দফায় দফায় বন্যা, ভারী বর্ষণ ও ঝোড়ো হাওয়াসহ নানা প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও লালমনিরহাটে আগাম স্বল্প মেয়াদি জাতের আমন ধান চাষ করে ঘরে তুলতে পারায় মহা খুশি প্রান্তিক চাষি ও কৃষিশ্রমিকরা। ধানের ভালো ফলন ও বাজারদর পেয়ে অনেকটা ক্ষতি পুষিয়ে উঠবেন বলে আশাবাদী তারা।
চালসহ সব খাদ্যপণ্যে দাম বৃদ্ধিতে যখন নিম্নআয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে তখনই আশ্বিনের আগাম ধান কৃষকের মুখে মঙ্গা জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। অগ্রহায়ণ মাস আসতে এখনো ঢের বাকি। চলছে আশ্বিন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ। এ মাসেই লালমনিরহাটের ঘরে ঘরে হানা দিত মঙ্গার ভয়াল থাবা। কিন্তু কালের বির্বতনে সব কিছুই যেন পাল্টে গেছে।
এখন আর অগ্রহায়ণ মাসের অপেক্ষা নয়, আগাম জাতের ধান চাষ করে এ অঞ্চলের কৃষক আশ্বিন-কার্তিক মাসেই মঙ্গা জয় করতে শিখেছেন। চলতি মাসেই লালমনিরহাটসহ রংপুর বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন এলাকায় আগাম জাতের আমন ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে।কৃষকরা বলছেন, আগাম আমন চাষে মঙ্গা উধাও হয়ে গেছে। ধানের দাম ভালো থাকায় চাষিদের মনও উৎফুল্ল। পাশাপাশি মজুরি বেশি থাকায় কৃষিশ্রমিকরাও রয়েছেন চাঙা। এ অবস্থায় ধান কাটা ও মাড়াই করতে কৃষিশ্রমিক পাওয়াই দুষ্কর হয়ে উঠেছে। দিন হাজিরায় আড়াই থেকে ৩০০ টাকা দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।
কৃষকরা জানান, তিন বছর আগেও এক একর জমির ধান কাটা ও মাড়াই করতে এক থেকে দেড় হাজার টাকা লাগত। এবার প্রায় তিন গুণ বেশি মজুরি দিতে হচ্ছে। অন্যদিকে দিন হাজিরায় যেসব শ্রমিক কাজ করতেন, তাদেরও মজুরি দ্বিগুণ হয়েছে। দু-তিন মৌসুম আগে ১০০ টাকায় যে শ্রমিক দিন হাজিরায় কাজ করতেন, এবার তারা ২৫০ টাকার নিচে কাজ করছেন না। কোনো কোনো স্থানে তিনবেলা খাওয়াসহ ৩০০ টাকা হাজিরা পাচ্ছেন।
রংপুর কৃষি অঞ্চলের লালমনিরহাট জেলা সদর, আদিতমারী, কালিগঞ্জ, হাতিবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলায় আগাম আমন ধান কাটা ও মাড়াই চলছে। কৃষকরা ঘরে ধান তুলছেন। এরপর পুনরায় সেই জমি তৈরি করে সেখানে আবাদে নামবেন আগাম আলু ও সরিষার।
এলাকার কৃষকরা জানান, এবার আগাম আমন ধান আবাদ ভালোই হয়েছে। এদিকে কৃষি বিভাগের লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান জানান, আগাম আমন ধানের আবাদ ভালো হয়েছে। কৃষকরা বর্তমান সময়ে তাদের মঙ্গা দূর করে প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ