১৭ অক্টোবর, ২০২৩ ১৭:৫০

ডিলারদের কারসাজিতে মিলছে না সার, খুচরা বিক্রেতাদের ক্ষোভ

নাটোর প্রতিনিধি

ডিলারদের কারসাজিতে মিলছে না সার, খুচরা বিক্রেতাদের ক্ষোভ

দেশীয় জাতের বাংলা ডিএপি ও পতেঙ্গা টিএসপি সার আমদানি এবং বিপনণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে গুরুদাসপুরের বিসিআইসি এবং বিএডিসি ডিলারদের বিরুদ্ধে। বরাদ্দ থাকা স্বত্তেও দীর্ঘদিন ধরে ডিলাররা এই দুই জাতের সার নিয়ে খুচরা ডিলারদের সাথে কারসাজি করছেন।

ডিলারদের এসব অনিয়ম তুলে ধরে মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন করেছে গুরুদাসপুরের কার্ডধারী খুচরা সার ব্যবসায়ী মালিক সমিতি। এসময় উপজেলা, পৌর এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের খুচরা সার ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। 

উপজেলা খুচরা সার ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি শরিফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, প্রায় বছরখানেক হলো তারা কার্ডের মাধ্যমে সার উত্তোলন করছেন। তবে এই দীর্ঘ সময়ে দেশে উৎপাদিত বাঙলা ডিএপি ও পতেঙ্গা টিএসপি সার তাদের কাছে সরবরাহ করা হয়নি। কাগজে কলমে প্রতি মাসে বরাদ্দ তাকলেও নানা অজুহাতে বিসিআইসি এবং বিএডিসি ডিলারেরা প্রভাবখাটিয়ে আমদানি বন্ধ রেখেছিলেন। 

স্থানীয় কৃষি অফিস বলছে গুরুদাসপুরে ১০জন বিসিআইসি, ১০জন বিএডিসি সার ডিলার রয়েছেন। এছাড়া গুরুদাসপুরের একটি পৌরসভা এবং ছয় ইউনিয়ন পর্যায়ে ৬১জন খুচরা ডিলার আছেন। নিয়ম অনুযায়ী বিসিআইসি এবং বিএডিসি সার ডিলারেরা প্রতিমাসে বরাদ্দমতো ইউরিয়া, পটাস, ড্যাপ, ডিএপি ও টিএসপি সার আমদানি করার কথা। এরমধ্যে দেশীয় জাতের বাংলা ডিএপি ও পতেঙ্গা টিএসপি সার আমদানিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হিসাব মতে আমদানি করা মোট সারের অর্ধেক খুচরা ডিলারদের মাধ্যমে গ্রামীণ পর্যায়ে এবং বিসিআইসি ও বিএডিসি ডিলারদের মাধ্যমে বাজার এলাকার কৃষকদের কাছে সরাসরি বিক্রির কথা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ইস্যুকৃত ডিলারদের নামের বরাদ্দ তালিকায় দেখা গেছে চলতি অক্টোবর মাসে বিসিআইসি ডিলারদের অনুকূলে পতেঙ্গা টিএসপি সার ৩৬ মেট্টিকটন এবং বাংলা ডিএপি ১৮২ মেট্টিক টন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চলতি মাসের এবং আগের মাসের বরাদ্দকৃত সার এখন পর্যন্ত খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করা হয়নি।

উপজেলা খুচরা সার ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দু সাঈদ, পৌরর সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম এবং খুবজিপুর ইউনিয়নের সভাপতি নজরুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশে উৎপাদিত অধিক কার্যকরী সার না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। ডিলারদের কাছে এই দুই জাতের সার না পাওয়ায় সরকার নির্ধারিত ১ হাজার ৩৫০ টাকা বস্তার পতেঙ্গা টিএসপি এবং ১ হাজার ৫০ টাকা দামের সার উচ্চ মূল্যে কিনছেন কৃষকেরা।      
                                                                                                                                                                        
খুচরা ডিলারদের ভাষ্যমতে ইউরিয়া, পটাস, ড্যাপ, ডিএপি ও টিএসপি সার বিসিআইসি, বিএডিসি এবং খুচরা ডিলারদের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। এরমধ্যে সরকারি বরাদ্দ মতো দেশে উৎপাদিত বাংলা ডিএপি ও পতেঙ্গা টিএসপি সার দীর্ঘদিন ধরে আমদানি করা হয় না। দেশে উৎপাদিত এই সারের পরিবর্তে মরক্ক এবং বুলগেরিয়া থেকে আমদানি করা ডিএপি ও টিএসপি সার বিক্রি করা হচ্ছে।

নাটোর জেলা বিসিআইসি ডিলার সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুল মজিদ বলেন, খুচরা ডিলারদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। সরকারি রেজুলেশন মোতাবেক সার সরবরাহ করা হচ্ছে। সার নিয়ে কারসাজির কোনো সুযোগ নেই।

গুরুদাসপুর কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, সার মজুত রেখে সরবরাহ না করার সুযোগ নেই। খোঁজ নিয়ে ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল  

সর্বশেষ খবর