এক সময়ের ব্যবসার প্রসার ঘটানো নেত্রকোনা অঞ্চলের প্রধান মাধ্যম পাটেশ্বরী নদীর বুকে এখন শুধুই ফসলের চাষ। যুগ যুগ ধরে কয়েক কিলোমিটার নদীর বুকে শুকনা মৌসুমে বোরো আবাদেও এখন নদীটিতেও সেচ দিতে হয় মেশিনে। ফলে এলাকার ভূগভস্থ ধংস হয়ে বন্ধ হয়ে পড়েছে চালকলসহ ব্যবসা বানিজ্য।
স্থানীয়রা জানান খনন করে নদীর জীবন ফিরিয়ে দিলে সেচ ও নৌ যোগাযোগ ফিরে পুনরায় উজ্জীবিত হতো এ অঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্যসহ জীবন মানের।
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার নওয়াপাড়া বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার গড়ে ওঠা ব্রহ্মপুত্র থেকে উৎপত্তি হয়ে সাইডুলি নদী দিয়ে চলমান পাটেশ্বরী নদী। যা কেন্দুয়া উপজেলার পার্শ্ববর্তী আটপাড়া ও মদনের মানুষের জন্যও ছিলো আশীবার্দস্বরূপ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আনা নেয়া করা পাটের ব্যবসার প্রসারে পাটেশ্বরী নামকরণ হয়েছিলো। কিন্তু দিনে দিনে নদীটি মরা খালে পরিণত হয়ে ধানের আবাদের মাঝখানে ড্রেনে রূপান্তরিত হয়েছে। যে কারণে বন্ধ হয়ে পড়েছে পাটসহ ধান চালের ব্যবসা।নদীকেন্দ্রিক গড়ে ওঠা বাজারগুলোতেও নেই জৌলুস। এদিকে নদী শুকনো থাকায় যে যার যার মতো করে দখলে নিয়ে করছেন বোরো আবাদ।
যে কারণে নদী পাড়ের মানুষের বিড়ম্বনা বেড়েছে কয়েকগুণ। পাশাপাশি নদীর পাড়েই মাছের জন্য খনন করা হচ্ছে পুকুর। অন্যদিকে নদীতেও করা ফসলে সেচযন্ত্রের মাধ্যমে পানি দিতে হয়। স্থানীয়দের দাবি নদীটিকে খনন করে দিলে পুনরায় এ অঞ্চলের জীবনমান উন্নত হবে। সকলের পানির সমস্যা সমাধান হবে। সেইসাথে নদীকেন্দ্রীক বন্ধ হয়ে থাকা ব্যবসাগুলোও চালু হবে। সচল হবে অর্থনীতির চাকা। দুর্যোগে রক্ষা পাবে নীচু এলাকার বাসিন্ধারা। সেইসাথে যেমন মৎস্যজীবিদের পেশা ফিরে পাবে তেমনি মিটবে মাছের চাহিদাও।
এদিকে বর্তমান সরকার জলাশয় রক্ষায় নদী খাল খনন প্রকল্প হাতে নিয়েছে বলে জানান পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান। ইতিমধ্যে তিনটি শুকিয়ে যাওয়া নদী খনন হাতে নেয়া হয়েছে। এই পাটেশ্বরী নদীর জন্য স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে খনন প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। এতে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতায় ফসলের ক্ষতি হবে না। মাছের চাহিদা মিটবে। এছাড়া শুকনা মৌসুমে নদীর পানিতে সেচ দিতে পারলে ফসলের নিবড়িতা বৃদ্ধি পায় বলেও জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল