২৫ জুলাই, ২০২৩ ১৬:০৭

হড়াই নদী খনন কৃষিতে আশীর্বাদ

দেবাশীষ বিশ্বাস, রাজবাড়ী

হড়াই নদী খনন কৃষিতে আশীর্বাদ

এক সময়ের মৃতপ্রায় হড়াই নদী দখলমুক্ত করে পুনঃখনন করে সরকার। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চরের পানি ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প-২এর আওতায় ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে হড়াই নদীর ৩২ কিলোমিটার খনন করা হয়। তখন থেকেই কৃষকেরা ধারণা করে ছিল রাজবাড়ীর কৃষিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এই হড়াই নদী। ২০১৯ সালে নদীটি পুনঃখনের পর শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি থাকে। তখন থেকেই কৃষিতে সুবাতাস বইতে শুরু করে নদীকে কেন্দ্র করে। হড়াই নদীটি রাজবাড়ী সদর, কালুখালী ও বালিয়াকান্দির ওপর দিয়ে প্রবাহমান। এ বছর বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বিলে পানি জমেনি। অনেক খালে পানি নেই। তবে হড়াই নদীতে পর্যাপ্ত পানি রয়েছে। এই পানির কারণে হাজার হাজার কৃষকদের পাট নদীতে জাগ দিয়েছেন। নদী খনন কৃষিতে আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।  

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এ বছর রাজবাড়ীতে প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। পাটের  উৎপাদন ভালো হয়েছে। তবে দিন দিন পাটের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। অন্য দিকে বর্ষা মৌসুমে পানি না থাকায় পাট নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার কৃষকেরা। কৃষি বিভাগ বলছেন এই দুর্ভোগ এড়াতে পাটের পরিবর্তে ব্রিআর-৪৮ রোপণ করার জন্য।

আজ মঙ্গলবার সকালে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মূলঘর ও বসন্তপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মাঠে পানি নেই। প্রতি বছর বৃষ্টির পানিতে এসব এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যায়। এ বছর সেসব স্থানে পানি নেই। এই দুই ইউনিয়নের বেশিরভাগ কৃষক হড়াই নদীর মাশালিয়া ব্রিজ এলাকায় পাট জাগ দিচ্ছেন। ঘোড়ার গাড়িতে করে পাট নদীতে ফেলছেন। বালিয়াকান্দির জামালপুর ইউনিয়নের হাতিমোহন, সাঙ্গুরা, বৃমাগুরা এলাকায় শত শত কৃষক নদীতে পাট জাগ দিতে আসছেন।

রাজবাড়ী সদর ইউনিয়নের মাশালিয়া এলাকার কৃষক আশুতোষ সরকার বলেন, গত দুই বছর পাট পঁচানোর সময় বিলে পানি থাকে না। কৃষকদের পাট পচাতে চরম সমস্যা সৃস্টি হয়। হড়াই নদী পুনঃখনন করার প্রায় ২০ হাজার কৃষক নদীতে পাট জাগ দিতে পারছেন। 
বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের কৃষক মোস্তফা শেখ বলেন, বালিয়াকান্দি ও রাজবাড়ী সদরের কোন বিলে বর্ষার পানি নেই। পাট জাগ দিতে বালিয়াকান্দির মানুষের চরম সমস্যা হচ্ছে। হড়াই নদী তীরের মানুষ ভ্যান আর গরুর গাড়িতে করে পাট হড়াই নদীতে জাগ দিচ্ছেন। এতে খরচ যদিও বেড়েছে তবু পাট জাগ দিতে পারছেন। যদি এই নদীতে পানি না থাকতো তবে কৃষকের পাট ক্ষেতে মারা যেত।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড অনেক নদী পুনঃখনন করেছে। নদীগুলোতে দেশীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সাথে শুষ্ক মৌসুমে কৃষকেরা সেচের জন্য নদীর পানি ব্যবহার করছেন। বর্তমানে যখন পানির অভাবে হাজার হাজার কৃষকেরা পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তখন হড়াই নদী কৃষকদের উপকারে আসছে। হাজার হাজার হেক্টর জমির পাট চাষি হড়াই নদীতে পাট জাগ দিচ্ছেন।

বিডি প্রতিদিন/এএ

সর্বশেষ খবর