২৮ আগস্ট, ২০২৩ ১৮:৪২

কেটে ফেলা হল ‍কৃষকদের সবজির ক্ষেত, সমঝোতার আশ্বাস

বাগেরহাট প্রতিনিধি

কেটে ফেলা হল ‍কৃষকদের সবজির ক্ষেত, সমঝোতার আশ্বাস

বাগেরহাট সদর উপজেলার কোমরপুর এলাকায় ভৈরব নদীর পাড়ের সামাজিক বনায়নের গাছ রক্ষার নামে শতাধিক কৃষকের বিভিন্ন ধরণের সবজি গাছ কেটে ফেলেছেন প্রতিপক্ষরা। রবিবার বিকেলে জেএমকে সামাজিক বনায়ন সমিতির সভাপতি অশোক কুমার ভৌমিকের নেতৃত্বে একদল লোক রামদা ও ছুরি নিয়ে কৃষকের বিভিন্ন ধরণের সবজি গাছ কেটে ফেলে। এতে ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন কৃষকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভৈরব নদীর পশ্চিম পাশে কোমরপুর এলাকায় নিজ মালিকানা ও সরকারি জমি লিজ নিয়ে মৎস্য ঘের করতেন কাটাখালী গ্রামের শতাধিক কৃষক। কয়েক বছর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভৈরব নদী খনন করেন। খননের পর থেকে মৎস্য ঘের সংলগ্ন নদীর তীরে কৃষকরা নানা রকম সবজির আবাদ করে আসছেন। ২০২০-২১ অর্থ বছরে সামাজিক বন বিভাগ এই নদীর পাড়ে ২০ হাজার ফলজ ও বনজ গাছ রোপণ করে। বনায়নের পরেও সামাজিক বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে ৫ কিলোমিটার বাঁধের উপর স্থানীয় কৃষকরা ঢেড়স, লাউ, করলা, ডাটা, বরবটি, লাফা, সিম, ধুন্দলসহ নানা ধরণের সবজি চাষ করেন। কিন্তু জেএমকে সামাজিক বনায়ন সমিতির সভাপতি অশোক কুমার ভৌমিক ও তার সদস্যরা কৃষকদেরকে সবজি গাছ লাগাতে নিষেধ করতেন। তাদের নিষেধ না মানায় সমিতির সভাপতি অশোক কুমার ভৌমিকের নেতৃত্বে কৃষকদের সব গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। অশোক কুমার ভৌমিকের বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন কৃষকরা।

কৃষক শেখ এনায়েত বলেন, বন বিভাগের অনুমতি স্বাপেক্ষে নিজেদের মৎস্য ঘের সংলগ্ন ভৈরব নদীর তীরে ঢেড়স, লাউ, করলা, ডাটা, বরবটি, লাফা, সিম, ধুন্দলসহ নানা ধরণের সবজি লাগিয়েছিলাম। কিন্তু গাছ রক্ষার অজুহাতে জেএমকে সামাজিক বনায়ন সমিতির সভাপতি অশোক কুমার ভৌমিক ও তার লোকজন আমাদের গাছগুলো কেঠে ফেলেছে। আমার ঘেরের চকিঘরও (বাসা) ভেঙ্গে ফেলেছে তারা। মূলত গাছ রক্ষা তাদের মূল উদ্দেশ্য নয়, আমরা যাতে সবজি এবং ঘেরে মাছ চাষ না করতে পারি এজন্য তারা এটা করেছে। আমরা ক্ষতিপূরণ চাই। 

জামিলা বেগম নামের এক নারী কৃষক বলেন, সবজি লাগিয়ে আমরা কিছু আয় করতাম। তারা এখন আমাদের সব সবজি গাছ কেটে ফেলেছে। কৃষক মো. কাওছার আলী মোড়ল বলেন, বেশিরভাগ সবজি গাছে ফুল এসেছিল, ফলও হয়েছিল কিছু গাছে। সবজি গাছ কেটে আমাদের শেষ করে দিয়েছে। ফলন্ত গাছ কাটায় যে কষ্ট পেয়েছি, আমার গলা কেটে ফেললেও এত কষ্ট পেতাম না। সবজি গাছ কাটার ফলে আমাদের ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।

সমিতির সভাপতি অশোক কুমার ভৌমিক বলেন, বন বিভাগের নির্দেশে আমরা সবজি গাছ কেটেছি। বনায়নের গাছ রক্ষার জন্যই এই গাছ কাটা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

সামাজিক বন বিভাগ বাগেরহাটের ষাটগম্বউজ এসএফএনটিসি’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চিন্ময় মধু বলেন, কৃষকদের সবজি ও ফসল কাটতে কাউকে বলা হয়নি। সমিতির সভাপতি নিজের ইচ্ছায় এই গাছ কেটেছে। দুই পক্ষকে খবর দেয়া হয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে বলে জানান তিনি।

 


বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর