। তাই কৃষকরা এ ধানের আবাদ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। তাছাড়া আলোক সংবেদনশীল হওয়ায় আমনে বন্যাপ্রবণ এলাকায় নাবীতে রোপণ উপযোগী এ ধান। এর কোনো কোনোটি ২ দশমিক ৭ মেট্রিকটন। আবার কোনোটি ৪ থেকে সাড়ে ৪ মেট্রিকটন উৎপাদন হয়। এসব ধান সুগন্ধিযুক্ত এবং খেতেও সুস্বাদু।

অপরদিকে বোরো মৌসুমে সুগন্ধিযুক্ত আধুনিক জাত হচ্ছে ব্রি ধান ৫০ (বাংলামতি)। এ জাতের চালের মান বাসমতির মতই। হেক্টর প্রতি ফলন হয় ৪ মেট্রিকটন। এই ধান বোরো মৌসুমে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ এবং রোপা আমন মৌসুমে ৫-২৫ জুলাই পর্যন্ত বীজতলা করতে হয়। তবে স্বল্প মেয়াদী জাতের ক্ষেত্রে জুলাইয়ের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে রোপণ করার উত্তম সময় বলে মনে করে কৃষি বিভাগ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের বুড়িহাট হটিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু সায়েম জানান, অনেক ক্ষেত্রে এ দেশি অতি উন্নতমানের সুগন্ধি চালের জাতগুলো সম্পর্কে ধারণা ও প্রচারণার অভাব থাকায় নামি-দামি হোটেলে আমাদের জনপ্রিয় সুগন্ধি ধানের পরিবর্তে বিদেশি বাসমতি জাতের চাল ব্যবহার প্রচলন দেখা যায়। বর্তমান সরকার সুগন্ধি চাল রফতানিতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গত কয়েক বছরে এই অঞ্চলে সুগন্ধি ধানের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর