৯ মে, ২০২৪ ১৪:৩৯

গোপালগঞ্জে লবণ সহিষ্ণু বিনাধান ১০-এর বাম্পার ফলন

গোপালগঞ্জ প্রতিতিনিধি

গোপালগঞ্জে লবণ সহিষ্ণু বিনাধান ১০-এর বাম্পার ফলন

গোপালগঞ্জে হিট শকের মধ্যেও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত লবণ সহিষ্ণু বিনাধান ১০ বাম্পার ফলন দিয়েছে। প্রতি হেক্টরে এ ধান ৭ মেট্রিক টন ফলেছে। লবণ ও তাপ সহিষ্ণু এ জাতের ধানে কোনো চিটা হয়নি। বিনাধান ১০ চাষাবাদ করে গোপালগঞ্জের কৃষক লাভবান হয়েছেন।

সারাদেশে এ জাতের ধানের চাষাবাদ ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশের ধানের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে। কৃষক লাভবান হবেন। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রামদিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের কৃষাণী শিপ্রারানী ভৌমিকের জমিতে উৎপাদিত বিনাধান ১০ কেটে পরিমাপ করে বিনার পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিনা গোপালগঞ্জ উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. কামরুজ্জামান বলেন, গোপালগঞ্জে লবণের আগ্রাসন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই গোপালগঞ্জসহ বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫ জেলায় চলতি বোরো মৌসুমে জমিতে ৬০টি প্রদর্শনী প্লটে কৃষক বিনা ১০ ধানের আবাদ করেন। প্রতি হেক্টরে এ জাতের ধান ৭ টন ফলন দিয়েছে। এ ধান হিট শকে আক্রান্ত হয়নি। এ জাতের ধান হিট ও লবণ সহিষ্ণু। বোরো মৌসুমে বিআর ২৮ ধানের মতোই এ ধানের চাষাবাদ করা যায়। এ ধান চাষাবাদে সেচ, সার ও কীটনাশক কম লাগে।

প্রতি হেক্টরে এ জাতের ধান প্রচলিত ধানের তুলনায় অন্তত ২ টন বেশি ফলন দেয়। স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন এ ধানের চাষাবাদ করে কৃষক একই জমিতে বছরে আরও ২ থেকে ৩টি ফসল করে লাভবান হতে পারেন। তাই সারাদেশে এ জাতের ধানের চাষাবাদ ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশে ধানের পাশাপাশি বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, লবণাক্ততা নেই, এমন জমিতে এ জাতের ধান আরও বেশি ফলন দিতে সক্ষম।

কাশিয়ানী উপজেলার রামদিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের কৃষাণী শিপ্রা রানী ভৌমিক বলেন, টানা ১ মাসের হিট শকে আমাদের মাঠের অন্যান্য জাতের ধান একটু কম ফলন দিয়েছে। কিন্তু আমার ক্ষেতের লবণ সহিষ্ণু বিনাধান ১০ হিট শকে আক্রান্ত হয়নি। ধানে চিটা নেই। বিনার পরামর্শে চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়ে আমার লাভ হয়েছে। এই ধান কাটার পর আমি এ জমিতে আরও ২টি ফসল করবো। এতে আমার ধান ও অন্যান্য ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক ও বিনা ১০ ধানের উদ্ভাবক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমাদের চাষাবাদে প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। পরিবর্তিত জলবায়ুর সবধরনের প্রতিকূলতা অতিক্রম করে বিনাধান ১০ বাম্পার ফলন দিতে সক্ষম। তাই ভবিষ্যতে ধান ও বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন এ জাতের ধান চাষ করার জন্য কৃষক ভাইদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর