২ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৭:০৮

গ্রামগঞ্জে নতুন ধানের বাহারি পিঠা

ভাপা ও চিতই পিঠা খেতে ভিড় দোকানে দোকানে

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

গ্রামগঞ্জে নতুন ধানের বাহারি পিঠা

লালমানিরহাটে পিঠা তৈরিতে ব্যস্ত মৌসুমি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

লালমনিরহাটে নতুন ধানের বাহারি পিঠা তৈরির ধুম পড়েছে। গ্রামগঞ্জে কিংবা শহরে শীতের পিঠার ব্যবসাও জমে উঠেছে। ভাপা, চিতই পিঠা খেতে ভিড় জমছে দোকানে দোকানে। নতুন ধানের পিঠার সুগন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই সড়কের পাশে কিংবা ছোট-বড় বাজারগুলোতে তৈরি হচ্ছে ভাপা পিঠা ও চিতই পিঠা। তার সঙ্গে সরিষা বাটা আর শুঁটকি ভর্তা। সরেজমিনে দেখে গেছে, লালমনিরহাটে পাটগ্রাম-বুড়িমারী মহাসড়কের পাশে কবরস্থান বাজারে বসেছে ভাপা পিঠার দোকান। কালীগঞ্জের সুখানদিঘি ও হাতীবান্ধা উপজেলায় বড়খাতা বিডিআর বাজারে কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ভাপা, চিতই পিঠার দোকান বসিয়েছেন। দোকানের চারপাশ ঘিরে আছে ক্রেতারা। পিঠা তৈরির পরই হাতে ধোঁয়া ওঠা গরম-গরম পিঠা মুখে দিচ্ছেন অনেকে। নতুন ধান থেকে চাল বের করে তা মেশিন বা হাতে গুঁড়া করে মাটির পাতিলের সাহায্যে ভাপ দিয়ে গুড় ও নারিকেল দিয়ে তৈরি হচ্ছে ভাপা পিঠা। প্রতিটি ভাপা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০ টাকায়। অনেকেই ভাপা পিঠা পরিবার পরিজনের জন্য বাড়িতেও নিয়ে যাচ্ছেন। পাটগ্রাম উপজেলার কুচলিবাড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা মুখলেসুর রহমান বলেন, নতুন ধান দিয়ে গ্রামগঞ্জে শুরু হচ্ছে পিঠা পোলাও খাওয়ার ধুম। বাজারগুলোতে বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করে বিক্রি করা হচ্ছে। পিঠা বিক্রেতা রশিদুল ইসলাম (৪০)। তিনি একজন দিনমজুর। ভাপা পিঠা তৈরি করতে বাজারে বসেছেন। তিনি বলেন, ভাপা পিঠার চাহিদা বেশি। সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত তিনি প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ টাকার ভাপা পিঠা বিক্রি করেন। কয়েক ঘণ্টায় তিনি ৩ থেকে ৪ শত টাকা আয় করেন। স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তার সংসার এতে মোটামুটি চলে যায়। রশিদুল বলেন, এক সপ্তাহ ধরে ভাপা পিঠা বিক্রি করছি। ভরা শীতে ১৫ থেকে ১৮ শত টাকা বিক্রি হবে। সেই অপেক্ষায় আছি। কালীগঞ্জের সুকানদিঘি বাজারে ভাপা পিঠা বিক্রি করছেন আনিসুর রহমান। শীত এলেই আনিসুর রহমান বাজারে ভাপা পিঠা বিক্রি করেন। অন্য সময় তিনি ভ্যান চালান। আনিসুর বলেন, শীত এলে আর ভ্যান চালাই না। প্রতিদিন ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা পিঠা বিক্রি করি। এতে আমার প্রতিদিন ৫০০ টাকা আয় হয়। সুকানদিঘি বাজারের ব্যবসায়ী আজিজুল বারি বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যায় ভাপা আর চিতই পিঠা বিক্রি করেন আনিসুর। পিঠা খেতে অনেকেই তার দোকানে ভিড় করেন। হাতীবান্ধার বড়খাতা বিডিআর বাজারে ভাপা পিঠা বিক্রি করছেন ফিরোজা বেগম। তিনি বলেন, ছেলেসন্তান নেই। মেয়ে ছিল, বিয়ে দিয়েছি। স্বামী অসুস্থ হয়ে বাড়িতে পড়ে আছে। চালের আটা দিয়ে ভাপা পিঠা তৈরি করে বিক্রি করছি। প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় হয়। তা দিয়েই দুজনের সংসার চলে। পিঠা খেতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, নতুন ধানের ভাপা পিঠা খেয়ে ভালো লাগছে। কবরস্থান বাজারের ব্যবসায়ী মকবুল বলেন, আমি প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর এখান থেকে পিঠা খাই।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর