২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৫:৫৯

টানা বর্ষণে আগাম শীতকালীন সবজির ক্ষতির শঙ্কা

দিনাজপুর প্রতিনিধি

টানা বর্ষণে আগাম শীতকালীন সবজির ক্ষতির শঙ্কা

দিনাজপুর অঞ্চলে কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ফলে অধিক লাভের আশায় চাষ করা আগাম সবজির ব্যাপক ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষক।

কৃষির ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে দিনাজপুরের বীরগঞ্জের বেশির ভাগ মানুষ। সরাসরি কৃষিকাজ ও চাষাবাদের সাথেই সম্পৃক্ত তারা। আর্থিকভাবে অধিক লাভ ও স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় এলাকার অধিকাংশ কৃষক পতিত জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করেছে। আগাম সবজি চাষের মাধ্যমে সবুজ শ্যামল ছায়ায় ঢেকে গেছে অধিকাংশ এলাকা। এই আগাম শীতকালীন চাষযোগ্য সবজির মধ্যে রয়েছে ফুলকপি, পাতাকপি, শিম, মূলা, কাঁচামরিচ, টমেটো, বরবটি, বেগুন, পালংশাক, লালশাক, লাউ।
 
কিন্তু কয়েক দিনের তাপদাহের পর গত বুধবার সন্ধ্যা হতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উপজেলায় ৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা হতে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ৮৩মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানায় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম।
 
অতি বৃষ্টির ফলে বীরগঞ্জ উপজেলার সবজিগ্রাম খ্যাত সাতোর ইউপির প্রাণনগরসহ মোহনপুর, শিবরামপুর, সুজালপুর, শতগ্রাম ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার মাঠে থাকা আগাম সবজির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন সবজি চাষিরা। সেই সাথে বৃষ্টিতে নেতিয়ে পড়েছে সবজি গাছের চারা এবং পানিতে পঁচতে শুরু করেছে।

বীরগঞ্জ কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বীরগঞ্জ উপজেলার মোট আবাদি জমির পরিমান ৩২ হাজার ৮৯৬হেক্টর। এর মধ্যে ৯শত হেক্টর জমিতে আগাম সবজি চাষ হয়েছে। এবার খরিপ-২ মৌসুমে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৯৫২ হেক্টর জমিতে এবং রবি মৌসুমে ২ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বীরগঞ্জ উপজেলার সুজালপুর ইউনিয়নের শীতলাই গ্রামের সবজি চাষি গ্রামের আবু রায়হান জানান, একটি এনজিও হতে ঋণ নিয়ে দুই বিঘা জমিতে আগাম জাতের ফুলকপি চাষ করেছি। প্রতিটি গাছ বেড়ে উঠেছিল সতেজ হয়ে কিন্তু বৃষ্টির জলাবদ্ধতায় ফুলকপির গাছগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে এবং নেতিয়ে পড়েছে মাটির সাথে। 

একই কথা জানিয়ে সবজি চাষি কায়সার আহমেদ বলেন, শীতকালীন আগাম সবজি পাতাকপি, ফুলকপি চাষ করি। কয়েক বছর ভালো লাভ করেছি। তবে এবার বৈরি আবহাওয়া। কয়েকদিন প্রচণ্ড তাপদাহের পর টানা বর্ষণ শুরু হয়েছে। এতে ফসলের যে ক্ষতি হলো আসল টাকা উঠাতে পারবো কি না জানি না।

বীরগঞ্জ উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আবুল কাসেম জানান, উপজেলা বেশির ভাগ শীতের সবজি আবাদ হয় প্রাণনগর গ্রামে। মোট সবজি চাষের পরিমাণ ৭০ হেক্টর জমিতে। আগাম সবজি চাষ একটু কঠিন কাজ। চারা রোপণের পর থেকে প্রতিনিয়ত জমিতে ক্ষেত পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করতে হয়। তাপদাহের পর বর্তমানে টানা বৃষ্টির ফলে আগাম সবজি চাষে আশংকার সৃষ্টি হয়েছে। অতি বৃষ্টির ফলে শিকড়ে পচন ধরতে চারা মরে যেতে পারে। এতে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে আমাদের কৃষক।


বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর