১১ জুলাই, ২০২৩ ১৬:১১

আম্রপালির চাহিদা বেড়েছে, কমেছে ফজলি আমের দাম

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

আম্রপালির চাহিদা বেড়েছে, কমেছে ফজলি আমের দাম

চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজারগুলোতে আম্রপালি আমের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ফজলি আমের দাম কমেছে। এতে করে ফজলি আম চাষবাদ করা বাগানিরা বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, জেলার প্রচলিত আম বাগানে প্রায় ১৫ শতাংশ ফজলি আম গাছের আবাদ হয়।

দেশের বৃহত্তম আমবাজার কানসাট ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে গুটি জাতের আমসহ বিক্রি হচ্ছে ৫ রকমের আম এবং রকমভেদে প্রতি মণ আম বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকা দরে। বাজারে ফজলি আমের দাম থেকে আম্রপালি আমের দামই বেশি। ফজলি বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা মণ দরে। অন্যদিকে আম্রপালি আম বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা মণ দরে।

শিবগঞ্জ উপজেলার শিবনগরের আম বাগানি সিয়াম আহমেদ জানান, কানসাটে বিক্রির জন্য তিনি ৫ মণ ফজলি আম এনেছেন। কিন্তু বাজারে ফজলি আমের চাহিদা কমে যাওয়ায় দীর্ঘ সময় ধরেও বিক্রি হচ্ছে না। মানুষ ফজলি আমের চেয়ে আম্রপালি আম খেতে বেশি পছন্দ করছেন। ফলে আম্রপালির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ফজলি আমের দাম কমে গেছে।

কানসাট-শ্যামপুর এলাকার এক আম ব্যবসায়ী জানান, বাজারে ফজলি ও আম্রপালি আম একসাথে নামার কারণে দাম কমেছে। ফলে দিন দিন ফজলি আমের চাহিদা কম থাকার ফলে লোকসান হওয়ায় চাষিরা বাগান থেকে ফজলি আমের গাছ কেটে ফেলছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক জানান, বাগানের গাছে এখনও ৮০ শতাংশ ফজলি আম ঝুলছে। ফজলি আমের চাহিদা কমে যাওয়ায় দীর্ঘদিন থেকে লোকসান গুনছেন চাষি ও বাগান মালিকরা। তাই যতদিন না ফজলি আম প্রসেসিং করে বাই প্রোডাক্ট (আচার, আমসত্ত্ব জাতীয় খাবার) না করা হবে, ততদিন তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে এখন আম চাষাবাদ হচ্ছে। তবে এখনো চাঁপাইনবাবগঞ্জের উৎপাদিত আম দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশি দামে বিক্রি হয়। কিন্তু দেশের বিভিন্নস্থানে আমের হাট থাকায় সেসব হাটে ব্যাপারীদের আনাগোনা বাড়লেও কানসাট আম বাজারে কমছে। ফলে ফজলি আমের চাহিদা কমেছে, আর চাষিরাও কম দামে আম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, ফজলি আমের দাম বৃদ্ধি করতে বিশ্ববাজারে আম রপ্তানিতে ব্যাপক জোর দিচ্ছে জেলা কৃষি বিপণনের কর্মকর্তারা। ইতিমধ্যে কয়েকজন আম রপ্তানিকারকদের সাথে এসব বিষয়ে কথা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে শিগগির বিদেশের বাজারে রপ্তানি হবে ফজলি আম।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পলাশ সরকার বলেন, আম্রপালি আমের গুণগত মান এবং মিষ্টতার কারণে এর চাহিদা প্রচুর রয়েছে এবং বাগান থেকেই আম বিক্রি করা যাচ্ছে। এছাড়া ঘণ আম বাগানগুলোতে আম্রপালি আমের চাষ বেড়েছে।

তিনি আরও বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৮ হাজার ১৭ হেক্টর জমিতে ফজলি আমের চাষাবাদ হচ্ছে। এতে গাছ রয়েছে ৬ লাখ ১৩ হাজার ৭৩৫টি। অন্যদিকে জেলায় ২ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৪৬ হাজার ১০৫টি গাছে আম্রপালি আম চাষাবাদ হচ্ছে।

উল্লেখ্য, জেলায় এবার মোট ৩৭ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে আম চাষাবাদ হচ্ছে এবং চলতি বছর আমের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

সর্বশেষ খবর