২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৭:০২

কাপ্তাই হ্রদে মাছের বাম্পার আহরণ, রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড

রাঙামাটি প্রতিনিধি

কাপ্তাই হ্রদে মাছের বাম্পার আহরণ, রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড

রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে মাছের বাম্পার আহরণ হয়েছে। ছাড়িয়েছে রাজস্ব আয়ের রেকর্ড। বৃদ্ধি পেয়েছে সব ধরনের মাছের উৎপাদন। 

গত ১ সেপ্টম্বর কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ শুরু হওয়ার পর বৃদ্ধি পায় উৎপাদন। মাত্র ২৫ দিনে রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদ থেকে মাছ আহরণ করা হয় প্রায় এক হাজার ৬৫০ মেট্টিক টন। এতে রাজস্ব আদায় হয় প্রায় ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। তবে তা গেল বছরের তুলনায় কিছুটা কম। তবে তারও যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলছে বিএফডিসি। 

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন রাঙামাটি (বিএফডিসি) এক পরিসংখ্যানে বলছেন, গেল বছর মাত্র ২৫ দিনে এক হাজার ৮৫০ মেট্টিক টন মাছ আহরণ করা হয়। আর এতে রাজস্ব আয় হয় ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। কারণ তখন রাজস্ব আদায় ও মৎস্য অবতরণের কোন বাধা ছিল না। তবে চলতি বছর রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ শুরু হওয়ার পর বিএফিডিসি নির্দেশে মাছ অবতরণ করার সময় সীমা বেধে দেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৬টার পর আর রাজস্ব আদায় হবে না। হবে না ফিসারি ঘাটে কোন মাছ অবতরণ। তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মাছ আহরণের পর রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে মাছের বাম্পার আহরণ হচ্ছে। এভাবে মাছ উৎপাদন অব্যাহত থাকলে এ বছর রাজস্ব আয় অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাঙামাটি বিএফডিসি সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলধারা ও বাংলাদেশের প্রধান মৎস্য উৎপাদন ক্ষেত্র রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ। যা দেশের মিঠা পানির মাছের ভান্ডার হিসেবে পরিচিত। এ হ্রদ থেকে আহরিত মাছ রপ্তানি করা হয় চট্টগ্রাম-ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। যার সুফল ভোগ করে এ অঞ্চলের ২৬ হাজার মৎস্যজীবী পরিবার। বন্ধকালীন সময় রাঙামাটি মৎস্য উন্নয়ন অধিদপ্তরের উদ্যোগে এ হ্রদে ছাড়া হয় বিপুল পরিমাণ পোনা মাছ। এসব পোনা বড় হওয়ার পর মাছ শিকার শুরু হয়। এতে কর্মচাঞ্চল্যতা ফিরে আসে জেলে, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীর মধ্যে। 

চার মাস ১২ দিন বেকার থাকার পর আবারও কর্মস্থান ফিরে পাওয়ায় খুশি শ্রমিকরা। শুধু তাই নয় বন্ধকালীন সময়ে কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন হয়েছে চাহিদার অধিক বলছেন মৎস্যজীবীরা। উৎপাদনও হচ্ছে বাম্পার। সরকারের রাজস্ব খাতে যেমন আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি দেশে মিঠা পানির মাছের চাহিদাও মিটছে, আর লাভবান হচ্ছে মৎস্যজীবীরা।

রাঙামাটি মৎস্য উন্নয়ন অধিদপ্তরের উন্নয়ন ও বিপনি কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আশরাফুল আলম ভূঁইয়া বলেন, রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে মাছের সুষ্ঠু প্রাকৃতিক প্রজনন, বংশ বিস্তারের কারণে বাম্পার আহরণ করা সম্ভব হয়েছে। তবে তার জন্য বিএফডিসির সকল কর্মকর্তাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। বন্ধকালীন সময় অবৈধ মাছ নিধনসহ পোনা মাছের রক্ষণাবেক্ষণে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হয় তাদের। এছাড়া বিএফডিসির রেকর্ড অনুযায়ী বিগত ৫ বছরের তুলনায় ২৪ ঘণ্টায় মাছ অবতরণে রাজস্ব আয় তুলনামূলকভাবে বেশি হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে কাপ্তাই হ্রদে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। 

প্রসঙ্গত, রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে ৬৬টি দেশিও প্রজাতির ও ৬টি বহিরাগত প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। যা প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত

সর্বশেষ খবর