৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৫:৩৭

সোনালি স্বপ্ন দেখাচ্ছে মিশ্র ফলের বাগান

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

সোনালি স্বপ্ন দেখাচ্ছে মিশ্র ফলের বাগান

মিশ্র ফলের বাগান। বাগানে প্রবেশকালে দেখা যাবে কোনো গাছে ঝুলছে মাল্টা, কোনো গাছে কমলা, থাই বারো মাসি আম, কোনো গাছে ড্রাগন, সৌদি খেঁজুর, গৌরমতি আমসহ বিভিন্নজাতের ফল সবুজ পাতার আড়ালে কিংবা পাতা ঝরা ডালে ঝুলছে। ফলের ভারে গাছের ডাল নুইয়ে পড়েছে। তাই বাঁশ দিয়ে ঠেস দিয়ে রাখতে হয়েছে।

‘বিষমুক্ত মিশ্র ফলের বাগানের ফল নিজে খাবো এরপর বাণিজ্যিকভাবে এসব ফল কিংবা চারা বিক্রি করব’ এই প্রত্যায় নিয়ে কয়েকশত জাতের ফলের বাগান গড়েছেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার সুজালপুর ইউপির বর্ষা এলাকায় বৃক্ষপ্রেমী মো. ইমরুল আহসান। তিনি দিনাজপুর হর্টিকালচারের সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা।

তার বাগানের দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন জাতের ফল, সবজি, চারা ও কলম বিক্রির জন্য গড়ে তুলেছেন তাসনিয়া এগ্রো রিসার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার।

বাণিজ্যিকভাবে মিশ্র ফলের বাগান গড়ে তুলে আর্থিকভাবে ব্যাপক লাভবান হবার স্বপ্ন দেখছেন মো. ইমরুল আহসান। তিনি এক একর জায়গা কেনার পর এটি মাটি ভরাট করে তিন বছর ধরে চাষ উপযোগী করেছেন। এতে মোট খরচ হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা। এ বছর থেকে বিভিন্ন গাছে ধরেছে ফল। এরই মধ্যে বিক্রির জন্য বিভিন্ন ফলের কলম চারাও তৈরি করছেন তিনি। ফল বিক্রি করবেন। এসব ফলের বাগানে তিনি দেখছেন আগামী দিনে লাভবান হবার সোনালি স্বপ্ন।

একটি পরিত্যক্ত জায়গা থেকে চাষ উপযোগী করে ভালো ফলনে তার সফলতার অনুপ্রেরণায় বেকার যুবকসহ অনেকে তার মিশ্র ফলের বাগান পরিদর্শন করেছেন এবং অনেকে এসব বাগান করতে সংকল্প করছেন।

সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা মো. ইমরুল আহসান জানান, বাগানে থাই কাঁচামিঠা, ভ্যালেন্সিয়া প্যারাইড, ক্যালিসিনান প্যারাইড, লেডিজেল, আমেরিকার পালমরগ্রিন, কেস্ট কেইট, ফিলিপাইনের অলটাইম, সিঙ্গাপুরী, গৌরমতি, বারি-৪, ব্যানানা ম্যঙ্গো, উষাপন্নি, ব্রুনাই কিং, তাইয়ান গ্রিন, রেলি মার্বেলসহ ১০০ জাতের আম গাছ রয়েছে। এক বছরেই ফল ধরে। কিন্তু পরের বছর থেকে বেশি আম ধরে। একটি গাছে ২০০-৩০০টি ফল ধরে। এসব গাছের চারা দেশি-বিদেশি নার্সাসি থেকে আনা হয়েছে দুই বছর ধরে। প্রতিটি চারা গাছের ফল ধরার পর নিশ্চিত হলেই এসব গাছের চারা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা হয় এখানে।

তিনি বলেন, বাগানে অস্ট্রেলিয়ান, কাশ্মিরী, সামার রাম্বু, হরিমন ৯৯, আন্না, ডরসেড, রেড গ্লোবসহ ১০ জাতের আপেল রয়েছে। ইউমেন, অস্ট্রেলিয়ান, কারাতিসহ ১৫ জাতের আঙুর, দার্জিলিং জাতের ৪টি, সাতকি, থাই কমলা, থাইল্যান্ডের খিউওনি, নাগপুরি, বারি-১, চাইনা-২,পাকিস্তানি-১ ও ২, কেনুসহ ২০ জাতের কমলা, থাই সাদা জাম, কোরিয়ান জাম, পটল জাম, ভারতীয় জাতের জাম গাছ, বারি-১, বারি-৩, ৪, ৬, ফিলিস্থিনি জাম্বুরা, ভিয়েতনামী জাম্বু, সাদা জাম্বুরা, খানপুরি, থাই বারোমসি জাম্বুরামগ ১৫টি জাতের জাম্বুরা, সফেদা বারী-১ ও থাই কালাপাতি গাছ রয়েছে।

এছাড়া সুদানি, থাই ও ভারতীয় জাতের শরিফা, ১০ জাতের আনার, বারোমাসি সজনা, সিডলেসসহ তিন জাতের লেবু, শাহি, রেডকুইন, ববিু, টকলেডি জাতের পেঁপে, তিন জাতের আখও রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, আমার পরিবার এখন বিষমুক্ত সবজি, ফল এমনকি পুকুরের মাছ খেতে পারে। এছাড়া এখানে ৫ থেকে ৬ জনের কর্মসংস্থানও হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর