২৭ জানুয়ারি, ২০২৪ ১৯:১০

দিনাজপুরে শীত কমছে না, শঙ্কায় কৃষকরা

দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুরে শীত কমছে না, শঙ্কায় কৃষকরা

প্রতিদিনের তাপমাত্রা ওঠানামা করলেও অব্যাহত শৈত্যপ্রবাহের কারণে কমেনি কনকনে ঠাণ্ডা। বিপর্যস্ত জনজীবন। বিকালের পর থেকেই বাড়ছে শীতের তীব্রতা। সকালের দিকে কুয়াশার কারণে অনেক বেলা পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। সন্ধ্যার পরে জরুরি রাস্তায় চলাচল কমে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের। ছিন্নমূল আর গ্রামীণ মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। দুর্ভোগে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ। তীব্র শীত ও টানা শৈত্য প্রবাহের কারণে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও।

তাপমাত্রা আর কুয়াশার সাথে শীতের প্রভাবে প্রান্তিক পর্যায়ের দিশেহারা অনেক কৃষক। কুয়াশাচ্ছন্ন দিনের চেয়ে রৌদ্রোজ্জ্বল দিনেই তাপমাত্রা কম রেকর্ড হয়েছে দেখা যায়। তবে প্রতিদিনই কমবেশি সূর্যের দেখা পাওয়ায় ফসলের তেমন ক্ষতি হবে না বলে জানায় কৃষি অফিস। আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, শনিবার সকাল ৯টায় দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

নশরতপুরের কৃষক রফিকুল বলেন, দিনের তাপমাত্রা আর রাতের তাপমাত্রার কোনও মিল নেই। এই কারণে বোরো ধানের চারা হলুদ হয়ে যাচ্ছে এবং বড় হচ্ছে না। বীজতলাগুলোর ক্ষতি হয়ে গেছে। 

এ ব্যাপারে বিরলের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার শাহজাহান আলী জানান, শৈত্যপ্রবাহ যদি অতিরিক্ত দেখা যায় তাহলে তাদেরকে পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে দিতে বলছি। যদিও এখন পর্যন্ত তেমন অবস্থার দেখা মিলেনি। তবে যাদের বোরো ধানের চারা হলুদ হয়ে যাচ্ছে, বড় হচ্ছে না এবং চারার বয়স যদি ১২ দিনের বেশি হয়ে থাকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। সেগুলি হলো, প্রতি লিটারে ৬ গ্রাম সালফার ৮০ ডব্লিউজি, ৬ গ্রাম পটাশ (লাল পটাশ ৭-৮ ঘণ্টা আগে ভিজিয়ে রেখে ছেঁকে নিবেন), ১ গ্রাম চিলেটেড জিংক একত্রে ৭দিন পরপর স্প্রে করে দিবেন। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির কম হলে বীজতলা স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ঢেকে দিবেন এবং বাকি সময় খুলে রাখবেন। বীজতলা সন্ধ্যায় টিউবওয়েলের পানি দিয়ে সকালে বের করে দিবেন, সন্ধ্যায় আবার নতুন পানি দিবেন। সকালে চারার উপর জমা শিশির দড়ি বা পাটকাঠি দিয়ে ঝরিয়ে দিবেন। বীজতলায় ছাই প্রয়োগ করলে চারা ঠান্ডার প্রকোপ হতে রক্ষা পায়।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান জানান, শীতের প্রভাবে তেমন ক্ষতি হয়নি এবং আগামীতে আর ক্ষতি হবে না। যেহেতু প্রতিদিনই সূর্য দেখা যাচ্ছে এবং দিনে ৩-৪ ঘণ্টা সূর্যের আলো পাওয়া গেলে কোন ক্ষতি হবে না। বরং তাপমাত্রা কম থাকলে কিছু ফসলের উৎপাদন বাড়বে। তাপমাত্রা ফসলের জন্য ক্ষতি না। তবে সূর্যের আলো না পেলে ক্ষতি হতে পারে। সেখানে দিনোজপুরে প্রতিদিনই কমবেশি এখন সূর্যের আলো দেখা যাচ্ছে। 

দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, জেলায় মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শনিবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দিনাজপুরে ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ। বাতাসের গতি ২ নটস। জানুয়ারি মাসজুড়েই জেলায় তাপমাত্রা এরকম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। 


বিডি প্রতিদিন/নাজমুল 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর