৫ নভেম্বর, ২০২৩ ১৫:২৩

ব্রি ধান-৭৬ চাষে আশার আলো দেখছে কৃষক

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

ব্রি ধান-৭৬ চাষে আশার আলো দেখছে কৃষক

বালাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত লবণ-জোয়ার-ভাটা সহিষ্ণু উচ্চ ফলনশীল ব্রি ধান-৭৬ চাষে আশার আলো দেখছেন কৃষক। নিচু জমিতে এ ধান চাষ করে কৃষক বিঘা প্রতি ১২ থেকে ১৪ মণ পর্যন্ত ফলন পেয়েছেন। গোপালগঞ্জ জেলার স্থানীয়  জাবরা, জৈনা, ময়নামতি ধান ও বাগেরহাট জেলার স্থানীয় জাত মন্ডেশ্বরের পরিবর্তে কৃষক ব্রি ধান-৭৬ আবাদ করে তিনগুনেরও বেশি ফলন পেয়েছেন। তাই এ জাত ছড়িয়ে দিতে পারলে আমন মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলের নিচু জমিতে ধানের উৎপাদন অন্তত ৩ গুণ বৃদ্ধি পাবে। এ অঞ্চল খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। 
ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়  গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট ও নড়াইল জেলার ধানের উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাজ করছে। 

প্রতিষ্ঠানটি সূত্রে জানা গছে, চলতি আমন মৌমুমে গোপালগঞ্জ ও বাগেরহাট জেলায় বিনামূল্যে ১ হাজার ২৭০ কেজি ব্রি ধান-৭৬ বীজ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। বীজ দিয়ে গোপালগঞ্জ সদর , টুঙ্গিপাড়া, বাগেরহাট জেলার মংলা, রামপাল, মোড়লগঞ্জ ও শরনখোলার কৃষক ২৫৪টি প্রদর্শনী প্লটে ব্রিধান-৭৬ এর আবাদ করেন। ৩৩ শতাংশের বিঘায় এ ধান ১২ থেকে ১৪ মন পর্যন্ত ফলন দিয়েছে। স্থানীয় জাত জাবরা, জৈনা, ময়নামতি ও মন্ডেশ্বর বিঘায় ৪ থেকে ৫ মন ফলন দিয়ে থাকে।

গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমরিয়া গ্রামের কৃষক আহমেদ আলী (৬৫) বলেন, নিচু জমিতে স্থানীয় জাত জাবরা, জৈনা, ময়নামতি চাষ করতাম। এতে বিঘা প্রতি ৪/৫ মণ ফলন পেতাম। কিন্তু এ বছর ব্রিধান-৭৬ আবাদ করে বিঘা প্রতি ১৩ মণ ফলন পেয়েছি। লবন-জোয়ার-ভাটা সহিষ্ণু উচ্চ ফলনশীল ব্রিধান-৭৬ চাষে আশার আলো দেখছি। আমাদের এলাকার চাষীরা এত ফলন দেখে আগামী বছর ব্রিধান-৭৬ চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের  গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৃজন চন্দ্র দাস বলেন, বীজ তলায় ব্রিধান-৭৬ এর চারা ৩০ দিনেই ৬০ সেন্টিমিটারের চেয়েও বড় হয়। লবনাক্ত নিচু জমিতে এ ধানের চারা রোপণ করে দিতে হয়। জোয়ারভাটা সহিষ্ণু এ জাতের ধান ১৪০ দিনেই স্থানীয় জাতের তুলনায় ৩ গুনেরও বেশি ফলন দেয়। দক্ষিণাঞ্চলে এ ধানের জাত ছড়িয়ে দিতে আমরা কাজ করছি। দক্ষিণাঞ্চলে এ ধানের জাত ছড়িয়ে দিয়ে আমরা খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সক্ষম হব। 
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক আঃ কাদের সরদার বলেন, নিচু জমিতে ব্রি ধান-৭৬ এর বাম্পার ফলন হয়েছে। এ জাত দক্ষিণাঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের হাতছানি দিচ্ছে। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)বীজ সরবরাহ করলে আমরা এ জাত ছড়িয়ে দেব।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ও সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, লবণ-জোয়ার-ভাটা সহিষ্ণু উচ্চ ফলনশীল ব্রিধান-৭৬ কৃষক র্পায়ে জনপ্রিয় করতে আমরা বীজ উৎপাদন বাড়াব । কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে দিয়ে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করব ইনশাল্লাহ।

বিডি প্রতিদিন/এএ

সর্বশেষ খবর